হজরত আদম যে ৫টি কারণে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছেন
মানুষের মধ্যে প্রথম সৃষ্টি হলো হজরত আদম আলাইহিস সালাম। আল্লাহ তাআলা তাকে প্রথম নবি হিসেবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। দুনিয়াকে আবাদ এবং দুনিয়াতে মানুষের বংশও বিস্তার হয়েছে হজরত আদম আলাইহিস সালামের মাধ্যমে। হজরত আদম আলাইহিস সালাম আল্লাহর কাছ থেকে পাঁচটি শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছিলেন। যা অন্য কাউকে পায়নি।
হজরত আদম আলাইহি সালাম যে ৫টি শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছেন, আল্লাহ তাআলা তা কুরআনুল কারিমে তুলে ধরেছেন-
>> আল্লাহ নিজ হাতে হজরত আদমকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমার প্রতিপালক বললেন, ‘হে ইবলিস! আমি যাকে নিজ দুই হাতে সৃষ্টি করেছি; তাকে সিজদা করতে কে তোমাকে বাধা দিল? (সুরা স্বাদ : আয়াত ৭৫)
>> আল্লাহ তাআলা তাকে নিজে ফুৎকারের মাধ্যমে রূহ দান করেছেন। আল্লাহ ফেরেশতাদের নির্দেশ দেয়ার সময় বলেছেন, ‘সুতরাং যখন আমি ওকে সুঠাম করব এবং ওতে আমার রূহ (জীবন) সঞ্চার করবো তখন তোমরা ওর প্রতি সিজদার জন্য লুটিয়ে পড়ো।’ (সুরা স্বাদ : আয়াত ৭২)
>> তাঁকে সিজদা করার জন্য আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের নির্দেশ প্রদান করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘যখন ফেরেশতাদেরকে বললাম আদমকে সিজদা কর। তখন সকলেই সিজদা করল।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৩৪)
>> আল্লাহ আদমকে দুনিয়ার যাবতীয় বস্তুর নাম শিক্ষা দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘এবং তিনি আদমকে যাবতীয় নাম শিক্ষা দিলেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৩১)
>> আল্লাহ শুধুমাত্র আদম আলাইহিস সালামকেই মাটি থেকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘যিনি তার প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে উত্তমরূপে সৃষ্টি করেছেন এবং মাটি হতে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন। অতঃপর তুচ্ছ তরল পদার্থের নির্যাস থেকে তার বংশ উৎপন্ন করেছেন। পরে তিনি ওকে সুঠাম করেছেন এবং তার নিকট হতে জীবন সঞ্চার করেছেন এবং তোমাদেরকে দিয়েছেন চোখ, কান ও অন্তর। তোমরা অতি সামান্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।’ (সুরা সাজদা : আয়াত ৭-৯)
আল্লাহ তাআলা মানুষকে অতি দয়া করে সৃষ্টি করেছেন। সব সৃষ্টির মধ্যে দান করেছেন শ্রেষ্ঠত্ব। উদ্দেশ্য একটাই- শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার ইবাদত-বন্দেগি করা। তার আনুগত্য ও বিধি-বিধান যথাযথ পালন করা।
অন্যদিকে শয়তান হলো অভিশপ্ত ও লাঞ্ছিত। কারণ হলো শয়তান আল্লাহর নির্দেশের আনুগত্য না করে নিজেই নিজের শ্রেষ্ঠত্বের ব্যাপারে খোঁড়া যুক্তি পেশ করেছিল। আল্লাহর আদেশ অমান্য করেছিল। অথচ এ ইবলিসই ছিল ‘মুয়াল্লিমুল মালাইকা’। অর্থাৎ ফেরেশতাদের শিক্ষক বা নেতা। শুধামাত্র আল্লাহর আদেশ অমান্য করার কারণে বেহেশত থেকে বিতাড়িত হয়ে চির লাঞ্ছিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
এ কারণেই আল্লাহ তাআলা মানুষকে শয়তানের ধোঁকা ও প্রতারণা থেকে বেঁচে থাকতে হুশিয়ারি ঘোষণা করেছেন। ঘোষণা করেছেন- ‘নিশ্চয়ই শয়তান হলো মুমিনের প্রকাশ্য দুশমন।’
আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাঁর আনুগত্য প্রদর্শনের মাধ্যমে নৈকট্য লাভের তাওফিক দান করুন। শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে হেফাজত করুন। কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম