মালয়েশিয়ার সেরা দর্শনীয় স্থান : কোথায় যেতে কত খরচ

নানা বর্ণ, ধর্ম আর সংস্কৃতির দেশ মালয়েশিয়া। মিনি এশিয়াও বলা হয়ে থাকে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কেন্দ্রে দেশটির অবস্থান। প্রধানত দুটি খণ্ডে বিভক্ত দেশটি; পশ্চিম মালয়েশিয়া এবং পূর্ব মালয়েশিয়া।

প্রায় ৪০ মাইল বিস্তৃত সমুদ্র আলাদা করে রেখেছে দেশটির দুই অংশকে। মোট আয়তন ৩,২৯,৭৫৪ বর্গ কিলোমিটার। পূর্ব মালয়েশিয়ায় রয়েছে দু’টি বড় রাজ্য এবং একটি কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত এলাকা। আর পশ্চিম মালয়েশিয়ায় রয়েছে ১১টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত এলাকা।

প্রতি বছর অসংখ্য ভ্রমণ-পিয়াসী বাংলাদেশি ঘুরতে আসেন। এখানে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে পাঁচ লাখের বেশি বাংলাদেশি রয়েছেন। পছন্দের তালিকায় মালয়েশিয়ার নাম প্রথম ৩টি দেশের মধ্যেই থাকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মালেশিয়ায় মাত্র একটিই ঋতু, বর্ষা। তাই এখানে প্রায় প্রতিদিন কম বেশি বৃষ্টি হয়। বাইরের আবহাওয়াটা গরম অনুভূত হয়।

jagonews24

কুয়ালালামপুর বিমান বন্দরে অবতরণ করার পর মূল শহরে যেতে হলে ট্যাক্সি অথবা বাসযোগে আসতে হবে। কুয়ালালামপুরে অবস্থান করার জন্য থাকার হোটেল ‘বুকিট বিনতাং’ এলাকা বেছে নিতে পারেন। এখানে পর্যটক হিসেবে মালয়েশিয়া এসে ‘বুকিট বিনতাং’ এলাকায় থাকলে আপনি সব রকমের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন।

যেখানে থাকবেন:

jagonews24

বেশিরভাগ পর্যটক মালয়েশিয়া আসার পর থাকার জন্য বুকিট বিনতাং এলাকার হোটেলগুলোই বেছে নেয়। হোটেলের ভাড়া দিনপ্রতি ৫০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত থেকে ৫০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত। পছন্দ অনুযায়ী ঠিক করে নিন আপনি ৩ তারকা, ৪ তারকা নাকি ৫ তারকা হোটেলে থাকবেন।মালয়েশিয়ার সব হোটেলেই চেক-ইন করার সময় দুপুর ১২টা। তাই সকালে কুয়ালালামপুর পৌঁছে হোটেল খুঁজতে বেরিয়ে পড়তে পারেন।

দর্শনীয় স্থান:

পেট্রোনাস টাওয়ার:

jagonews24

১৯৯৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু টুইন টাওয়ার। দুই টাওয়ারের মাঝে আছে একটি ব্রিজ, মাঝের এই ব্রিজকে বলা হয় স্কাই ব্রিজ। ৫০ রিঙ্গিত (১২০০ টাকা) দর্শনার্থীরা উঠতে পারবেন স্কাই ব্রিজে। কুয়ালালামপুরের মধ্যেই আছে টুইন টাওয়ার নামে খ্যাত পেট্রোনাস টাওয়ার।

পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার মালেশিয়ার সব থেকে জনপ্রিয় স্থান। রাতের টুইন টাওয়ারের সৌন্দর্য দিনের টুইন টাওয়ারের চেয়ে পুরো ব্যতিক্রম। সন্ধ্যার পর টুইন টাওয়ারের সামনে কেএলসিসি এলাকায় যাওয়াটাই উত্তম সময়। প্রতিদিনই সেখানে পর্যটকদের মিলনমেলা বসে।

লংকাবি:

jagonews24

কুয়ালালামপুর থেকে ৪১৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকত অঞ্চল আন্দামান সমুদ্রের ১০৪টি দ্বীপের সমষ্টি। কেবল কার, অপরূপা ঝর্ণার কলকল সুরধনি, সমুদ্রের নিচ দিয়ে রাস্তা, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আরও অনেক কিছুর দেখতে পাবেন এখানে। ইচ্ছা হলে ভিন্ন অভিজ্ঞতার জন্য একটি নৌকা ভাড়া করে চলে যেতে পারেন ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের ভেতর। সেখানেও আছে বাদুরের গুহা, ঈগলের গুহা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান।

jagonews24

দামুন ভ্যালি, সাবাহ:

দামুন ভ্যালি ইকো-ট্যুরিজম ও বনভূমির জন্য মালয়েশিয়ায় ভ্রমণের সেরা জায়গা। এটি ১৩০ মিলিয়ন বছরের পুরনো নিম্নভূমিতে অবস্থিত। এ বনভূমিতে অবিশ্বাস্য রকমের জীব-বৈচিত্র রয়েছে। ৪৩৮ বর্গকিলোমিটারের এ বনাঞ্চলে ১০০ প্রজাতিরও বেশি বন্যপ্রাণী ও তারও বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। এটিকে বন্য প্রাণী ও উদ্ভিদের আভাসভূমিও বলা হয়। পর্যটকদের ভাগ্য ভালো হলে এখানে ওরাওওটাং, বেঁটে হাতি, ধূসর চিতার দেখা পেয়ে যেতে পারেন। তবে এখানকার প্রধান আকর্ষণ হলো জনবসতি না থাকায় এর পরিশুদ্ধ পরিবেশ। জঙ্গলে ঘোরাফেরা, নাইট সাফারি ও প্রত্নতাত্তিক কাদাজান-দাসুন সমাধিতে যাওয়ার জন্য অবশ্যই অভিজ্ঞ ভ্রমণ গাইডের সহায়তা নিতে হবে।

jagonews24

পেনাং:

পেনাংকে দেশটির ভোজন রাজধানী বলা হয়। সেখানে বৈচিত্র্যময় খাদ্যের সম্ভার। আবার চীনা নববর্ষসহ বেশ কিছু জমকালো, রঙিন উৎসবও হয় সেখানে। পেনাং মালয়েশিয়ার আরেকটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। এটি কুয়ালালামপুর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মূলত পেনাং-এর মূল আকর্ষণ ট্রেন। প্রাপ্তবয়ষ্কদের জন্য ৮ রিঙ্গিত আর ছোট ও বৃদ্ধদের জন্য ৪ রিঙ্গিতের বিনিময়ে এই ট্রেনে চড়ে যেতে পারবেন পেনাং পর্বতে।

দ্বিতীয় পর্ব পড়ুন

এমআরএম/এমকেএইচ

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]