অহেতুক খারাপ ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা
মানুষের প্রতি অহেতুক ধারণা করা গোনাহ। প্রমাণ ব্যতিত কারো প্রতি অহেতুক খারাপ ধারণা করা ইসলামে হারাম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা অধিকাংশ (অহেতুক) অনুমান হতে দূরে থাক। কারণ (অহেতুক) ধারণা কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাপ।’ (সুরা হুজরাত)
সৎ এবং আল্লাহভীরু লোকদের ব্যাপারে এমন ধারণা পোষণ করা, যা মন্দ অথচ ভিত্তিহীন এবং যা মিথ্যা অপবাদের আওতায় পড়ে। হাদিসে এ খারাপ ধারণাকে সবচেয়ে বড় মিথ্যা সব্যস্ত করে এর থেকে বিরত থাকার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘তোমরা খারাপ ধারণা থেকে বিরত থাক’।
আবার পাপাচারে লিপ্ত লোকদের পাপের কারণে তাদের পাপের ওপর খারাপ ধারণা পোষণ করা কুরআনে উল্লেখিত খারাপ ধারণা নয়; যে খারাপ ধারণা পোষণকে পাপ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে এবং যা থেকে বিরত থাকতে তাকিদ করা হয়েছে।
তাফসির বিশারদগণ বলেন, ‘মূলত ভালো লোকের প্রতি মন্দ ধারণা পোষণ করা বৈধ নয়। আবার মন্দ লোক পাপাচারীর প্রতি মন্দ ধারণা করা অবৈধ নয়। (কুরতুবি)
হাদিসে প্রিয়নবি বলেন, ‘সাবধান! খারাপ ধারণা পোষণ করা থেকে বিরত থাক। কেননা, খারাপ ধারণাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় মিথ্যা। আর কারো বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি কর না। একে অপরের পতন বা ধ্বংস সাধন করে নিজের কল্যাণ কামনা কর না। একে অপরের পশ্চাৎ অবলম্বন কর না। একে অপরের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ পোষণ কর না। তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই-ভাই হয়ে যাও।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কারো প্রতি অহেতুক খারাপ ধারণা সৃষ্টিতে শয়তান সব সময় মানুষের পেছনে কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে। প্রিয়নবির হাদিস দ্বারাই এর প্রমাণ পাওয়া যায়।
একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার এক স্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি তাদের কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওই ব্যক্তিকে ডেকে বললেন, ওহে! ইনি হচ্ছে আমার (ওমুক) স্ত্রী।
তখন ওই ব্যক্তি বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি অন্য কারো ব্যাপারে এরূপ মন্দধারণা পোষণ করতামও; আপনার ব্যাপারে তো আমি এরূপ মন্দধারণা পোষণ করতাম না।
(তখন) তিনি বললেন, ‘শয়তান আদম-সন্তানের রক্তপ্রবাহের শিরায় শিরায় বিচরণ করে। (আদাবুল মুফরাদি)
সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত কোনো ভালো লোকের ব্যাপারে যে কোনো ধরণের খারাপ ধারণা পোষণ করা থেকে বিরত থাকা। আল্লাহকে ভয় করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মানুষের প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম