প্রথম ওয়াক্তে নামাজ পড়ার ফজিলত

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৫ এএম, ১০ অক্টোবর ২০১৭

ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম হলো নামাজ। ঈমানের পরই মুসলিম উম্মাহর ইসলামের প্রকাশ্য ঘোষণা ও ইবাদত হলো ‘নামাজ’। নামাজের তাগিদ দিয়ে কুরআনে অনেক আয়াত নাজিল হয়েছে। আর পরকালে বান্দার হিসাব-নিকাশের সময় সর্ব প্রথম নামাজের হিসাবই গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

অনেক সময় মানুষ ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় ওয়াক্ত হওয়ার পরও নামাজ আদায়ে দেরি করে থাকে। এ কারণে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যথা সময়ে নামাজ আদায়ের ফজিলত ঘোষণা করেছেন। যাতে হাজারো কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও যেন মানুষ নামাজের প্রতি যত্নবান হয়।

প্রথম ওয়াক্তে নামাজ আদায়ে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে ফজিলত বর্ণনা করেছেন। যার ২টি উল্লেখযোগ্য হাদিস তুলে ধরা হলো-

>> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন আমল আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়?

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘যথা সময়ে (প্রথম ওয়াক্তে) নামাজ আদায় করা।’

আমি বললাম, তারপর কি?
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘পিতা-মাতার সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করা।’

আমি বললাম, তারপর কি?
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহর পথ জেহাদ করা।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি)

>> হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে আরো বর্ণিত যে, একদিন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়েকেরামের কাছে এসে বললেন, ‘তোমরা কি জান তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলা কি বলেন?

(উপস্থিত)সবাই বললেন, ‘আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলই সবচেয়ে অধিক জানেন।’ প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে তিনবার প্রশ্ন করেন আর সাহাবায়েকেরামও এভাবে তিনবার উত্তর দেন। অতঃপর

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘(আল্লাহ বলেন) আমার ইজ্জত ও মহিমার কসম! যে ব্যক্তি যথা সময়ে (প্রথম ওয়াক্তে) নামাজ আদায় করবে, তাকে আমি জান্নাতে প্রবেশ করাব।

আর যে ব্যক্তি অসময়ে নামাজ আদায় করবে তাকে আমি ইচ্ছা হলে দয়া করব নতুবা ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দেব।’ (তাবারানি, কাবির, সহিহ তারগিব)

প্রথম ওয়াক্তে নামাজ আদায়ের ফজিলত সম্পর্কে উল্লেখিত হাদিস দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যথা সময়ে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকেও সুস্পষ্ট বিধান নাজিল করেছেন। তথাপিও নামাজের ব্যাপারে যেন কোনো গাফলতি না হয়, সে কারণে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও প্রথম ওয়াক্তে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে ফজিলত ঘোষণা করেছেন।

মনে রাখতে হবে
‘নামাজ হচ্ছে এমন ইবাদত যা মানুষকে ইসলাম এবং কুফরের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়।’ কেননা ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ত্যাগ করা কুফরি। সুতরাং পরকালে যে ব্যক্তি নামাজের হিসাব যথাযথ দিতে পারবে, তার পরবর্তী সব আমলের জবাবদিহিতা সহজ হয়ে যাবে।

পরিশেষে...
আল্লাহ তাআলার ঘোষণা যে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ মানুষকে সব ধরনের অন্যায় ও মন্দ কাজ থেকে হেফাজত রাখে।’ তাই সে নামাজ প্রথম ওয়াক্তে আদায় করাই উত্তম এবং জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাসময়ে (প্রথম ওয়াক্তে) নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। কুরআন এবং হাদিসে ঘোষিত ফজিলত অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।