প্রবাসী আলীর অনিশ্চিত জীবন

মো. মুখলেছুর রহমান (মুকুল)
মো. মুখলেছুর রহমান (মুকুল) মো. মুখলেছুর রহমান (মুকুল) , সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৬:২২ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০১৮

ইউরোপে আছেন এক যুগ ধরে। ২০১১ সালে গ্রিসে আসার পর ভালোই কাটছিল। কিন্তু সে দেশে অভিবাসীবিরোধী মনোভাব চাঙা হওয়ায় ২০১৫ সালে জার্মানিতে আশ্রয় নেন মোহাম্মদ আলী। বর্তমানে এক অনিশ্চিত সময় পার করছেন তিনি।

আলী জানান, জার্মানিতে আসার কারণ হচ্ছে দেশটিতে মুক্ত চিন্তা করা যায়। নিজেকে সাজানো যায়। ধর্মী দিক থেকে পরিপূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে এখানে। ইচ্ছেমতো কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এখানে তিন বছরের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা রয়েছে।

কিশোর বয়স থেকেই আলীর ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় ছিল অনীহা। নিয়মিত নামাজ না পড়ায় স্থানীয় কিছু লোকের রোষানলে পড়েন তিনি।

এছাড়া তাকে ছুরিকাঘাতও করে একদল উগ্রপন্থী। একটা সময় তার পরিবারও তার ওপর চাপ সৃষ্টি করে।

২০১১ সালে গ্রিসে পাড়ি জমান সিলেটের এই যুবক। গ্রিসে অবৈধভাবে থাকলে কোনো ধরনের সমস্যা ছিল না। কোনো একদিন এক পাকিস্তানি এক তরুণীকে ধর্ষণ করায় দেশটির নিয়ম-কানুন বদলে যায়। পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে থাকে। ফলে অবৈধ অভিবাসীদের ওপর চড়াও হয় গ্রিক সরকার। অনেকের সঙ্গে আলীও গ্রেফতার হন।

মাসখানেক জেল খাটার পর বের হয়ে আলী জার্মানির উদ্দেশে যাত্রা করেন। ২০১৫ সালের আগস্টে তিনি গ্রিস ত্যাগ করেন। এবং জার্মানির হাঙ্গেরি হয়ে মিউনিখে পৌঁছান।

‘পরে দেশটির রাইসহোফেনের একটি পর্বতের চূড়ায় ২৮ জন শরণার্থী থাকেন। সেখানেই আলী আশ্রয় গ্রহণ নেন। নাস্তিক পরিচয় প্রকাশ পাওয়ায় বাংলাদেশে থাকাটা তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এমনকি তার বন্ধু-বান্ধব তাকে এড়িয়ে চলতো।

আলীর ওপর বাংলাদেশেও হামলা হয়েছে আবার জার্মানিতেও অনেকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। এমনকি জার্মানি থেকে বের হলে গুমেরও হুমকি আসছে। এখানকার পুলিশকে এ ব্যাপারে জানিয়েছি। নিরাপত্তার বিষয় পুলিশ বিবেচনায় নিয়েছে।’

এ শরণার্থীর রাজনৈতিক আশ্রয় ইতোমধ্যে বাতিল হয়েছে। তবে তিনি আবার পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। এখন তিনি সরকারের অপেক্ষায়। পাশাপাশি তিন বছরের একটা কোর্স করছেন। এবং জার্মান ভাষা শিখছেন। হাউস বিল্ডিং করার চেষ্টা করছেন।

‘সম্প্রতি বিমানপথে কয়েক'শ বাংলাদেশি শরণার্থী ফেরত পাঠানো হয়। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি এখন শঙ্কিত। জার্মানদের সঙ্গে উঠা-বসার কারণে তাদের নিজের পরিবারে সদস্য মনে করি। জানি না কি হবে। যদি আমি বাংলাদেশে ফেরত যাই তাহলে আমার অবস্থা কি হবে বলতে পারছি না।’

ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন

সূত্র:ডিডাব্লিউ/এমআরএম/আরআইপি

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]