আমিরাতে ৩ মাসের ‘মধ্যাহ্ন বিরতি’ আইন শুরু
সংযুক্ত আরব আমিরাতে সুস্বাস্থ্য রক্ষা ও প্রচণ্ড গরম আর তাপদাহ থেকে শ্রমিকদের নিরাপদে রাখতে ১৫ জুন শুরু হয়েছে ‘মধ্যাহ্ন বিরতি’ আইন। এ আইনের আওতায় দুপুর সাড়ে ১২টা হতে দুপুর ৩টা পর্যন্ত বাইরে কাজ করা নিষেধ করা হয়েছে।
এ আইনটি আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাস চলবে বলে জানা গেছে। এ আইনের ফলে খোলা জায়গায় প্রখর সূর্য তাপের নিচে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সকল প্রকার (বিশেষ জরুরি কাজ ছাড়া) কাজ করা বন্ধ রাখতে হবে এবং উক্ত সময়ে সকল শ্রমিককে তাদের বাসস্থান বা শীতল ছায়াযুক্ত জায়গায় থাকতে বলা হয়েছে।
এ আইন ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ফলে আরব আমিরাতের সাতটি প্রদেশ আবুধাবি, দুবাই, শারজাহ, আজমান, রাস আল খাইমা, ফুজিরা এবং উম্মে আল কুইন-এর সব জায়গায় দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত খোলা জায়গায় অথবা প্রচণ্ড সূর্যতাপের নিচে কোনো কোম্পানি বা ব্যক্তি বিশেষের কাজ করা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এই নিয়ম থেকে অত্যাবশ্যকীয় জরুরি কাজকর্ম যেগুলো না করলে জনগণের ক্ষতি হবে বা দেশের ক্ষতি হবে এমন কাজকর্ম এই আইনের বাইরে রাখা হয়েছে। মহামারির চিকিৎসা সেবা দুর্যোগ বিপদ, ক্ষতি বা দুর্ঘটনা প্রতিরোধের কাজ সমূহ, জরুরি কাজসমূহ যেমন, লাইন কাঁটা, পানি সরবরাহ, সুয়ারেজ, বিদ্যুত, ট্রাফিক কমানো বা বাড়ানো, রোড ব্লক অথবা গ্যাস বা পেট্রোলিয়াম সরবরাহ লাইন ঠিক রাখার কাজ সমূহ।
মধ্যাহ্ন বিরতির এই আইন ভঙ্গকারী বা অমান্যকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির বিরুদ্ধে বিভিন্ন পরিমাণের জরিমানাসহ নানা বিধান রাখা হয়েছে। এই আইন একবার অমান্যকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতি শ্রমিকের কাজ করার জন্য পাঁচ হাজার দিরহাম থেকে পঞ্চাশ হাজার দিরহাম পর্যন্ত তাৎক্ষণিক জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
এই আইন কার্যকরের ফলে আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশি হাজার হাজার শ্রমিকসহ নানা দেশের প্রবাসী শ্রমিকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এখানকার অধিকাংশ শ্রমবাজার বাংলাদেশি, ভারতীয়, পাকিস্তানী তথা এশীয়দের দখলে।
উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতে জুলাই-আগস্ট দুই মাস প্রচণ্ড গরম থাকে। এই দুই মাস স্কুল-কলেজসহ যাবতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। মধ্যাহ্ন বিরতির এই আইনকে শ্রদ্ধা করার জন্য এবং এই আইন মেনে চলার জন্য সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে, লেবার ক্যাম্পগুলিতে লিফলেট বিলি করে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়ে নানা নির্দেশনা দিয়েছে।
প্রতি বছরের মতো এই বছরেও এই আইন যথাযথভাবে কার্যকর ও তদারকি করার জন্য সকল ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা মধ্যাহ্ন বিরতির এ আইনকে স্বাগত জানিয়েছেন।
এমআরএম