এ বিদায় লজ্জার
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত নভেম্ববরের নির্বাচনে হারের পর ভিত্তিহীন অবিরত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ব দেখল এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। রাজধানীর ক্যাপিটল হিলে অধিবেশন চলাকালে ট্রাম্পের পক্ষে মিছিল নিয়ে একদল অস্ত্রধারী ভবনের ভেতর প্রবেশ করে।
এ ঘটনায় সারা যুক্তরাষ্ট্র স্তম্ভিত, বিশ্ব বিস্মিত। এদিকে বিক্ষোভকারীদের দেশপ্রেমিক বলায় টুইটার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ১২ ঘণ্টা লক করে দিয়েছেন এবং নিয়ম না মানলে এরপর সাসপেন্ড করা হবে বলি জানিয়েছেন। ফেসবুক এবং ইউটিউব সমর্থকদের উদ্দেশে দেয়া তার ম্যাসেজ পোস্ট রিমুভ করেছেন। এ ঘটনা বড় লজ্জার।
বুধবার বিকেলে সংসদ চলাকালে এ আক্রমণ যখন ঘটে তখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেক্ট্রোরাল ভোটের গণনা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রামের পক্ষে যুক্তি দিচ্ছিলেন। সে সময় ট্রাম্প হোয়াইট হাউজের সামনে ট্রাম্পের পক্ষে আন্দোলনকারীদের এক সমাবেশে বক্তব্য দেন। Never give up never conceded. আমরা হাল ছাড়ব না।
আমি পরাজয় মেনে নেব না। এ সময় তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সমালোচনা করেন। ট্রাম্প সরাসরি ঘোষণা করেন আমরা কাপিটল হিলের দিকে যাব এবং আমার পক্ষের সিনেটরদের পক্ষে জয়ধ্বনি দেব। এর পরপরি অস্ত্রধারীরা ক্যাপিটল হিলের দিকে রওনা দেয়।
রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট দুই দলের নেতৃত্বেই এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেন। দুই পক্ষই বারবার বলেছেন এটা কোনো আমেরিকানের ব্যবহার হতে পারে না। এ আন্দোলনের সঙ্গে যারা যুক্ত তারা গণতন্ত্রের শত্রু, দেশের শত্রু।
রিপাবলিকান দলের শীর্ষ নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিস আইনতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। অধিবেশনে বারবার বলছেন আমরা দুই দলের, আমাদের মত পার্থক্য প্রবল, আমরা সকল বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করি তাই বলে আমরা শত্রু নই। এই আন্দলন আমার দল কখনই সমর্থন করি না।
অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট সিনেটের প্রধান সিনেটর সুমার বলেন, এরা আন্দোলনকারী নয়, সন্ত্রাসী। এরা রায়েটকারী। আমরা আশা করি এই সরকার এই সকল সন্ত্রাসীর আমেরিকার আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করবে। না করলে নতুন সরকার নিশ্চিতভাবে এই সকল সন্ত্রাসীর বিচার করবে। এই ঘটনা আমেরিকার ইতিহাসে অন্ধকারচ্ছন্ন ইতিহাস।
২০ তারিখে নতুন প্রেসিডেন্ট বাইডেন-হ্যারিসের হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দেবার দিন। ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ দিন আরো দুই সপ্তাহ পরে। কিন্তু আজকের এই ঘৃণিত এই ঘটনার পর ট্রাম্প প্রশাসনের প্রায় সকল সেক্রেটারি (মন্ত্রী) ক্ষমতা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। অস্ত্রধারী আন্দোলনকারীদের দমাতে ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র কারফিউ জারি করেন। এরপর সন্ধ্যায় আবার অধিবেশন বসে।
জো বাইডেন বলেন, এই ঘটনা লজ্জার। ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ক্যাপিটল হিলে অধিবেশনে আক্রমণ করে। নির্বাচিত সকল প্রতিনিধির জীবনকে শঙ্কায় ফেলা কোনো আন্দোলন নয়, এটা সন্ত্রাস। সন্ধ্যায় পরিবেশ কিছুটা শান্ত হলেও বেশ কিছু আন্দোলনকারী ক্যাপিটল হিলের চারপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।
এমআরএম/জেআইএম