লাল দোপাট্টা
তুই ছত্তি আমার লগে মরবি?
আরেহ ওই ছেমরি, তু্ই এত দেমাগ দেখাছ কিল্লাই?
বিয়ান বেলাত থন এইহানে কাউয়ার লাগান খাড়াইয়া রইছি, তোর দিলে কোনো রহমত নাইকা?
পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের রাস্তার ওপরে যে মসজিদটা তার ঠিক উল্টা পাশেই একটা গলির শেষ মাথায় দুই কোনায় দুইটা কাঠের দুইপাল্লা দরজা, তার একটা ধরে কপাল কুঁচকে মুখে ভেংচি কেটে পারুল বলে উঠলো।
আইছে, সক্কাল বেলা রোমিও আইয়া পরছে...
আবে ঐ, আমি কি তোরে আইবার কইচি নাকি?
খাড়ায় খাড়ায় ফাল পারতাছোস..., তফাৎ যা।
আরিব্বাবা, তেল এক্কেরে উপচ্ছায় পরে দেহি, আমার জিনিছ দেখবার লাগি আমি যখন খুশি আমু তোর কি?
হগগলের দিল কি তোর মতো পাষাননি?
ছিমুইল্লা তু্ই এখনতরি আমারে চিনবার পারোস নাই, তাই বুজবার পারতাছোস না কেমতে কতা কইবি,
তোর জিনিস কেডা হুনি?
খালি ক্যাচাল করছ কেলা, ছোন ছামনের ছুক্কুর বার আমার কামকাজ নাইকা, ছুটি লইছি...
চল একলগে ছিনেমা দেইখা আছি, ছুপার হিট ছিনেমা আইছে।
এহ... আমি যাইতাম না তোর সাথে ছিনেমা দেখতে
কেলা
আমার ইচ্ছা
রাখ তোর ইচ্ছা, কাইল লাল জামা আর লাল দুপাট্টা পিন্দা রেডি হইয়া ছামনের হোটেলের মোড়ে আইবি ঠিক বিকাল তিনডায়,
আমি তোরে দেইখা গামু, ‘হাওয়া মে উড়তা যায়ে মেরা লাল দুপাট্টা মলমল’...
হামার দুপাট্টা উড়পে, তুই কেন গাইবি মেরা লাল দুপাট্টা ছেমড়া?
ঐ একই কথা, তু্ই আমি তো একই বাত
পারুল ভ্রু কুচকায় কপালে তিন ভাঁজ ফালায়া কইলো আইচ্ছা তাইলে তুইও লাল দুপাট্টা পিন্দা আইবি, আমরা যখন একই, তাইলে যামু তর লগে, নইলে না।
তু্ই এত্তো গ্যাঞ্জাম করস কিল্লায়?
মুখের ভাছাডা একটু ভালা করণ যায় না....
ফরফর ফরফর করতেই আছে, করতেই আছে, আইচ্ছা তু্ই গাইস মেরা লাল দুপাট্টা,
আমি গামু তেরা লাল দুপাট্টা..., এলা হইছে?
ঈদডা পার হইয়া একটা দিন যায় নাইকা, কই একটু দিলখুশ কথা কইবো, তা না এক্কেরে।
আইচ্ছা আমু নে, কি ছিনেমা?
কমু না ছারপ্রাইজ দিমু
পারুল হেসে দিলো, গজদাঁত আছে, এতো সুন্দর হাসি মেয়েটার
শিমুল দুচোখ ভরে তাকিয়ে আছে,
মাছাল্লাহ, তোরে কি বিউটিফুল লাগে হাসলে, দিল উইড়া যায়
তাড়াতাড়ি ধইরা আন ছেমড়া, দিলো গেলে আর কেউ মানুষ থাহেনি
হ, বহুত কষ্টে ধইরা বাইন্দা থুইছি...
তু্ই তো বুঝলি না পেয়ার মে কাভি কাভি এছা হোতা হে
কাভি খুশী কাভি গাম ভি হোতা
তু্ই তো দেহি ভালোই হিন্দী কইবার পারোস
কেলা, তু্ই একলাই ছব কইবি...
কাভি নেহি, মার যায়ঙে তো ভি হাম সাথ সাথ মারেঙ্গে
শিমুল অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো, হাছানি?
তু্ই ছত্তি আমার লগে মরবি?
যা ফুট ছেমড়া, ডায়ালগ কইলাম...
আম্মিজান ডাক পারছে, এলা যাইগা
আইচ্ছা, যা...
কাল টাইমমতো চইলা আইস
পারুল যেতে যেতে মাথা ঘুরে পেছনে তাকালো...
সেই গজদাঁতের হাসি, এরপর দিলো দৌড়
গলির মোড়ে একটা পুরোনো পাঁকুড় গাছ, পাতাগুলো অল্প বিস্তর নড়াচড়া করছে, যতক্ষণ পারুলকে দেখা যায় দাঁড়িয়ে দেখলো শিমুল, এরপর গলায় মাফলার ঠিক করে রাস্তার দিকে হাঁটা দিলো, আইজ দিলখুশ, পারুল রাজি হইছে ছিনেমা দেখতে, কি যে খুশী লাগতাছে...
মনে মনে ঠিক করলো,
কাইল বড়লোক গো লাগান পপকর্ন আর পেপসি কিনা নিয়া ঢুকবো ছিনেমা দেখতে...
চলবে...
এমআরএম/জিকেএস