কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলায় লাখো মানুষের ঢল

আফছার হোসাইন
আফছার হোসাইন আফছার হোসাইন মিশর থেকে
প্রকাশিত: ০৪:১৫ পিএম, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

‘পড়ুন... শুরুতে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে মিশরের রাজধানী নিউ কায়রোর আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী কেন্দ্রে চলছে পক্ষকালব্যাপী ৫৬তম ‘কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলা’। প্রতি বছরের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৮০টি দেশের ১৩৪৫টি প্রকাশনা সংস্থা ও ছয় হাজার ১৫০টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল।

মেলায় ফিলিস্তিনিদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি, আল-আজহার আশ-শরিফের প্যাভিলিয়নে বিপুল জনসমাগম এবং নৈতিক ও পারিবারিক মূল্যবোধ সংরক্ষণের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাচ্ছে। প্রথম তিন দিনে দশ লাখ দর্শনার্থীর উপস্থিতি বইমেলার তাৎপর্যকে আরও উজ্জ্বল করেছে।

সুউচ্চ চিত্তাকর্ষক পাঁচটি হল সমৃদ্ধ ৮০ হাজার বর্গমিটারেরও বেশি আয়তনের দৃষ্টিনন্দন প্রদর্শনী কেন্দ্রে বইমেলার সুবিন্যস্ত স্টলের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন দেশ, সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরকাড়া প্যাভিলিয়ন। বই বিক্রি ছাড়াও প্রতিদিন এসব প্যাভিলিয়নে দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত ও বরেণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে চলে সভা, সেমিনার এবং শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির নানান বর্ণাঢ্য আয়োজন।

বিজ্ঞাপন

কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলায় লাখো মানুষের ঢল

মেলায় অংশ নেয় বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও কালচারাল সেন্টার। মেলায় দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশি ও শিক্ষার্থীরাও ভিড় করছেন। মিশরে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে, আল-আজহার প্যাভিলিয়নের বইগুলো শুধুমাত্র মুদ্রণের খরচে বিক্রির ঘোষণা দেয়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এছাড়া সরকারি-বেসরকারি প্রকাশনা সংস্থাগুলো বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সরকারি সংস্থা ‘জেনারেল ইজিপশিয়ান বুক অর্গানাইজেশন’ বইয়ের ওপর ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে, যেখানে কিছু বই মাত্র এক মিশরীয় পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে।

আরও পড়ুন

৫৬তম আন্তর্জাতিক বই মেলায় বাংলাদেশি লেখক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনূছিয়া মাদরাসার আরবি সাহিত্যের বিভাগীয় প্রধান মাওলানা আবু বকর হাফিজাহুল্লাহ্ এসেছেন নিজের লেখা আরবি বই হানাফি আইনশাস্ত্রের ভূমিকা ও ‘আল-হিদায়া’ বিশ্লেষণ বা পর্যালোচনা (المدخل إلى فقه الحنفي وكتاب الهدايه) নিয়ে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, মিশরের মতো একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমার কিতাবের উপস্থিতি আরবি সাহিত্যের গৌরব বৃদ্ধি করেছে। মিশর তথা আন্তর্জাতিক পাঠকদের হৃদয়ে এই বই স্থান করে নিয়েছে, এটা লেখকের জন্য এক বিরাট সাফল্য।

কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলায় লাখো মানুষের ঢল

আবু বকর হাফিজাহুল্লাহ্ আরও বলেন, বাংলাদেশের ইসলামী শিক্ষা, গবেষণা এবং সাহিত্যের মর্যাদাকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে আমার লেখা এই বই। আর এই সাফল্য অনেক নতুন লেখককে প্রেরণা যোগাবে।

বিজ্ঞাপন

এবারের আয়োজক কমিটি দেশটির বিখ্যাত জীববিজ্ঞানী ডক্টর আহমেদ মোস্তাগীর ও প্রবীণ লেখিকা ফাতমা আল-মাদউলকে কায়রো বইমেলার বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে ঘোষণা করেছে।

১৯৬৯ সালে কায়রো শহর প্রতিষ্ঠার ১ হাজার বছর পূর্তি উপলক্ষে আরব বিশ্বের প্রাচীন এ আন্তর্জাতিক বইমেলার শুরু হয়। কালক্রমে এর পরিধি ও সমৃদ্ধি এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, বর্তমানে কোনো কোনো সমীক্ষায় একে ফ্রাঙ্কফুট বই মেলার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বই মেলার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

এবারের অতিথি দেশ সালতানাত ওমান নিজেদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরছে পাঠকদের কাছে।

বিজ্ঞাপন

এমআরএম/এমএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - jagofeature@gmail.com