মালয়েশিয়ায় পর্দা নামলো ২০তম আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের

আহমাদুল কবির
আহমাদুল কবির আহমাদুল কবির , মালয়েশিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:২৪ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিশ্বের বৃহত্তম হালাল শোকেস হিসেবে পরিচিত মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেস। ৪৫টি দেশের অংশগ্রহণে শুক্রবার পর্দা নামল এর ২০তম আসরের।

রাজধানী কুয়ালালামপুরের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টার (মিটেক) এ ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে চার দিনব্যাপী চলা এ আসরে খাদ্য ও পানীয়, মডেস্ট ফ্যাশন, ই-কমার্স, ইসলামিক ফিন্যান্স ও ফিনটেকসহ মোট ১৫টি ক্লাস্টারে ১০০০ এর বেশি বুথের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪৫টি দেশ অংশ নেয়।

মালয়েশিয়ায় পর্দা নামলো ২০তম আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের

আসরের শেষ দিনে (শুক্রবার) পরিদর্শনকালে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান সাংবাদিকদের জানান, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে হাইকমিশন বাংলাদেশের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণসহ অন্যান্য পরিকল্পনা নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

হালাল পণ্যের বাণিজ্য একটি ক্রমবর্ধমান সেক্টর। সম্প্রতি হালাল পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় হালাল বাণিজ্যের পরিমাণও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও হালাল পণ্য বাণিজ্যে অনেক পিছিয়ে রয়েছে এবং মালয়েশিয়া হালাল বাণিজ্যে বিগত ১০ বছর ধরে শীর্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে।

মালয়েশিয়ায় পর্দা নামলো ২০তম আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের

বাংলাদেশের হালাল বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সঙ্গে হাইকমিশন কাজ করছে। এছাড়াও বাংলাদেশে যৌথ প্রচেষ্টা/প্রকল্প গ্রহণপূর্বক হালাল করিডোর/হালাল হাব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈশ্বিক হালাল অর্থনীতির সুযোগ গ্রহণের জন্য জন্য মালয়েশিয়ায় ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

হাইকমিশনার আশা রেখে আরও বলেছেন, এই মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে হালাল সেক্টরের উন্নয়ন তথা মালয়েশিয়াসহ আসিয়ান অঞ্চলে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়। ভবিষ্যতে আরও বেশি প্রতিষ্ঠান যেন এই ধরনের মেলায় অংশগ্রহণ করতে পারে সে বিষয়ে হাইকমিশনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

মালয়েশিয়ায় পর্দা নামলো ২০তম আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের

মালয়েশিয়ার মিনিস্ট্রি অব ইনভেস্টমেন্ট, ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং মালয়েশিয়া এক্সটারনাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (মেট্রেড) এই মেলার আয়োজন করে। এই মেলায় মালয়েশিয়ার হালাল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন বারাহাদ (এইচডিসি) জিইসি ডেভেলপমেন্ট অব ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট অফ মালয়েশিয়া (জেএকেআইএম) সহযোগী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে

এই মেলায় বাংলাদেশের ৫টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। খাদ্য ও পানীয়, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ব্যবসায়িক চেম্বার এসব ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে নওরিস ফুডস লিমিটেড, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, প্রাণ ফুডস, কে.এম.আর ক্রাফ্ট (লেদার গুডস), এবং মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ মেলায় অংশগ্রহণ করে। মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে নেটওয়ার্কিং, বিজনেস ম্যাচমেকিংসহ সার্বিক সহযোগিতা করছে।

মালয়েশিয়ায় পর্দা নামলো ২০তম আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের

শুক্রবার, মেলার সমাপনী দিনে মেলা ও বাংলাদেশি স্টল পরিদর্শন করেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান। তিনি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে মালয়েশিয়ায় তাদের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে বিভিন্ন পরামর্শ দেন এবং হাইকমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ সময় মালয়েশিয়া এক্সটারনাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (মেট্রেড) এর চেয়ারম্যান দাতো সেরি রিজাল মেরিকান নেইনা মেরিকান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দাতুক মোহাম্মদ মুস্তফা আব্দুল আজিজ, ইভেন্ট প্রতিষ্ঠান কিউবি ইন্টিগ্রেটেড মালয়েশিয়ার পরিচালক (বিজনেস ইভেন্টস) ইউনিস লতিফ, বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর (কনস্যুলার) মো. মোরশেদ আলম, প্রথম সচিব (প্রেস) সুফি আব্দুল্লাহিল মারুফ, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ২০তম মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেস এবং দ্য গ্লোবাল হালাল সামিট (জি এইচএ এস) ২০২৪ উদ্বোধন করেন। এ সময় উপ-প্রধানমন্ত্রী ড. আহমেদ জাহিদ হামিদি, মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এমআরএম/জিকেএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]