মানুষের ভালোবাসা, বিশ্বস্ততা ও গ্রহণযোগ্যতা লাভের উপায়
মানুষের প্রিয়জন হওয়া, ভালোবাসা পাওয়া বা গ্রহণযোগ্যতা অর্জন সবই আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ। আল্লাহর এ অনুগ্রহ লাভে ইখলাসের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। তিনি ইখলাস অবলম্বনকারী বান্দাদের জন্য মানুষের ভালোবাসা লাভ, বিশ্বস্ততা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের ফয়সালা করে থাকেন।
পক্ষান্তরে যে বা যারা শুধু মানুষের কাছে ভালবাসা পেতে বা বিশ্বস্ততা অর্জনের নিয়তে কাজ করে। ওই ব্যক্তি মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা বা বিশ্বস্ততা লাভ করতে পারে না। বরং সে যা কামনা করবে; বিনিময়ে উল্টোটা পাবে। অর্থাৎ মানুষ তাকে ভালোবাসবে না, বিশ্বাস করবে না এমনকি সমাজে তার কোনো গ্রহণযোগ্যতাও থাকবে না।
এ ব্যাপারে হাদিসে এসেছে, হজরত জুনদুব ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে মানুষকে শুনাতে চায় আল্লাহ তাআলা তা মানুষকে শুনিয়ে দেন। আর যে মানুষকে দেখাতে চায় আল্লাহ তাআলা তা মানুষকে দেখিয়ে দেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
এ কারণেই মানুষকে দেখানোর জন্য কোনো কাজ করা উচিত নয়। আবার মানুষের প্রতিটি কাজই হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। তা হোক দুনিয়ার কাজ বা পরকালের কাজ।
অন্য হাদিসে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির উদ্দেশ্য হবে পার্থিব স্বার্থ; আল্লাহ তাআলা তার কাজগুলোকে এলোমেলো করে দেবেন। তার দু’চোখে দারিদ্রতা দিয়ে দেবেন। তার জন্য যা কিছু নির্ধারিত আছে এর বাইরে দুনিয়ার কিছুই সে লাভ করতে পারবে না।
আর যার উদ্দেশ্য হবে আখেরাত, আল্লাহ তাআলা তাঁর কাজ-কর্ম গুছিয়ে দেবেন। তাঁর অন্তরে স্বচ্ছলতা দান করবেন। দুনিয়ার সম্পদ অপমানিত হয়ে তাঁর কাছে ফিরে আসবে।’ (ইবনে মাজাহ)
হাদিসের আলোকে বুঝা যায় যে, মানুষের ভালাবাসা লাভ, বিশ্বস্ততা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জনে ইখলাসের বিকল্প নেই। যা মানুষকে দুনিয়া ও পরকালের অন্যান্য সব নেয়ামতের অধিকারী করবে।
মনে রাখতে হবে-
যে কামনা করে আলোচিত হওয়ার জন্য; যার একান্ত আকাঙ্খা থাকে মানুষ তাকে স্মরণ করবে; বাস্তবে মানুষ কিন্তু তাঁকে স্মরণ করে না। পক্ষান্তরে-
‘বান্দা যখন একান্ত অন্তরিকতার সঙ্গে আল্লাহর দিকে অগ্রসর হয়; আল্লাহ তাআলা তখন দুনিয়া সব সৃষ্টির অন্তরকে ওই ব্যক্তির দিকে ঝুঁকিয়ে দেন।’
পরিশেষে...
মানুষের দুনিয়ার প্রতিটি কাজ হোক আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। আল্লাহকে দেখানো জন্য। তবে মানুষের দুনিয়া ও পরকালীন জীবন সফল ও স্বার্থক। ওই ব্যক্তির আল্লাহর স্মরণ করা মানুষ পছন্দ করুক আর না-ই করুক; মানুষ একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য কাজ করে যাবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার যশ-খ্যাতি, ভালোবাসা, গ্রহণযোগ্যতা ও আন্তরিকতা লাভে সব কাজ, ইবাদত-বন্দেগি ও আমল শুধুমাত্র আল্লাহকে দেখানোর জন্যই আদায় করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর জন্য সব কাজগুলো কবুল করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর