স্পেনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের কার্যকাল সমাপ্তিতে ভিডিও বার্তা

মিরন নাজমুল
মিরন নাজমুল মিরন নাজমুল , স্পেন প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪:০০ এএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকারের কার্যকাল রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) শেষ হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে বিদায়কালে বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে পারেননি বলে রাষ্ট্রদূত আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

স্পেনের বাংলাদেশ দূতাবাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য সম্বলিত প্রায় ১০ মিনিটের একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করা হয়। সেখানে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংবাদিক সংগঠনসহ সবার উদ্দেশে বিদায়ী অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপালনকালে তার প্রচেষ্টা ও কার্যক্রমের ইতিবাচক দিকগুলো উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে গুরুত্বপূর্ণ এ দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত করায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

হাসান মাহমুদ খন্দকার তার বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে তাকে যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করা হয় সেগুলো ছিল, প্রথমত- স্পেন-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা, নিবিড় করা, আরও কার্যকর করা, দ্বিতীয়ত- স্পেন-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ এবং ফলপ্রসূ করা, রপ্তানি আয় বাড়ানো, বিনিয়োগ বাড়ানো এবং তৃতীয়ত- স্পেনে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তা করা এবং প্রবাসে তাদের কল্যাণে দায়িত্ব পালন করা।

jagonews24.com

ভিডিও বার্তায়, রাষ্ট্রদূত তার ওপর অর্পিত দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে পালনের জন্য তার পুরো টিম সচেষ্ট ছিল বলে উল্লেখ করেন। তিনি মনে করেন, বর্তমানে স্পেন-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত সন্তোষজনক।

বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, বিগত সাড়ে পাঁচ বছরে স্পেনের সঙ্গে সে সম্পর্ক আরও নিবিড়, ঘনিষ্ঠ ও ফলপ্রসূ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রতিবছরই সেই লক্ষ্যমাত্রা হাসিল করতে সমর্থন হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে সর্বশেষ করোনা মহামারির কারণে শেষের দিকে গতিধারা কিছুটা শ্লথ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ সময়ে সেটাও গতিশীল হয়ে যাবে।

কনস্যুলার সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি উল্লেখ করেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের দোরগোড়ায় গিয়ে কনস্যুলার সেবা পৌঁছে দিতে তার দায়িত্বপ্রাপ্ত টিম চেষ্টা করেছে। এ ক্ষেত্রে দূতাবাস কর্তৃপক্ষের বার্সেলোনা, মালাগা, টেনেরিফ, পালমা দে মাইওরকা, বিলবাও-এ কনস্যুলার ক্যাম্পের মাধ্যমে সহায়তা দেয়ার কথা উল্লেখ করেন হাসান মাহমুদ খন্দকার।

করোনা মহামারির কারণে যারা স্পেনে মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মরদেহ বাংলাদেশে পরিবহনের খরচ সরকারিভাবে বহনের চেষ্টার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। এ ক্ষেত্রে স্পেনের বাংলাদেশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠনের বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।

দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত তার কার্যকালে যেসব কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছেন তার কৃতিত্বের ভাগীদার বাংলাদেশিদের দিয়ে তিনি নিজেদেরকে অনুঘটক হিসেবে উল্লেখ করেন। রাষ্ট্রদূতের কার্যকালে স্পেনে অবস্থিত বাংলাদেশি সব ধরনের সংগঠনগুলোর কার্যক্রম ও দূতাবাসকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে স্পেন, উত্তর মেসোডোনিয়া ও মন্টিনেগ্রো এই তিন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক পর্যটন সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন হাসান মাহমুদ খন্দকার। তার সময়েই স্পেনে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট সিস্টেম এমআরপি চালু হয় এবং স্পেনের বাণিজ্যিক শহর বার্সেলোনায় দূতাবাস টিমের এক-দুই মাস পরপর কনস্যুলার সেবা প্রদানের কার্যক্রম চালু হয়।

এমআরআর

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]