দুই বছরে মালয়েশিয়ার বন্দি শিবিরে ১৪ বাংলাদেশির মৃত্যু
প্রবাসে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন অসংখ্য বাংলাদেশি শ্রমিক। দালালেরা যে স্বপ্ন দেখায় তা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবে দেখা যায় না। বরং বিদেশ-বিভূঁইয়ে কাটাতে হয় অসীম কষ্টের জীবন। জানা বা অজানাভাবে আইন ভেঙে বিদেশের কারাগারে বন্দি জীবন কাটান অনেকে।
এর মধ্যে ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুইবছরে বন্দিশালায় থেকে কমপক্ষে ১৪ বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ দুই বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের ডিটেনশন ক্যাম্পে ১৬১ জন আটক বন্দি অভিবাসীর মৃত্যু হয়।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে,যক্ষ্মা, এইচআইভিসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে এসব অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। দেশটির লংকা (৪০),বকিত জলিল (৩১) এবং লেংগেগ (২৪) এলাকায় অবস্থিত বন্দি শিবিরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
এর মধ্যে মায়ানমারের ৭৩, ইন্দোনেশিয়ার ২৩ এবং বাংলাদেশের ১৪ জন নাগরিক রয়েছেন।
সূত্রমতে, বর্তমানে ৩৮টি দেশের কারাগারে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক বন্দি আছে।
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন,ওই সব দেশের আইন যদি আমাদের বাংলাদেশি শ্রমিক না মানে তাহলে তো তাদের কারাগারে যেতেই হবে। আমরা যাওয়ার সময়ই বলে দিই-তারা যেনো ওই দেশের আইন মেনে চলেন।
এদিকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি ও বেতনের বদলে বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির সহযোগিতায় শ্রমিকদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করাচ্ছে বিদেশিরা।
তাই এ ধরনের কাজ করতে গিয়ে ঘটছে প্রতিদিন অসংখ্য দুর্ঘটনা। অথচ শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ মানতে নারাজ বাংলাদেশের অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা)সভাপতি বেনজীর আহমদ।
প্রবাসী শ্রমিকদের অভিযোগ,সহযোগিতা তো দূরের কথা,বিপদেও পাশে পাওয়া যায় না বাংলাদেশি দুতাবাসগুলোকে। এছাড়া সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত ১০ বছরে অন্তত বিদেশের মাটিতে ২০ হাজার শ্রমিক মারা গেছে। অথচ তাদের মরদেহ দেশে আনার ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্টদের পর্যাপ্ত সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেছেন প্রবাসী শ্রমিকরা।
এমএমএ/এমএস