উন্নয়নের পথেই হাঁটছে বাংলাদেশ : মাহাথির
দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নের এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ এবং শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তুন ডা. মাহাথির মুহাম্মদ। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ডা. তুন মাহাথির মুহাম্মদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবঃ) তারেক আহমদ সিদ্দিকি সাক্ষাতকালে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।
২৭ মার্চ লাঙ্কাওই ইন্টারন্যাশনাল মালয়েশিয়া মেরিটাইম অ্যান্ড অ্যারোস্কেস এক্সিবিশনে সাক্ষাৎ করেন তিনি। বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সম্পর্কোন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উভয় দেশেই নতুন সরকার তাই সম্পর্কে নব উন্মেষ হবে এ প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তিনি স্মৃতিচারণ করেন। মাহাথির মুহাম্মদের সঙ্গে আলাপকালে নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবঃ) তারেক আহমদ সিদ্দিকি বলেন, বাংলাদেশের অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং হচ্ছে এমন সুযোগ দেবার জন্য মালয়েশিয়া সরকারের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোগান নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যথেষ্ট এগিয়ে রয়েছে। সে মোতাবেক বাংলাদেশ থেকে প্রযুক্তিতে অভিজ্ঞ ও দক্ষ লোক নিয়োগ করতে পারে মালয়েশিয়া। যেহেতু মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে সোর্স কান্ট্রি করে শ্রম নিয়োজন শুরু করেছে সেহেতু কর্মরতদের বৈধতা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য অনুরোধ করেন এবং নব নিয়োগের ক্ষেত্রে ও অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে ডা. মাহাথির মুহাম্মদ আশা প্রকাশ করে বলেন, নিয়ম-কানুন ও পলিসি মোতাবেক দ্রুত সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে আর সে পলিসি শ্রমনীতির নতুন পদ্ধতিতে যথা শিগগির বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের আশা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
সাক্ষাৎকালে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের নির্যাতিতরা বিপুল পরিমাণে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং বাংলাদেশ এ সব অসহায় লোকদের পাশে থেকে যে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তাতে সাধুবাদ জানান এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি রোহিঙ্গা সমস্যার আশু সুষ্ঠু সমাধান প্রত্যাশা করেন।
তিনি স্মরণ করেন যে, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক ক্ষতিগস্ত হয়। সেই অবস্থায় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দায়িত্ব নেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধতা পেয়েছে।
তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নের সঠিক পথে হাঁটছে। চীনের পরেই গার্মেন্ট শিল্পে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। বাংলাদেশ একটি ডিজিটাল দেশ, আগমী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ব্যবসা বাণিজ্যের সুপ্রসার ঘটলে দুই দেশই লাভবান হবে। প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে এ সময় মাহাথির মুহাম্মদ শিগিগর বাংলাদেশ সফরের আশ্বাস দেন এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।
সাক্ষাতকালে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল আবু মোজাফ্ফর মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব চৌধুরী, এবং দূতাবাসের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা এয়ার কমডোর মো. হুমায়ূন কবির সঙ্গে ছিলেন।
বিএ/এমআরএম/জেআইএম