মিশরের মুত্তাসিল সনদ পেলেন বাংলাদেশি নেছার আহমাদ আন নাছিরী

আফছার হোসাইন
আফছার হোসাইন আফছার হোসাইন মিশর-থেকে
প্রকাশিত: ০২:৫৫ পিএম, ০১ আগস্ট ২০২৪

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে লাল-সবুজের পতাকাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের হাফেজ তরিকুল ইসলাম, সাইফুর রহমান ত্বকি, দৃষ্টিবন্ধি হাফেজ তানভীর হোসাইন, সা’আদ সুরাই, বশির আহমাদ, আবু রাহাত, আবু তালহাও ফয়সাল আহমাদসহ আরও অনেকেই।

এ সকল বিশ্ব বিজয়ী কুরআনের হাফেজ গড়ার সফল কারিগর, বাংলাদেশের মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার প্রিন্সিপাল শাইখ নেছার আহমাদ আন-নাছিরী নিজেই এবার এক সম্মাননা পেলেন এলেমের কা’বাখ্যাত বিশ্বের প্রাচীন সভ্যতার দেশ মিশরে।

সোমবার (২৯ জুলাই) মিশরের রাজধানী কায়রোর নাসের সিটি তাওফিকিয়া হল রুমে রেওয়ায়েতে আসেমের ওপর শু’বা ও হাফস শেষ করার এই সম্মাননা সনদ শায়েখ নেছার আহমাদ আন নাছিরীর হাতে তুলে দেন দেশটির বিশ্ব বিখ্যাত ক্বারী শায়েখ আহমাদ-আহমাদ নাঈনা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মিশরের বিখ্যাত ক্বারী শায়েখ মুহাম্মদ আল মুরিজী, শায়েখ আব্দুল ফাত্তাহ, শায়েখ আব্দুল লাতিফ ওহদান, শায়েখ সাঈদ আর- রাশেদ এবং আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার বাংলাদেশি বিচারক শায়েখ শুয়াইব মুহাম্মদ আল-আজহারী ও মাওলানা মুহিব্বুর রহমান আল-আজহারী। তাছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মিশরের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর।

মুত্তাসিল সনদ পাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাইখ নেছার আহমাদ আন-নাছিরী বলেন, মিশরের বিশ্ববিখ্যাত কারীরা আমাকে মুত্তাসিল সনদ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, এই মুত্তাসিল সনদ গ্রহণ করার মাধ্যমে আল্লাহ তাওয়ালা আমাকে ইলমের কা’বাখ্যাত মিশরে আরও একটি স্বপ্ন পূরণ করার তাওফিক দিলেন, আল্লাহ তায়ালা যেন বাকি রেওয়ায়েতগুলো শেষ করার তাওফিক দান করেন এবং মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যেন কুরআনের ছাত্র হিসেবে আমাকে কবুল করে নেন। আমি কুরআনের উসিলায় সব কিছু পেয়েছি, কুরআনের জন্যই জীবনের সব কিছু উৎসর্গ করতে চাই, মিশরে আছি দীর্ঘদিন যাবত শুধুই কুরআনের ভালোবাসায়।

মিশরের মুত্তাসিল সনদ পেলেন বাংলাদেশি নেছার আহমাদ আন নাছিরী

নেছার আহমাদ বলেন, দীর্ঘ দিন যাবত মিশরে অবস্থান করায় বাংলাদেশকে অনেক বেশি মিস করছি, জানি না বাংলাদেশ কেমন আছে, আল্লাহ তায়ালার কাছে ফরিয়াদ করি আল্লাহ তায়ালা যেন বাংলাদেশকে হেফাজত করেন। এবারের রমজান, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা নিজের পরিবার মা-বাবা আত্মীয়-স্বজন ছাড়াই কাটাতে হল শুধুই কুরআনের ভালোবাসায়।

তিনি বলেন, রেওয়াত শুরু করার সময় অনেকেই বলেছেন আমার ছাত্ররা সারা বিশ্বে কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়, আমার এই রেওয়াত শেখার কি প্রয়োজন? আর বাংলাদেশেও রেওয়াতের প্রচলন নেই বললেই চলে। সব কিছু উপেক্ষা করে ইলমের কা’বাখ্যাত মিশরে শু’বা এবং হাফস শেষ করে ইজাযা গ্রহণ করার তাওফিক আল্লাহ তায়ালা দান করেছেন।

মিশরে শায়খ ফারাবী বাগদাদ থেকে ১০ দিনের সফরে মিশর এসে দীর্ঘ বছর থাকার ইতিহাস শুনেছি। আমিও কুরআনের নেশায় নেশাগ্রস্ত হয়ে প্রিয় মাতৃভূমির মায়া ছেড়ে, নিজের রক্ত পানি করা একাধিক প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান রেখে ভিন্ন দেশে পড়ে আছি। আল্লাহ তায়ালা আমাকে যেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কুরআনের ছাত্র হয়ে থাকার তাওফিক দান করেন।

এমআরএম/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]