বিয়ে করেও ব্যভিচারী সাব্যস্ত হবে যারা

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৫৭ পিএম, ০৯ এপ্রিল ২০১৮

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের বর্ণনা মতে এ কথা সুস্পষ্ট যে, বিয়ে করা সত্ত্বেও মানুষ নিজ স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস ব্যভিচার হিসেবে সাব্যস্ত হবে। বিয়ের জন্য প্রধান শর্ত হলো মোহর প্রদান এবং স্ত্রীর খরচ বহন করা।

যারা বিয়ে করার পর নারীদেরকে মোহর প্রদান এবং খরচ প্রদানে কোনো ধরণের প্রতারণা বা চালাকির আশ্রয় নেবে; তাদের জন্য স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস ব্যভিচার হিসেবে সাব্যস্ত হবে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আমর ইবনে দিনার আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সুহাইবের কোনো এক সন্তান আমার কাছে বর্ণনা করেন, তারা একদিন তাদের বাবাকে বলল, তুমি আমাদের কাছে হাদিস বর্ণনা কর না কেন? যেমনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্য সাহাবাগণ বর্ণনা করতেন।

তিনি বললেন, তারা (সাহাবাগণ) যেমন শুনেছে আমিও শুনেছি। কিন্তু হাদিস বর্ণনায় আমাকে প্রিয়নবির ওই কথাটি বাধা দেয়, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার ওপর মিথ্যা বলে, সে জাহান্নামকে তার বাসস্থান বানিয়ে নেয়।’ (অতঃপর তিনি বলেন-)

কিন্তু এখন আমি তোমাদের কাছে এমন একটি হাদিস বর্ণনা করবো, যা আমার হৃদয় (ভালভাবে) মুখস্থ করেছে এবং ধারণ করেছে। (আর তাহলো) আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি-

‘যে পুরুষ কোনো নারীকে বিয়ে করে আর তার (বিয়ের) নিয়ত হলো (স্ত্রীর) মোহর আত্মসাৎ করা; তাহলে সে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ব্যভিচারী হিসেবে গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি কোনো ব্যক্তির সাথে চুক্তি করেছে আর তার নিয়ত হলো তার হক আত্মসাৎ করা; সে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত খিয়ানতকারী হিসেবে গণ্য হবে।’

অন্য হাদিসে এসেছে, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো নারীর জন্য মোহর নির্ধারণ করে আর আল্লাহ জানেন ওই মোহর আদায় করার ইচ্ছা তার নেই। তাহলে সে তাকে আল্লাহর নামে ধোঁকা দিলো এবং অন্যায়ভাবে তার লজ্জাস্থানকে হালাল করলো।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বর্ণনা করেন, ‘আনসারি সাহাবিদের ভালোবাসা ঈমান আর তাদের প্রতি বিদ্বেষ রাখা কুফরি এবং যে ব্যক্তি কোনো নারীকে বিয়ে করেছে কোনো মোহরের ওপর এবং তা দেয়ার ইচ্ছা তার নেই, তাহলে সে ব্যভিচারী।’

শুধু তা-ই নয়, (এ সব লোকেরা পরকালে) আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের দিনও ব্যভিচারী হিসেবেই সাক্ষাত করবে। আর যে ব্যক্তি কারো কাছ থেকে ঋণ নিয়ে (পরিশোধ করেনি), সে-ও আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের দিন চোর হিসেবে সাক্ষাত করবে।’

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ সব হাদিস বিয়ের উপযুক্ত যুবকদের জন্য সতর্কবাণী। আর সব যুবকদের উচিত, হাদিসের সতর্কবাণী অনুযায়ী উত্তম ও আদর্শ বিয়ে সম্পাদনে বিয়ের সঙ্গে শর্তযুক্ত মোহর ও নাফাকা যথাযথভাবে প্রদান করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব বিবাহিতদের স্ত্রীর মোহর ও অন্যান্য ফরজ শর্তাাদি যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। সুন্দর ও হালাল জীবন যাপনের মাধ্যমে পরকালের সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। যারা স্ত্রীদের মোহর আদায় করেননি, তাদের নিজেদেরকে ব্যভিচারী হওয়া থেকে মুক্ত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।