ফিতরা আদায় যে কারণে আবশ্যক

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:২৭ পিএম, ০২ জুন ২০১৮

রমজানের মাসব্যাপী সিয়াম-সাধনার পর আসে মুসলমানদের খুশির ঈদ। এ ঈদে গরিবকে আনন্দে শামিল করতে এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ফিতরার বিধান। যাতে ধনীর ফিতরায় গরীবও ঈদের দিনের আনন্দে মেতে ওঠতে পারে।

অন্য কথায়, ফিতরা হলো রমজানের রোজা পালনের সময় সংঘঠিত ভুলত্রুটির ক্ষতিপূরণ স্বরূপ। যেরূপ নামাজের ভুলের জন্য আদায় করতে সাহু সিজদা। এ কারণে ফিতরাকে কল্যাণের আরেক মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়।

২য় হিজরির শাবান মাস থেকে রমজানে গরিব অসহায় মুসলিমদের মাঝে ফিতরা আদায়কে বিধিবদ্ধ করা হয়।

যারা আদায় করবে সাদকাতুল ফিতর
মানুষের মৌলিক প্রয়োজন পূরণ ও ঋণ আদায়ের পর জাকাতের নিসাব পরিমাণ সম্পদ অথবা ওই পরিমাণ সোনা ও রূপার মালিক হয়; এমন প্রত্যেক মুসলিম নারী ও পুরুষের ওপর সাদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব বা আবশ্যক।

এ ফিতরা আদায়ে আনন্দ-অনুভূতি লাভ করে সেই ব্যক্তি, যে বা যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের মহব্বত অন্তরে পোষণ করে ফিতরা আদায় করে। সামর্থ্যবান রোজাদারের জন্য ফিতরা আদায়ে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হিকমত ও উপকারিতা।

ফিতরা আদায়ের উপকারিতা
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রোজাকে অনর্থক কথা ও অশালীন কথা হতে পবিত্র করার জন্য এবং নিঃস্বদের মুখে খাদ্য দেয়ার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদকায়ে ফিতর নির্ধারণ করেছেন। (আবু দাউদ, মিশকাত)

‘ফিতরা’ হলো রোজাদারের দ্বারা ঘটে যাওয়া সব অবাঞ্ছনীয় কাজ, যৌনাচার তথা ফাহেশা কাজ থেকে পবিত্র করার অন্যতম মাধ্যম। রোজা পালনরত অবস্থায় রোজাদার অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুল করে থাকে, তার ক্ষতিপূরণ স্বরূপ। কেননা আল্লাহ নিজেই বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই ভালো কাজ পাপকে ধ্বংস করে দেয়।’ (সুরা হুদ : আয়াত ১১৪)

ঈদের দিন গরিব ও মিসকিনদের আনন্দ-বিনোদন, উত্তম খাবারের আয়োজনের সহজ ব্যবস্থাপনায় ফিতরা সহায়ক হয়ে থাকে। ফিতরা থেকে প্রাপ্ত অর্থে তারাও ধনীদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে।

আল্লাহ তাআলার নিকট অনুতপ্ত হৃদয়ে গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের বহিঃপ্রকাশ হলো এই ফিতরা আদায়। কেননা আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার তাওফিক দান করেছেন। রোজা পালন কালে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় ছোট ছোট ত্রুটি হয়ে গেছে। যা থেকে ক্ষমা লাভ করে রোজার পরিপূর্ণ ফায়েদা ফিতরার মাধ্যমে অর্জিত হয়।

এ ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে রহমত, বরকত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাসে রোজা পালন শেষে যাতে আত্মশুদ্ধির প্রক্রিয়া পরিপূর্ণ হয়। সে লক্ষ্যে আল্লাহর পথে মাল (অর্থ) খরচের মাধ্যমে নিজেদেরকে পবিত্র করার জন্যই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গরিব দুঃখীর জন্য ফিতরার ব্যবস্থা করেছেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ফিতরা আদায় করার তাওফিক দান করুন। ফিতরা উপকারিত ও কল্যাণ লাভ করার সৌভাগ্য নসিব করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।