৮ বছরে ইইউতে গোল্ডেন ভিসা পেয়েছেন এক লাখ ৩২ হাজার অভিবাসী
২০১১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ইউরোপীয় রেসিডেন্সি এবং সিটিজেনশিপ ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম বা গোল্ডেন ভিসার আওতায় এক লাখ ৩২ হাজারেরও বেশি অভিবাসী ইইউভুক্ত দেশগুলোতে নাগরিকত্ব পেয়েছেন। অর্থনীতি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম বিজ নিউজ এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বিজ নিউজের বরাত দিয়ে শেনজেন ভিসা ইনফো জানিয়েছে, পর্তুগাল, গ্রিস, ইটালি এবং স্পেনের মতো ইউরোপীয় দেশগুলোতে রেসিডেন্সি এবং সিটিজেনশিপ ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে ২০১১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এক লাখ ৩২ হাজারেরও বেশি অভিবাসী নাগরিকত্ব পেয়েছেন।
এছাড়া ২০২২ সালে পর্তুগাল কর্তৃপক্ষ এক হাজার ২১৮টি গোল্ডেন ভিসা জারি করেছে। চলতি বছররে প্রথম ছয় মাসে দেশটির কাছে আরও ৮৬১টি আবেদন জমা পড়ে। গত বছরের একই সময়ে সংখ্যাটি ছিল ৬২৪।
গ্রিস ২০২২ সালে মোট চার হাজার ৩৬৫টি গোল্ডেন ভিসার আবেদন পেয়েছে। যার মধ্যে দুই হাজার ৪৩২টি আবেদন বছরের শেষ প্রান্তিকে জমা পড়েছে।
ইতালিতে গত বছর ৭৯টি গোল্ডেন ভিসা মঞ্জুর করা হয়েছে। এসব ব্যক্তিদের বেশিরভাগই রাশিয়ান, অ্যামেরিকান এবং ব্রিটিশ নাগরিক। এই সংখ্যাটি আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
অন্যদিকে, স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষ গত বছর মোট দুই হাজার ৪৬২টি গোল্ডেন ভিসা মঞ্জুর করেছে। যা ২০২১ সালের পরিসংখ্যানের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি।
ইইউভুক্ত দেশ আয়ারল্যান্ড ২০২২ সালে গোল্ডেন ভিসা প্রোগ্রামের জন্য এক হাজার ১৬টি আবেদন পেয়েছিল। পাশাপাশি দেশটি ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২৫ মে পর্যন্ত এক হাজার ৩৫০টি আবেদন নথিভুক্ত করা হয়েছিল।
ইইউতে গোল্ডেন ভিসা কার্যক্রমের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। পর্তুগালসহ অনেক দেশ এরই মধ্যে এ ধরনের ভিসার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা শুরু করেছে।
যার ফলে গোল্ডেন ভিসায় আগ্রহীদের অনেকেই ডিজিটাল চাকরি ভিসার মতো বিকল্প পথের দিকে আগ্রহী হচ্ছেন।
বাসা থেকে কাজ করতে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য স্পেন ডিজিটাল ভিসা কার্যক্রম চালু করেছে।
এদিকে, গোল্ডেন ভিসা কার্যক্রম বন্ধ কর দিতে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন।
গোল্ডেন ভিসা এবং গোল্ডেন পাসপোর্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে মূলত একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ এবং অন্যান্য শর্তপূরণ করার মধ্য দিয়ে একজন বিদেশিকে বসবাস ও নাগরিকত্বের অধিকার দেওয়া হয়।
তবে এই ধরনের রেসিডেন্সি এবং নাগরিকত্বের ভবিষ্যত অনেকটাই অনিশ্চিত। কারণ এই প্রোগ্রামগুলো মাধ্যমে অর্থ পাচারকারী এবং দুর্নীতিগ্রস্তদের সুবিধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
‘সাইপ্রাস পেপারস’ নামের আল জাজিরার একটি বহুল আলোচিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যেসব দেশ গোল্ডেন ভিসা প্রোগ্রামটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল তাদের মধ্যে সাইপ্রাস অন্যতম। দেশটি এই প্রোগ্রামের সঙ্গে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি বেআইনি বিষয়ের প্রমাণ পেয়েছে।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ড ঘোষণা করেছে, তারা বিনিয়োগকারী ভিসা প্রোগ্রামটির মাধ্যমে আর কোনো আবেদন গ্রহণ করবেন না।
একই মাসে আবাসন সংকটের কারণে পর্তুগালও গোল্ডেন ভিসা প্রোগ্রামের মাধ্যমে বসবাসের দুটি রুট বন্ধ ঘোষণা করেছে।
আয়ারল্যান্ড এবং পর্তুগালের সিদ্ধান্তের পর ধনী বিদেশি অভিবাসীরা গ্রিস এবং স্পেনের মতো অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন।
এমআরএম/জিকেএস