মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাচ্ছে না কারখানাগুলো


প্রকাশিত: ০৮:০৮ এএম, ২১ এপ্রিল ২০১৬

শ্রমিক সংকটে পড়েছে মালয়েশিয়ার শিল্প কারখানাগুলো। শ্রমিকের অভাবে সেগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দেশটির ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানাগুলোর ওপর জরিপ চালিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছে ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারস (এফএমএম) নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

প্রতিষ্ঠানটির জরিপে বলা হয়, সেদেশের প্রায় ৮৪ শতাংশ শিল্প কারাখানায় শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে। আর এ নিয়ে কারখানার মালিকদের মধ্যেও রয়েছে চাপা ক্ষোভ। কারণ তারা নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য হস্তান্তর করতে পারছে না।

শুধু তাই নয় দেশটির কন্সট্রাকশন সাইডেও (নির্মাণ খাত) শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন অবৈধ শ্রমিক ধর-পাকড়ে শ্রমিকরা পড়েছেন বিপাকে। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় অনেকে কাজে যেতে পারছেন না।

এক টেক্সাইল কোম্পানির মালিক দাতু সৈয়দ মোহাম্মদ ইজহার বলেন, তার ১৩৫ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হলেও তিনি ঠিকমত শ্রমিক পাচ্ছেন না। বহু কষ্টে ২০ জনকে সংগ্রহ করেছেন। শ্রমিকের অভাবে তার কারখানার মেশিনগুলো অলস পড়ে আছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে চায়না ও মালয়েশিয়ান ব্যবসায়ীদের সংগঠন চায়নিজ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অব মালয়েশিয়ার (এসিসিসিআইএম) সাধারণ সম্পাদক দাতু লো কিয়ান চিয়ান বলেন, শ্রমিকের অভাবে বিশেষ করে ফার্নিচার কারখানাসহ অন্যান্য কারাখানাগুলোর উৎপাদন কমে এসেছে। কোম্পানিগুলো নতুন করে অর্ডার নিতে ভয় পাচ্ছে।

চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বৈধকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

অনেকটা একই সুরে কথা বলেছেন মালয় বিজনেসম্যান অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব মালয়েশিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট দাতু সোহাইমি শাহদান।

তিনি ক্ষেভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারকে শুধু শ্রমিক আনা বন্ধ রেখে চুপ থাকলেই হবে না বরং বিদেশি শ্রমিক নিয়ে তারা বিকল্প কি ভাবছেন তার সদুত্তর দিতে হবে।

এদিকে ফ্রিপেনাকো কোম্পানির অধীনে ৭০টি বৃহৎ কোম্পানি রয়েছে যার মধ্যে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর অংশীদারিত্ব আছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

একই ইস্যুতে এতদিন নিশ্চুপ থাকলেও এখন কথা বলা শুরু করেছেন, ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।

সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে শ্রমিক নেয়া বন্ধ থাকায় বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মধ্যম সারির ব্যবসায়ীরা শ্রমিক সংকটে ভুগছে। সরকার খুব দ্রুত এর সমাধান করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এদিকে ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকর্চাস মনে করে, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আন্তর্জাতিক বাজার হারাবে মালয়েশিয়া। যা দেশটির চলমান মন্দা অর্থনীতিকে আরো বেশি নাজুক অবস্থায় ফেলে দেবে।

এদিকে শ্রমিকের অভাবে মালয়েশিয়ার প্রায় প্রতিটি রাজ্যের কারাখানা মালিকদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ কাজ করছে।

এ অবস্থায় পেনাং এর মুক্ত ব্যবসায়ীক অঞ্চলের সংগঠন ফ্রিপেনাকা মালয়েশিয়াতে তাদের বিনিয়োগ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। শ্রমিক বন্ধ থাকার সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা ভাবছেন সংগঠনের নেতারা।

এসএইচএস/পিআর

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]