পয়গাম্বর দাউদের আত্ম-জিজ্ঞাসা ও ফেরেশতার নসিহত

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:১২ এএম, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮

নবি-রাসুলদের জীবনি ও জীবনে ঘটে যাওয়া সব বিষয়ই মানুষের জন্য অনন্য শিক্ষা। আল্লাহ তাআলা মানুষকে দুনিয়ার সুন্দর জীবনাচার শিক্ষা দিয়ে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরকালের সফলতার জন্য তাদেরকে মানুষের শিক্ষক হিসেবে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন, ‘আমি তোমাদের জন্য শিক্ষকরূপে প্রেরিত হয়েছি।’ এভাবে আল্লাহ তাআলা আগের অধিকাংশ নবি-রাসুলদের জীবনী উল্লেখ করেছেন মানুষের শিক্ষা লাভের জন্য।

হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের আত্ম-জিজ্ঞাসা এবং ফেরেশতার জবাব আর হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের কর্মস্পৃহা মানুষের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ শিক্ষা হতে পারে। মানুষ নিজেকে কর্মমুখী করতে অনুপ্রেরণা লাভে তাঁর এ ঘটনা অনুকরণীয়। আর তা হলো-

হজরত দাউদ আলাইহিস সালাম ছিলেন মহিমান্বিত ও সম্মানিত নবি। নবুয়তের পাশাপাশি আল্লাহ তাআলা তাঁকে রাজত্ব ও বাদশাহি দান করেছিলেন। বর্ণনায় এসেছে, হজরত দাউদ আলাইহি সালাম তাঁর রাজত্বে প্রজা সাধারণের কাছ থেকে নিজের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতেন।

কোনো অচেনা লোক দেখলে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করতেন- বলতো দাউদ কেমন লোক? তাঁর স্বভাব-চরিত্র কেমন? তাঁর সম্পর্কে তোমার মতামত কি?

এ রকম একদিন আল্লাহ তাআলা তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য মানুষের রুপে একজন ফেরেশতা পাঠালেন। পথিমধ্যে তাঁকে পেয়ে হজরত দাউদ আলাইহিস সালাম অভ্যাসগতভাবে তাঁর জানতে চাওয়ার বিষয়গুলো জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন। ফেরেশতা বললেন-

‘তিনি তো লোক হিসেবে মন্দ নয়; তবে তিনি বাইতুল মাল তথা রাজস্ব ভান্ডার থেকে তিনি বাইতুল মাল গ্রহণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।’

এ কথা শুনা মাত্র হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে লাগল। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন-

‘হে পরওয়ারদেগার! আমাকে জাতীয় কোষাঘার থেকে জীবিকা নির্বাহ থেকে মুক্তি দান করুন। আমাকে এমন একটি কর্ম শিখিয়ে দিন; যা দ্বারা আমি জীবিক নির্বাহ করতে পারি।’

আল্লাহ তাআলা তাঁর দোয়া কবুল করলেন এবং তাঁকে এমন একটি কাজের জ্ঞান এবং বিশেষ গুণ দান করলেন যে, তাঁর হাতের স্পর্শে লোহা গলে যেত। আর তা দিয়ে তিনি লৌহ বর্ম তৈরি করতেন।

বর্ণনায় এসেছে হজরত দাউদ আলাইহিস সালাম দৈনিক একটি লৌহ বর্ম তৈরি করতেন। যা ৬ হাজার দিরহামের বিক্রি হতো।

তিনি নিজের এবং পরিবারের ব্যয় বহনে ২০০০ দিরহাম খরচ করতেন। বাকি ৪০০০ দিরহাম বনি ইসরাইলের অনাথ, ইয়াতিম ও দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করে দিতেন।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কারণেই হাদিসে পাকে ঘোষণা দিয়েছিলেন আল্লাহর নবি দাউদ নিজ হাতের কামাই খেতেন। হাদিসের আলোকে বুঝা যায় যে, উপার্জন করা নবি গণের পেশা ও সন্নাত।

আল্লাহ তাআলা হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের এ আত্ম-জিজ্ঞাসা; নিজ কর্মে জীবিক নির্বাহের তাগিদ লাভ; কর্ম করে তা দিয়ে পরিবারের ব্যয় বহন এবং গরিব-দুঃখীর মাঝে সদকার শিক্ষা মুসলিম উম্মাহকে গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন।

হালাল জীবিক নির্বাহে এবং কাজ করার যোগ্যতা অর্জনের জন্য আল্লাহর দরবারে সাহায্য চাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।