বিশ্ব-ইজতেমায় মাওলানা সাদ-এর অংশগ্রহণে ওলামাদের সিদ্ধান্ত
আগামী ১২ জানুয়ারি টঙ্গীর তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিত হবে তাবলিগ জামাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন বিশ্ব ইজতেমা। দীর্ঘ দিন ধরে দেওবন্দের আলেমদের সঙ্গে দিল্লির নিজামুদ্দিনের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর মতপার্থক্য চলছে।
এবারের ইজতেমায় মাওলানা সাদ-এর উপস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের দেওবন্দ, নিজামুদ্দিনসহ অন্যান্য মারকাজের সঙ্গে বাংলাদেশী প্রতিনিধি দলের দফায় দফায় বৈঠক হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল উত্তরায় আয়েশা মসজিদে ওলামায়ে কেরামের এক পরামর্শ সভায় অনুষ্ঠিত হয়। এ পরামর্শ সভায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। লিখিত আকারে প্রকাশ করা সিদ্ধান্তসমূহ হুবহু তুলে ধরা হলো-
আজ ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ইং রোজ শনিবার ১৪ নম্বর সেক্টরস্থ হযরত আয়েশা রা. জামে মসজিদ চত্বরে উম্মুল মাদারিস হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়াহ এর চেয়ারম্যান শাইখুল হাদিস আল্লামা শাহ আহমদ শফী দা.বা. এর নির্দেশে বাংলাদেশের শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখ পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এই শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখ পরামর্শ সভায় নিম্মোক্ত সিদ্ধান্তগুলো গৃহিত হয়-
>>সিদ্ধান্ত ১
দাওয়াত ও তাবলিগ একটি দ্বীনি কাজ। দ্বীনের একটি আহাম কাজ। সুতরাং দ্বীনের এই আহাম কাজের কোন বিশেষ মুরব্বি, দারুল উলুম দেওবন্দ এর অনাস্থা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে এই আমলী কাজের বিশেষ ভূমিকায় থাকতে পারে না।
অতএব ২৪-১২-২০১৭ইং তারিখে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রেরিত প্রতিনিধি দলের কাছে দারুল উলুম দেওবন্দ আনুষ্ঠানিকভাবে মাওলানা সাদ সাহেবের ব্যাপারে লিখিতভাবে অনাস্থাপত্র হস্তান্তর করায় আজকের এই সভা থেকে শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাওলানা সাদ সাহেবের ব্যাপারে অনাস্থা প্রকাশ করেছে।
>> সিদ্ধান্ত ২
গত ২৯-১০-২০১৭ ইং তারিখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে যে সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হয়েছিল আজকের এ শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখ পরামর্শসভা তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানায়।
বিশেষত আসন্ন বিশ্ব-ইজতেমায় বিদেশি মেহমান হিসেবে ভারতের মাওলানা সাদ সাহেব ও মাওলানা ইবরাহিম দেওলা সাহেবের উভয় গ্রুপ এক সঙ্গে আসতে হবে। ‘কোনো এক গ্রুপ একা আসতে পারবে না’ এ মর্মে সরকারি যে সিদ্ধান্ত ছিল তা দ্রুত কার্যকর করার জন্য আজকের এ ওলামা-মাশায়েখ পরামর্শসভার শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখ সম্মিলিতভাবে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।
উল্লেখিত দুটি বিষয়ের সমাধান না হওয়ায় সরকারের পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাওলানা সাদ সাহেব বাংলাদেশে আসতে পারবে না।’
পরামর্শ সভায় উপস্থিত ছিলেন, বেফাকের সহ-সভাপতি আল্লামা আশরাফ আলী, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারীসহ শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম।
এমএমএস/পিআর