সৌদিতে নির্যাতিত সেই পারভীন দেশে আসছেন আজ

গৃহকর্মী ভিসায় সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার রেহেনা পারভীন দেশে আসছেন রোববার। আজ রাত ৮টায় বাংলাদেশে পৌঁছাবেন তিনি। রেহেনা পারভীনের ভাই রফিকুল ইসলাম জানান, আজ রাতে তার বোন দেশে ফিরে আসছেন।

কলেজপড়ুয়া মেয়ের পড়ালেখার খরচ যোগাতে এক বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান বাগেরহাটের রামপালের পারভীন। একটু ভালো থাকতে কে না চায়। মেডিকেলে কাজ পাওয়ার আশ্বাসে সৌদি পাড়ি জমান তিনি কিন্তু অবশেষে কাজ মেলে গৃহকর্মী হিসেবে।

যেদিন থেকে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ যোগ দেন সেদিন থেকেই শুরু হয় পারভীনের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। শত চেষ্টা করেও কিছুতেই কিছু সমাধানে আসা সম্ভব হয়নি। এদিক-ওদিক যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হন এ নারী।

প্রথম বাসাতে কিছুদিন কাজ করার পর নানা অত্যাচারের শিকার হন তিনি। পরে ওই বাসার মালিক পারভীনকে অন্য বাসায় বিক্রি করে দেন। দ্বিতীয় বাসাতেও শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। এত নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পারভীন আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু দেশে মেয়ের কথা চিন্তা করে পারভীন আত্মহত্যা করতে পারেনি।

পারভীনের কপালটাই খারাপ। তাকে আবার বিক্রি করে দেয়া হয় আরেক বাসায়। এক পারভীনকে সৌদি মালিক তিনবার বিক্রি করে। এ হাত ও হাত থেকে অসহায় পারভীন। নির্যাতন বাড়তেই থাকে। মালিকের ছেলে-মেয়ে, মালিক সবাই নির্যাতন করত।

পারভীন জানান, তার মোবাইল ছিল কিন্তু ব্যালেন্স থাকতো না। সুযোগ ছিল না মোবাইলে কার্ড কেনার। অন্য কোথাও যেন তিনি যোগাযোগ করতে না পারে সেজন্য তাকে টাকা তোলার সুযোগ দেয়া হতো না। শত কষ্ট করে পারভীন কোনো একদিন মোবাইলে টাকা তুলে এলোপাতাড়ি কিছু নম্বরে কল করতে থাকে।

তার আশা যদি কোনো বাংলাদেশির কাছে কল যায় তাহলে হয়তো বা তাকে উদ্ধার করবে। ভাগ্যে ভালো বলেই পারভীনের কল চলে যায় রিয়াদে বসবাসরত এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর কাছে। পারভীন ওই শিক্ষার্থীর কাছে বিষয়টা খুলে বলেন।

বিষয়টি নিয়ে জাগো নিউজে ধারাবাহিক অনুসন্ধানী রিপোর্ট করায় বিষয়টা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এর ফলে মুক্তি মেলে পারভীনের।

জাগো নিউজের সৌদি আরব প্রতিনিধি আব্দুল হালিম নিহন ও বন্ধু আরাফাত সৌদির বিমানবন্দরে শেষ সাক্ষাৎ করেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন পারভীন। জাগো নিউজকে ধন্যবাদ জানান রেহেনা পারভীন।

এমআরএম/বিএ/আরআইপি

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]