পরিবার, এক বিস্ময়কর সাবলীল সত্য পাঠশালা
পরিবার, এক বিস্ময়কর সাবলীল সত্য পাঠশালা। জীবন পরিক্রমার পথচলার শুরু হয় এখান থেকেই। মানব জীবনের সকল শাখায় এর বিচরণ। অথচ আমাদের পরিবার গঠন, বিনির্মাণের কিংবা প্রশস্তের জায়গা দিনে দিনে সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আমরা হয়ে উঠছি এক অদ্ভুত শহুরে মানুষ।
একটা সময় আমাদের দেশে একান্নবর্তী পরিবারে সুখ-দুঃখে ভরা প্রাণবন্ত জীবন ছিল। এখন তা অনেকটা অবাস্তব চিত্রের মতো। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায়, ‘পৃথিবীর ১ম সংগঠন হলো পরিবার। পরিবারকে কেন্দ্র করেই পৃথিবীর যাবতীয় সভ্যতা দাঁড়িয়ে। আমরা তারই ফল ভোগ করছি।’
পরিবার সাধারণত ছয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, স্বামী-স্ত্রীর সংখ্যার ভিত্তিতে, কর্তৃত্বের ভিত্তিতে, আকারের ভিত্তিতে, বংশ মর্যাদা ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে, বিবাহোত্তর স্বামী-স্ত্রীর বসবাসের ভিত্তিতে পরিবার। পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ভিত্তিতেও পরিবার হয়। কিন্তু এই ছয় ধরনের শাখা থাকলেও এর ভিত্তি কিন্তু একটাই।
পরিবার সংগঠনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হচ্ছে শিশু। ছোট্ট বয়স থেকেই মুক্ত মন-মানসিকতা গড়ে না উঠলে তা আর পরবর্তী জীবনে আয়ত্ত করা খুবই দুরূহ ব্যাপার। যদি পরিবার একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হয় তাহলে পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্য স্বাধীন হবে। অথচ আমরা পরিবারের শিশু সদস্যটিকে স্বাধীন কিংবা মুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠতে দেই না আজকাল।
পারিবারিক মৌলিক শিক্ষার পাশাপাশি শিশুকে মুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠতে দেয়া জরুরি। মুক্ত পরিবেশ বলতে মুক্তভাবে স্বপ্ন দেখতে দেয়া, মুক্তভাবে পছন্দ মতো ক্যারিয়ার পছন্দ করতে দেয়া। দেখা যায় সন্তান হতে চায় কবি তাকে বল প্রয়োগ করা হয় চিকিৎসক হতে।
ভবিষ্যতে এ সন্তান দেখা যায় পরিবারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায়। তাই পরিবারকে অনেকটা গণতান্ত্রিক হতে হবে এবং গড়ে তুলতে একটি সামাজিকতা সম্পন্ন আধুনিক পরিবার। সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করলে সন্তান বাবা মায়ের সঙ্গে সব মুক্তভাবে শেয়ার করতে পারে। আর সন্তান যদি সবকিছু খোলামেলাভাবে শেয়ার করতে পারে তাহলে সে কখনো নীতিহীন হবে না।
পরিবারের গুরুত্ব বিষয়ে অ্যান্টর্নি ব্রান্ডের ভাষায় বলা যায়, ‘অনেক কিছুই আমাদের বদলে দিতে পারে, তবে আমাদের শুরু এবং শেষ পরিবারের সঙ্গেই হয়ে থাকে।’
১৫ মে বিশ্ব পরিবার দিবস। দিবসটির ঘোষণা আসে জাতিসংঘ থেকে ১৯৯৩ সালে। ১৯৯৪ সালে পরিবার বর্ষও পালন করা হয়। সে থেকে এটি একটি আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
এমআরএম/জেডএইচ/