মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের অপেক্ষায় মন্ত্রণালয়
মালয়েশিয়া শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে চূড়ান্ত বৈঠকের জন্য প্রস্তুত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে মালয়েশিয়া যেতে মন্ত্রী ইমরান আহমদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের জিও (সরকারি আদেশ) অনুমোদন করে রাখা হয়েছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর এটি অনুমোদন করা হয়।
মন্ত্রণালয় এবং হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে বেশ আন্তরিক মালয়েশিয়া। এ লক্ষ্যে সব ঠিকঠাক করেছে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। কোন পদ্ধতিতে কর্মী নেবে, অভিবাসন ব্যয় কত হবে, কতগুলো রিক্রুটিং এজেন্সি কাজ করতে পারবে, নিয়োগদাতাদের জবাবদিহিতা ইত্যাদি বিষয় চূড়ান্ত করতে মালয়েশিয়া সরকার প্রস্তুত বলে জানা গেছে।
এখন দু’দেশের বৈঠক হলেই শ্রমবাজার উন্মুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদনও সম্পন্ন হয়েছে বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
ওই কর্মকর্তা জানান, মন্ত্রণালয় সব কাজ সম্পন্ন করে রেখেছে। এখন মালয়েশিয়া থেকে দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলেই তারা যাবেন। মন্ত্রণালয় আশা করছে, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে অথবা আগামী মাসের প্রথম দিকে বৈঠক হতে পারে।
সরকারি আদেশের চিঠি অনুযায়ী প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। আরও রয়েছেন বিএমইটির মহাপরিচালক (বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের সচিব) সেলিম রেজা, অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, যুগ্ম সচিব ফজলুল করিম এবং উপ-সচিব মোহাম্মদ আবুল হোসাইন।
চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, ২৫-২৯ (সম্ভাব্য) তারিখের মধ্যে সফর করবেন মন্ত্রীসহ কর্মকর্তারা। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, কর্মী যাবে ওখানে (মালয়েশিয়া)। কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। তাদের কিছু প্রস্তাবনা বা চাহিদা থাকতে পারে। তারা কী চায়, সেটাই গুরুত্ব দেয়া হবে। একইসাথে দেশের স্বার্থ এবং কর্মীদের সুবিধা অগ্রাধিকার পাবে। আশা করছি এবার গেলে ভালো কিছুই হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর অনলাইন পদ্ধতি এসপিপিএ। এরপর সে সময়ের মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি ২৫ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়া গিয়ে বৈঠক করেও শ্রমবাজার চালু করতে পারেননি। এরপর ৩১ অক্টোবর ঢাকায় দু’দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে নতুন করে কর্মী নেয়ার কিছু পদ্ধতি ঠিক হয়।
চলতি বছরের ১৪ মে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ মালয়েশিয়া সফরে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তানশ্রি মুহিউদ্দিন ইয়াসিন ও মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলাসেগারানের সাথে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের অগ্রগতি হিসেবে ২৯ ও ৩০ মে মালয়েশিয়ায় দু’দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের আরেকটি বৈঠক হয়। কিন্তু সেখান থেকেও শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে কোনো রূপরেখা পাওয়া যায়নি।
৭ জুলাই মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুউদ্দিন বিন আব্দুল্লাহর বাংলাদেশ সফরের বৈঠক শেষে পরারাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, আগস্টেই খুলছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এরপর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়ায় যাবেন তিনি। এই সফরেই শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে আশাবাদী তিনি।
এমআরএম/এমকেএইচ