বহু দেশকে টপকে মালয়েশিয়ায় অগ্রাধিকার পাচ্ছেন বাংলাদেশিকর্মী

আহমাদুল কবির
আহমাদুল কবির আহমাদুল কবির , মালয়েশিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪:৫২ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২১

মালয়েশিয়ার সোর্স কান্ট্রির শীর্ষ স্থানে থাকা বহু দেশকে পেছনে ফেলে এবারই প্রথম একচেটিয়া অগ্রাধিকার পাচ্ছেন বাংলাদেশিকর্মী। এছাড়াও পুরনো কিছু নিয়ম-কানুন পরিবর্তন করে শ্রমিকবান্ধব আইন করেছে দেশটির অভিবাসন ও মানবসম্পদ বিভাগ।

দীর্ঘ ৩ বছর দেশটির শ্রমবাজারের আকাশের কালো মেঘ সরে পৌষের সকালের মিষ্টি রোদ পড়ছে বাংলাদেশি কর্মীদের পিঠে। গতকাল মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে’র একটি প্রতিবেদন সূত্রে এমন আভাস পাওয়া গেছে।

এমনিতেই পরিশ্রমী জাতি হিসেবে বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ানদের কাছে পূর্ব পরিচিত। সাবেক প্রধানমন্ত্রী আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার মাহাথির মোহাম্মদ একাধিকবার বাংলাদেশিদের শ্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আশার কথা হলো আগের চেয়ে এবারের সমঝোতা স্মারকে কিছু বিষয় পরিবর্তন আসছে।

এই পরিবর্তনগুলো শ্রমিকদের কল্যাণ বয়ে আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

১। জি-টু-জি প্লাস পদ্ধতি থাকছে না।

২। যুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি।

৩। কর্মীদের বাধ্যতামূলক বিমা থাকছে যেকোনো পরিস্থিতিতে সহযোগিতা পাবেন।

৪। কর্মীদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা ও খরচ বহন করবে নিয়োগদাতা এতে করে অবৈধ হয়ে পড়ে আর আটকে পড়ে থাকবে না।

৫। চুক্তি মেয়াদে কর্মীদের দায়িত্ব নিতে হবে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সিকেও এতে করে এজেন্সির প্রতারণা ও হয়রানি কমবে।

৬। বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত এতে করে দীর্ঘ সময় মালয়েশিয়ায় কাজের সুযোগ পাওয়া যাবে।

তবে কর্মীদের মালয়েশিয়া যেতে অভিবাসন ব্যয় বা খরচ কত হবে, তা জানা যাবে সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর। এদিকে, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে সমঝোতা স্মারক সই করার জন্য প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদকে মালয়েশিয়ায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানান আনুষ্ঠানিক চিঠিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীকে চলতি মাসের ১৬ বা ১৭ তারিখে সমঝোতা স্মারক সইয়ের জন্য চিঠি পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানান মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী। সেদিন সকালে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক অনুমোদন দেয় দেশটির মন্ত্রিসভা।

একইসঙ্গে ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী চিঠিতে লিখেছেন, ‘১৫ নভেম্বর আমার আগের চিঠি অনুসারে, আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ১০ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ কর্মীদের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের অনুমোদন দিয়েছে যা মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সই হবে।’

এম সারাভানান চিঠিতে উল্লেখ করেন, ‘১৬ বা ১৭ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ায় আসার জন্য আপনাকে আমন্ত্রণ জানাতে পেরে সম্মান বোধ করছি। এই বিষয়ে আপনার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। মালয়েশিয়া আপনাকে ও প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানাতে অপেক্ষা করছে।’

তবে, নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় ও কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মধ্যেও এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যহত রয়েছে। ১৬ বা ১৭ তারিখ নিয়ে মালয়েশিয়া পক্ষের আগ্রহ বেশি।

কারণ হিসেবে সূত্র বলছে, এরপরে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা বেশকিছু দিন মালয়েশিয়ায় থাকবেন না। আবার বাংলাদেশে ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণায়ের ব্যস্ততা রয়েছে।

এমআরএম/জিকেএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]