রাখাইন ‘জাতিগত নিধন’ বন্ধে মালয়েশিয়ায় রোহিঙ্গাদের মানববন্ধন

আহমাদুল কবির
আহমাদুল কবির আহমাদুল কবির , মালয়েশিয়া প্রতিনিধি মালয়েশিয়া
প্রকাশিত: ০৮:৩৯ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মিয়ানমারের রাখাইন ‘জাতিগত নিধন’ বন্ধের দাবিতে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত রোহিঙ্গারা মানববন্ধন করেছে। রোহিঙ্গা ইউথ ডেভেলপমেন্ট ও রোহিঙ্গা ফুটবল ক্লাবের উদ্যোগে এ মানববন্ধন করা হয়।

রোববার বিকেল সাড়ে চারটায় কুয়ালালামপুর কাম্পুংবারুতে শতাধিক রোহিঙ্গারা এ মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে রোহিঙ্গা ইউথ ডেভেলপমেন্টের সভাপতি মো. ফারুক বলেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। আমাদের মা-বাবা, ভাই-বোন ও শিশুদের নির্বিচারে মেরে ফেলছে। বিশ্ব মানবতা আজ কোথায়?

2017August

ফারুক বলেন, আল্লাহর সৃষ্টি আশরাফুল মাখলুকাতের চেয়ে পশুর মূল্য আছে। মানব জাতির কোনো মূল্য নেই এ পৃথিবীতে। রোহিঙ্গা মুসলিমরা কী-অপরাধ করেছে যে নিজ দেশ থেকে মিয়ানমার সরকার বিতাড়িত করছে। আমরা এর পরিত্রাণ চাই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বিপদের সময়ে বাংলাদেশ ৬০ হাজার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে চির কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশের পাশাপাশি সারাবিশ্বের বিবেকবানদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। মানববন্ধন শেষে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন তারা।

রোহিঙ্গা ফুটবল ক্লাবের সভাপতি দিলদার বলেন, আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। আর কিছুই রইল না। মা-বা আত্মীয় স্বজন কে কোথায় আছে জানি না। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সমস্যা সমাধানে বিশ্বমানবতাকে সক্রিয় ভূমিকার রাখার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

2017August

আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো বলছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনের চেষ্টা চালাচ্ছে। গত সপ্তাহে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৭৩ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়েছে।

১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর পর গত এক সপ্তাহে ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৭০ জন ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী’, ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, দুজন সরকারি কর্মকর্তা এবং ১৪ জন সাধারণ নাগরিক। তবে সহিংসতা শুরুর পর গত কয়েকদিনে নাফ নদী থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে শতাধিক মরদেহ ভেসে আসার কথা জানিয়েছে স্থানীয়রা।

এদিকে নির্যাতিত সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা ইস্যুতে মালয়েশিয়ার আলোচনা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার। দেশটির নোবেল বিজয়ী নেত্রী অং সান সুচি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দ্বি-পাক্ষিক যেকোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি কোনো ধরনের আলোচনায় আগ্রহী নন।

উল্লেখ্য,গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা ছাউনিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক সহিংসতা চালায়।

এমআরএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]