উপচেপড়া মানুষের ভিড়ে শেষ হলো দুদিনের বৈশাখী উৎসব

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি
দুই দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসবের শেষদিন ১৫ এপ্রিল নিউইয়র্ক সিটি মেয়র প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন। এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড আয়োজিত বাংলা বর্ষবরণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বরণ এবং উদযাপন করতে অন্তত দশ হাজার বাঙালি সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।
হল্যান্ড, জার্মানি, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেট থেকে এসেছিলেন শিল্পী-কলাকুশলী এবং দর্শক। সকাল আটটা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত একটানা চলে আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির পরিবেশনা এবং বৈশাখী মেলা। লায়লা হাসানের নেতৃত্বে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এবং কমলিনি মুখোপাধ্যায়সহ পাঁচ শতাধিক শিল্পী এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।
জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধন করে নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস বাংলাদেশিদের ভূঁয়সী প্রশংসা করে বলেন, অজস্র মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে আমি অভিভূত। আমেরিকার অগ্রগতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিভিন্ন সেক্টরে যে ভূমিকা রাখছে তা অতুলনীয়।
এ সময় উৎসব স্মারক হিসেবে এরিক অ্যাডামসকে উত্তরীয় ও উৎসব পাঞ্জাবি উপহার দেন আয়োজক সংগঠন এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড সভাপতি বিশ্বজিত সাহা ও তোফাজ্জল লিটন। প্রধান সম্পাদক নুরুল বাতেন বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ স্মারকগ্রন্থ মেয়রের হাতে তুলে দেন।
এ সময় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ড. নুরুন্নবী, সংগীত পরিচালক মহিতোষ তালুকদার তাপস এবং বাংলাদেশ ক্লাব যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতি নুরুল আমিন বাবু।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল, ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সৌন্দর্যের কথা তুলে এরিক এডামকে জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখ। সার্বিকভাবে নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের পাশে থেকে সহযোগিতা থাকার জন্য অ্যাডামসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের ডেপুটি কমিশনার দিলীপ চৌহান শত কণ্ঠে বর্ষবরণের গানের সঙ্গে নাচে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশিরা অতিথি পরায়ণ ও সংস্কৃতিবান।
শতকণ্ঠে বাংলা বর্ষবরণের আহ্বায়ক লায়লা হাসান বলেন, অন্তত দশ হাজার লোকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের এ আয়োজন সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী জনগোষ্ঠীরা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে যেখানে বাংলাদেশিরা থাকবে সেখানেই এই উৎসব হবে।
এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের সভাপতি বিশ্বজিত সাহা বলেন, বাংলার বারওয়ারী মেলার নানান উপাদানসহ নানা ধরনের স্টল, শিশুদের যেমন খুশি চিত্রাংকন, গরম গরম ইংলিশ ভেজে পান্তা ভাতের সঙ্গে পরিবেশন, সারাদিন বাংলা নাচ গান কবিতা নাটক, বিদেশিদের কণ্ঠে বাংলা গান, মঙ্গল শোভাযাত্রায় হাজারো মানুষের অংশগ্রহণ পুরো প্রাঙ্গণটি হয়ে উঠেছে এক টুকরো বাংলাদেশ।
এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল লিটন বলেন, এবারের মতো আগামী বছরও বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারসহ বাঙালিদের প্রাণকেন্দ্রে আরো বড় আকারে উদযাপিত হবে পহেলা বৈশাখ।
এমআরএম/জেআইএম