বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশিদের পাশে সরকারকে চান মালয়েশিয়া প্রবাসীরা
মালয়েশিয়ায় ধরপাকড় অভিযানে অসহায় অবস্থার মধ্যে রয়েছেন হাজার হাজার বাংলাদেশি। বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কমিউনিটি নেতারা। তারা বলছেন, বিপদগ্রস্থ বাংলাদেশিদের পাশে সবার আগে বাংলাদেশ সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে।
মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলছেন, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান এবং লাখ লাখ বাংলাদেশি কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে আধুনিক মালয়েশিয়া। দেশটিতে চলমান সঙ্কটে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কারো বসে থাকার সুযোগ নেই।
ইতোমধ্যে গত এক সপ্তাহের সহস্রাধিক বাংলাদেশি গ্রেফতার হয়েছেন এবং হাজার হাজার বাংলাদেশি যেকোনো মুহূর্তে গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যত দ্রুত সম্ভব সক্রিয় ভূমিকা রেখে বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশিদের দুর্দশা লাঘব এখনো সম্ভব বলে মনে তারা। এ ছাড়া গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশিদের মুক্তি এবং কাগজপত্রহীন সকল বাংলাদেশিদের সহজ শর্তে বৈধ করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কমিউনিটি নেতারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ কাই কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, মালয়েশিয়ায় যে সকল কর্মী এখন দুরবস্থায় পড়েছেন তাদের অধিকাংশই মালয়েশিয়ান নিয়ম-কানুন জানেন না। এমনকি নিজের পাসপোর্ট সম্পর্কেও জানে না। তারা শুধুমাত্র বাংলাদেশের ও মালয়েশিয়ান এজেন্টককে জানেন।
তিনি আরও বলেন, ওই সকল এজেন্টরা তাদের খোঁজ রাখেনি। ফলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হয়ে শেষে দূতাবাসে আসেন। কিন্তু যখন আসেন তখন আর কিছুই করার থাকে না। তিন্তু তখন দূতাবাসের দোষ হয়। এর পরও প্রবাসীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে দূতাবাস কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় ছয় লাখ। এর মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় অর্ধেক। দেশটির বর্তমান সরকার এসব অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ করার জন্য পাঁচ মাস সময় দিলেও তিন লাখ বাংলাদেশির মধ্যে মাত্র ৮৮ হাজার বৈধ হওয়ার নিবন্ধন করেছেন।
অন্যদিকে বাকি অবৈধ বাংলাদেশি প্রবাসীরা তাদের নাম নিবন্ধন করতে পারেননি মূলত নিয়োগকারীদের গাফিলতির কারণে। নিয়োগদাতারা সময় মতো তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য ই-কার্ডের আবেদন না করায় প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক মালয়েশিয়ায় থাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুন ছিল ই-কার্ড দেয়ার শেষ দিন। ওইদিন পর্যন্ত মাত্র ২৩ শতাংশ শ্রমিক ই-কার্ড পেয়েছেন। বাকি ৭৭ শতাংশ অবৈধ শ্রমিক এখনও অবৈধ রয়েছেন।
আরএস/জেআইএম