যে কাজে আল্লাহ লজ্জাবোধ করেন
আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রভু। তিনি সমগ্র জগৎ সৃষ্টি করেছেন। আর মানুষকে করেছেন আশরাফুল মাখলাকত তথা সৃষ্টির সেরা জীব। আল্লাহ তাআলার রহমত ও অপার হেকমত হলো তিনি মানুষকে সফল হিসেবে দেখতে চান। কুরআনুল কারিমের অসংখ্য আয়াতে তিনি তা বর্ণনা করেছেন।
মানুষের সফলতায় তিনি অসংখ্য আয়াত নাজিল করেছেন। অন্যায় কাজের জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি তা বর্ণনা করে সঠিক ও ভালো কাজে পরিচালিত হওয়ার দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন। আর এ ভালো কাজের ফলেই মানুষ পাবে দুনিয়া ও পরকালের মুক্তি ও সফলতা।
আল্লাহ তাআলা বান্দাকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো; আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করবো।’
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর (হে রাসুল!) যখন আমার বান্দা আপনাকে (রাসুলকে) আমার সম্পর্কে প্রশ্ন করে তখন (হে রাসুল!) আপনি তাদের বলুন, আমি তার নিকটবর্তী, যখন কোনো দোয়া প্রার্থী আমাকে ডাকে, আমি তার ডাকে সাড়া দেই; অতএব আমার কাছে প্রার্থনা করা ও আমার প্রতি ঈমান আনাই তাদের কর্তব্য; হয়তো তারা হেদায়েত লাভ করবে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৬)
বান্দা যখন আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করে তখন আল্লাহ তাআলা বান্দাকে খালি হাতে ফেরত দিতে লজ্জাবোধ করেন। হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনটিই ঘোষণা দিয়েছেন।
হজরত সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, হে লোক সকল! তোমাদের প্রতিপালক অত্যন্ত লজ্জাশীল এবং অতিব দয়াবান। যখন কোনো বান্দা তাঁর কাছে হাত ওঠায় তখন ওই বান্দার হাতকে (খালি) ফিরিয়ে দিতে তিনি লজ্জাবোধ করেন।’ (তিরমিজি ও আবু দাউদ)
আরও পড়ুন > তারাবিহ নামাজের নিয়ত ও দোয়া
এখন প্রশ্ন হলো-
তাহলে অনেক সময় মানুষের দোয়া কবুল না হওয়ার কারণ কি? কিংবা মানুষের দোয়া বিলম্বেই বা কেন কবুল হয়? এর কারণ হলো-
>> দোয়া কবুলে বিলম্ব হওয়ার ব্যাপারে কোনো হেকমত থাকে।
>> দোয়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে কোনো বাধা থাকতে পারে। যেমন- আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা বা কোনো অন্যায় কাজের জন্য দোয়া করা।
>> কখনো কখনো দোয়া কবুল হওয়ার শর্ত অনুপস্থিত থাকে। যেমন- কোনো ব্যক্তি দোয়া করল অথচ তার পরিধেয় পোশাক হারাম টাকায় কেন বা যে খাবার সে খেয়েছে তা হারাম উপায়ে অর্জিত।
আরও পড়ুন > তারাবিহ নামাজ পড়ার নিয়ম
মনে রাখতে হবে
দোয়া কবুলের শর্ত পরিপূর্ণ করে সঠিক নির্দেশনায় দোয়া করলে সে দোয়া আল্লাহ তাআলার দরবারে কবুল হয়ে যায়। আর ওই বান্দাকে খালি হাতে ফেরত দিতে মহান আল্লাহ তাআলা লজ্জাবোধ করেন।
সুতরাং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন না করে, হালাল রুটি-রুজি উপার্জনসহ অন্যায় বা পাপ কাজের জন্য দোয়া না করে সঠিক উপায়ে দোয়া কবুলের শর্ত মেনে আল্লাহর কাছে একাগ্রতার সঙ্গে আবেদন করা। তবেই আল্লাহ তাআলা বান্দাকে খালি হাতে ফেরত দেবেন না।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সঠিক ভাবে দোয়ার শর্ত আদায় সাপেক্ষে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর