মালয়েশিয়ার ৬০তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত
মালয়েশিয়ার ৬০তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কুয়ালালামপুর ও শহরে ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। শহরে সকাল থেকে মানুষের ঢল নেমেছে। ‘নেগারাকু সেহাতি সেজওয়া’ পরিচালিত মডারডে স্কোয়ারে স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় এ দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি শুরু হয়।
মালয়েশিয়ার ইতিহাসে আজ গৌরবের দিন। ১৯৫৭ সালের ৩১ আগস্ট ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে দেশটি। এর আগে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান এত জাঁকজমকভাবেপূর্ণ করেনি সরকার। তবে পুরো মালয়েশিয়ার সাজ সজ্জায় বলে দেয় এবার অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় ভিন্ন আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান।
মালয়েশিয়ার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
মালয়েশিয়ার ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা গেছে, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়াই সর্বপ্রথম ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের যাত্রা তখন থেকেই। এরপর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মালয়েশিয়া সফরে গেলে দু’দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হয়।
আজ থেকে ৪০ হাজার বছর আগেও মালয় অঞ্চলে মানুষের বসবাসের নিদর্শন পাওয়া গেছে। অতীতে এ অঞ্চলে হিন্দু-বৌদ্ধ শাসকদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৩ শতকে এই উপদ্বীপে ইসলামের আগমন ঘটে। ১৫ শতকে মালাক্কান সালতানাত প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থনৈতিক কারণে মধ্য এশিয়া, ভারত ও আরবদের সঙ্গে মালয়ের সংযোগ স্থাপিত হয়।
গত ৩ দশকে মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতি লাভ করে। যার জন্যে পুরো বিশ্ব ১৯৮১ সাল থেকে ২০০৩ পর্যন্ত নেতৃত্বদানকারী মাহাথির মোহাম্মদকে একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আজও তার দেয়া ‘ভিশন ২০২০’ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে মালয়েশিয়া।
১৯৭০ সালেও মালয়েশিয়ার অধিকাংশ নাগরিক দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত। ১৯৭১ সালে নতুন অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করে মালয়েশিয়া। সেই পরিকল্পনা অনুসারে ১৯৯০ সালের মধ্যে মালয়েশিয়াতে দারিদ্র্যের হার বিস্ময়করভাবে কমে আসে।
‘মালয়’ মালয়েশিয়ার সরকারি ভাষা। এখানে ইংরেজী সার্বজনীন ভাষা বা লিঙ্গুয়া ফ্রাংকা হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। দেশটিতে আরও প্রায় ১৩০টি ভাষা প্রচলিত আছে। এদের মধ্যে চীনা ভাষার বিভিন্ন উপভাষা, বুগিনীয়, দায়াক, জাভানীয় এবং তামিল ভাষা উল্লেখযোগ্য।
মালয়েশিয়ার ১৩টি রাজ্য (নেগেরি) হল জোহর, কেদাহ, কেলান্তান, মেলাকা, নেগেরি সেমবিলান, পাহাং, পেরাক, পারলিস, পুলাউ, পেনাং, সাবাহ, সারাওয়াক, সেলাঙ্গর এবং তেরেঙ্গানু। আর ৩টি এলাকা কুয়ালামলামপুর, লাবুয়ান ও পুত্রাজায়া শহরসহ একটি ফেডারেল টেরিটরি (ওয়িলাইয়াহ পেরসেকুতুয়ান)।
মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম। তবে বৌদ্ধ, তাও, হিন্দু, শিখ, খ্রীস্টান এবং অন্যান্য উপজাতীয় ও সংখ্যালঘু ধর্ম স্বাধীনভাবে পালিত হয়। এখানে মালয় ও আদিবাসী মিলে রয়েছে সর্বমোট জনসংখ্যার ৬০ ভাগ। এছাড়া চীনা ২৮ ভাগ, ভারতীয় ৮ ভাগ এবং অন্যান্য নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ৪ ভাগ।
এমআরএম/আইআই