মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠ দোয়া `নামাজ’
নামাজ শুধু আল্লাহ বিধান পালনই নয়; এটা আল্লাহর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়াও বটে। আর এ কারণেই দোয়াকে ইবাদতের মূল বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা নামাজ আদায়ের নির্দেশ প্রদান করে বলেন-
‘তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা কর; জাকাত আদায় কর এবং রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করা।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৪৩)
মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা আল্লাহ তাআলা কর্তৃক আবশ্যক কাজ। ৫ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও বান্দা অনেক নফল নামাজ পড়ে থাকে।
নামাজ এমনই এক ইবাদত যা শুধু আল্লাহ তাআলার জন্য নির্ধারিত। আর এ নামাজ মূলত দোয়া। নামাজের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। যা আল্লাহ তাআলা নিজেই ঘোষণা করেছেন, ‘তোমরা নামাজ এবং ধৈর্য ধারণের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করা।’
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তুমি তাদের জন্য দোয়া কর; নিশ্চয় তোমার দোয়া তাদের জন্য শান্তি স্বরূপ।’ (সুরা তাওবা : আয়াত ১০৩) এ আয়াতে সালাত দ্বারা দোয়া করা বুঝানো হয়েছে।
হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেন, তোমাদের কাউকে খাবারের দাওয়াত দেয়া হলে সে যেন উক্ত দাওয়াতে উপস্থিত হয়। অতঃপর সে যদি রোজাদার হয় তবে সে মেজবানের জন্য বরকত, কল্যাণ ও মাগফিরাতের দোয়া করবে। আর যদি সে রোজাদার না হয় তবে সে যেন খাবার গ্রহণ করে।’ (মুসলিম)
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ হাদিসে বরকত, কল্যাণ ও মাগফেরাত বুঝাতেও সালাত শব্দ ব্যবহার করেছেন।
সুতরাং কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে বুঝা যায় যে, নামাজ হচ্ছে বান্দার সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া এবং আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম।
আল্লাহ তাআলা প্রিয়নবির প্রতি অনুগ্রহ নাজিলের ক্ষেত্রেও বলেছেন ‘সাল্লু’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। এ সালাতকেই আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য দৈনিক ৫ সময় ফরক করে দিয়েছেন।
মনে রাখতে হবে
কারো ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার সালাত মানে হলো ফেরেশতাদের কাছে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করা; আবার ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে কারো প্রতি সালাতের মানে হলো মহান আল্লাহর কাছে তাঁর জন্য দোয়া করা। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা সুরা আহজাবের ৫৬নং আয়াতে বলেছেন-
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের কাছে নবির প্রশংসা করেন; এবং ফেরেশতারাও নবির জন্য দোয়া করেন। অতএব হে ঈমানদারগণ! তোমরা তাঁর প্রতি দোয়া এবং সালাম পেশ কর।’
সর্বোপরি ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় নামাজ হলো এমন এক ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও তাঁর সাওয়াবের আশায় আদায় করা হয়। এ নামাজে রয়েছে এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ যার শুরু ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবির দিয়ে আর শেষ হয় সালাম ফিরানোর মাধ্যমে।
পরিশেষে…
বান্দার জন্য নাজাত লাভের একমাত্র মাধ্যম ঈমান গ্রহণের পর যথা সময়ে নামাজ আদায় করা। নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার কাছে নাজাত লাভে সব ধরনের দোয়া চাওয়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর বিধান পালনে নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়ার তাওফিক দান করুন। যথা সময়ে জামাআতের সঙ্গে ফরজ নামাজগুলো আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর