বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল তানিমার


প্রকাশিত: ০৫:০১ এএম, ১৫ জুন ২০১৭

লন্ডনের ২৪ তলা গ্রেনফেল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন উদ্ধারকর্মীরা। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে দেশটিতে বাংলাদেশি এক পরিবারের খোঁজ মিলছে না। নিখোঁজ ওই পরিবারটি টাওয়ারটির একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন।

জানা গেছে, নিখোঁজ ওই পরিবারের সবাই বাংলাদেশের মৌলভীবাজারের বাসিন্দা। ফ্ল্যাটটিতে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন কমরু মিয়া। পশ্চিম লন্ডনের বহুতল ওই ভবনে দেড়শ’র মতো আবাসিক ফ্ল্যাটের ১৪২ নম্বরে থাকতেন তারা। মেয়ে তানিমার (হাসনা বেগম তানিমা) আগামী ২৯ জুলাই বিয়ের দিন ঠিক ছিল।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের পর দমকল কর্মীরা ৬৫ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভবনটিতে অনেকে আটকে ছিলেন। বাঁচার জন্য কেউ কেউ জানালা দিয়ে লাফিয়ে নিচে পড়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশি এই পরিবারের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা জানা যায়নি।

কমরু মিয়ার ভাতিজা যুক্তরাজ্যের চেলসির বাসিন্দা আবদুর রহিম গতকাল বুধবার সংবাদমাধ্যমকে জানান, আগুন লাগার পর রাতে চাচাতো বোনের (হাসনা বেগম তানিমা) সঙ্গে টেলিফোনে তার কথা হয়েছে। তখন তিনি বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিলেন।

তিনি আরও জানান, আগামী ২৯ জুলাই তানিমার বিয়ের দিন ঠিক ছিল। আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতিও ছিল। বিয়ের পর বাংলাদেশেও যাওয়ার কথা ছিল তাদের। ব্রিটিশ যুবক লেস্টারের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করা ছিল।

ইউকে বাংলা প্রেসক্লাবের সহকারী সাধারণ সম্পাদক মুনজের অাহমদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘মায়াভরা হাসিমুখের বোনটির নাম হোসনা বেগম (২২)। ডাক নাম তানিমা। মা-বাবার পছন্দেই ২৯ জুলাই বিয়ের দিন ঠিক ছিল। মৌলভীবাজারে পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানলাম, হোসনার শাড়িসহ বিয়ের সব কেনাকাটাও সম্পন্ন ছিল। বিয়ের হল বুকিংসহ সব কিছু রোজার অাগেই শেষ হয়েছে।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘না, বোনটির অার বিয়ের পিঁড়িতে বসা হবে না। লন্ডনে পুড়ে যাওয়া ভবনটির ১৭তলার ১৪২ নম্বর ফ্ল্যাটে বাবা কমরু মিয়াসহ মা অার ভাইয়ের সাথেই বসবাস করতেন তিনি। বৃহস্পতিবার ভোরে লন্ডনের গ্রীনফেল টাওয়ারের লেলিহান বিভীষিকাময় অাগুন হতভাগ্য বাসিন্দাদের মতো পুড়িয়ে দিয়েছে হোসনার সব স্বপ্নও। সেহরি অার ফজরের নামাজের পর ধেয়ে অাসা যন্ত্রণায় দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর দুয়ারে অাত্মসমর্পণ করা ছাড়া অার কোনো পথও ছিল না তাদের।’

আরএস/পিআর

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]