রমজানে যে কাজগুলো বেশি বেশি করা প্রিয়নবির সুন্নাত
তাওকয়া অর্জনের মাস রমজান। রমজান মাসে এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে যেগুলো প্রিয়নবির সুন্নাত। প্রিয়নবির এ সুন্নাত পালনে রোজাদার হয়ে ওঠে মহান আল্লাহর একান্ত প্রিয়ভাজন।
রমজান মাসে ইফতারের সময় রোজাদারকে ইফতারের দাওয়াত দেয়া এবং ইফতার বিতরণ করা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্যতম সুন্নাত। যে অন্য রোজাদারকে ইফতার করাবে, বা ইফতারি বিতরণ করবে সেও তার সমান সওয়াব পাবে এবং এতে করে ইফতারকারীর সাওয়াব থেকে কিছুমাত্র কমানো হবে না’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
রমজান মাসে রোজা পালনের পাশাপাশি ইবাদতযোগ্য কিছু সুন্নাত আমল রয়েছে। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা নিজে করেছেন এবং অন্যকেও করতে বলেছেন। এ কাজগুলো যথাযথ পালনে রোজাদার হয়ে হয়ে ওঠবে মহান আল্লাহর একান্ত আপন। আর তাহলো-
আরও পড়ুন > রোজার নিয়ত ও সাহরি-ইফতারের দোয়া
>> রমজানের দিনে ও রাতে অধিক পরিমাণে আল্লাহ তাআলার জিকির করা।
>> দিনে ও রাতে পবিত্র কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত করা; সম্ভব হলে কুরআনের ভাব ও মর্মার্থ অনুধাবন করা।
>> গরীব, দুঃখী ও অসহায়দের মাঝে ইফতার, সাহরি ও বেশি বেশি দান-সাদকা করা।
>> বিগত জীবনের গোনাহের কথা স্মরণ করে বেশি বেশি তাওবা ও ইসতেগফার করা।
>> আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীসহ সাহায্য প্রার্থণাকারী ও অসুস্থ মানুষের সেবা ও সহযোগিতা করা।
>> পারিবারিক, সামাজিক বন্ধন ও সুসম্পর্ক বজায় রাখা। বিশেষ করে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন না করা।
>> নিজের গোনাহ মাফের আবেদনের সঙ্গে সঙ্গে মুসলিম উম্মাহর মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা।
>> সাহরি ও ইফতারে খেজুর খাওয়া। খেজুর পাওয়া না গেলে সাদা পানি দ্বারা ইফতার করা।
আরও পড়ুন > সারারাত নামাজের সাওয়াব লাভের সহজ উপায়
>> সাহরি ও ইফতারের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা এবং শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলা।
>> সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা এবং ভোর হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে শেষ সময়ে সাহরি খাওয়া।
>> রোজায় মেসওয়াক করা। তা দিনের যে কোনো সময়ে হোক তাতে কোনো অসুবিধা নেই।
>> রমজান মাসে শান্তি ও নিরবতা অবলম্বন করা, ঝগড়া-বিবাদ থেকে বিরত থাকা। কেউ কেউ ঝগড়া করলে এ কথা বলা- ‘আমি রোজাদার, আমি রোজাদার’।
>> অনেকেই রাতে ইশার নামাজের পর তারাবিহ আদায়কে সুন্নাত বলেছেন। আবার অনেকে এ নামাজকে মোস্তাহাবও বলেছেন। আর যে রোজাদার ইমামের সাথে তারাবিহ নামাজ আদায় করে বের হবে; তার জন্য সারা রাত জেগে নামাজ পড়ার সমান সাওয়াব দান করা হবে।
>> রমজান মাসে ওমরা পালন করা সুন্নাত। কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানের একটি ওমরা আদায়ে হজের সমান সাওয়াব রয়েছে।’
>> রমজান মাসের শেষ দশকে ইবাদতের উদ্দেশ্যে লাইলাতুল কদর তালাশের মাধ্যমে জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত পাওয়ার লক্ষ্যে মসজিদে ইতিকাফে অংশগ্রহণ করা। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আমৃত্যু শেষ দশকে ইতিকাফ করে গেছেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ফরজ বিধান রোজা পালনের পাশাপাশি প্রিয়নবির সুন্নাত কাজগুলো আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের তাওফিক দান করুন। রমজানের রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার সেরা রাত ‘লাইলাতুল কদর’ লাভের সৌভাগ্য দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস