বাংলাদেশের পথশিশুদের সহযোগিতার জন্য সহায়তা চান পর্তুগিজ মারিয়া


প্রকাশিত: ০৯:৩২ পিএম, ০৫ এপ্রিল ২০১৭

বাংলাদেশের পথশিশুদের জন্য অর্থের যোগান দিতে দ্রুততম নারী হিসেবে ‌‌‘পথশিশুদের মা’ পর্তুগালের মারিয়ার অায়রনম্যান খেতাব জয় করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পোর্ট এলিজাবেথে সম্প্রতি মারিয়া ৩.৮ কি.মি. সাঁতরে, ১৮০ কি.মি. বাইক চালিয়ে এবং ৪২ কি.মি. দৌড়ে দ্রুততম নারীর খেতাব জিতেছেন। বাংলাদেশের পথশিশুদের জন্য অর্থের যোগান দিতে চলতি বছর অস্ট্রেলিয়া, স্পেন ও তাইওয়ানে অারও তিনটি প্রতিযোগিতায় অাংশগ্রহণ করবেন পর্তুগিজ মারিয়া।

বাংলাদেশের পথশিশুদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা ছাড়াও ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত  প্রায় সাড়ে ছয়শ পথশিশুকে তার প্রতিষ্ঠিত মারিয়া ক্রিস্টিনা ফাউন্ডেশনের প্রতিযোগিতায় বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে দেশসেরা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশোনা করার ব্যবস্থা করেছেন।

মারিয়া জানান, পথশিশু শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও খাওয়া, বাসস্থানের পেছনে জনপ্রতি তার বাৎসরিক খরচ করতে হয় প্রায় এক হাজার ইউরো। বর্তমানে তার ফাউন্ডেশন থেকে ১২৭ জন শিক্ষার্থী ক্যামব্রিয়ান স্কুল ও কলেজ শাখায় বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করছে। কিন্তু তার একার পক্ষে এতগুলো অর্থের যোগান দেয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ করে অাসলেও পর্তুগালের বাংলাদেশ কমিউনিটি পর্যন্ত মারিয়ার পাশে দাঁড়ায়নি, দু’একটি অাঞ্চলিক প্রতিষ্ঠান মিলে একটি সংবর্ধনা প্রদান করলেও মারিয়া ফাউন্ডেশনের বাচ্চাদের স্কুলের টাকা যোগাতে সবার কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পর্তুগালের বাংলাদেশি কমিউনিটির কেউ এগিয়ে অাসেনি। যদিও ইউরোপে পর্তুগালই হয় বাংলাদেশি অভিবাসীদের শেষ অাশ্রয়স্থল। কিন্তু পর্তুগালের মেয়ে মারিয়ার প্রতি সহানুভূতি দেখাতে ব্যর্থ এখানকার বিভাজিত কমিউনিটি।
ppবারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে মারিয়া হতাশা প্রকাশ করে বলেন, পর্তুগালের বাংলাদেশি কমিউনিটি ও বাংলাদেশ থেকে যদি কেউ এগিয়ে না অাসেন তাহলে ২০১৭ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশে তার মারিয়া ক্রিস্টিনা ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে না। পথশিশুদের পড়াশোনা, খাদ্য, বাসস্থানের ব্যবস্থা করা তার একার পক্ষে অার টেনে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতের এয়ারলাইনসে বিমানবালা হিসেবে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশের চরম দারিদ্র্যের অবস্থা দেখেন মারিয়া। এরপরই মারিয়া কনসেই ২০০৫ সালে মারিয়া ক্রিস্টিনা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। চাকরির সুবাদে ২০০৩ সালে মারিয়া প্রথম বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশে দরিদ্রদের অবস্থা দেখে তিনি তাদের সাহায্য করার জন্য মনস্থির করেন। এরপরই ২০০৫ সালের জুলাইয়ে পরিবার, সহকর্মী এবং বন্ধুদের সহায়তায় মারিয়া বাংলাদেশের দরিদ্র পরিবারকে সাহায্য করার জন্য একটি দাতব্য প্রকল্প শুরু করেন। এক কক্ষের একটি স্কুল দিয়ে তার ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়।

মারিয়া ২০০৫ সাল থেকে মানবিক প্রকল্পের মাধ্যমে শিশুদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদানের ওপর মনোযোগ দেন। কারণ তিনি মনে করেন এভাবে দারিদ্র্যের চক্র ভাঙা সম্ভব হবে। এবং সেলক্ষ্যে মারিয়া বাংলাদেশের পথশিশুদের জন্য অর্থ যোগান দিতে তার চাকরিরত প্রতিষ্ঠান এমিরেটস থেকে প্রাপ্ত সব অর্থ ব্যয় করেন।
pppবাংলাদেশের পথশিশুদের জন্য অর্থের যোগান দিতে নিজের চাকরির ফাঁকে ফাঁকে মারিয়া ২০০৯ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অাসছেন। এরই ধারাবাহিতায় ২০০৯ সালে ১০ দিনে ৭টি ম্যারাথন, ২০১৩ সালে প্রথম পর্তুগিজ নারী হিসেবে এভারেস্ট জয়, ২০১৪ সালে ছয় সপ্তাহে সাতটি অাল্ট্রা ম্যারাথন, ২০১৬ সালে শীতল পানির দীর্ঘ ব্রিটিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়াসহ ২০১৭ সালে অায়রনম্যান প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে দ্রুততম নারীর খেতাব জয় করেন।

এ পর্যন্ত ছয়টি গিনেসবুক রেকর্ডস নিজের দখলে নিয়েছেন মারিয়া কনসেইসাও। এছাড়াও (২০০৯ থেকে ২০১৭) এ সময়ের মধ্যে ৭৭৭টি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছেন। এসব কম্পিটিশনের মূলে ছিল বাংলাদেশের পথশিশুদের খাদ্য, বাসস্থান ও শিক্ষার অর্থের জোগান দেয়া।

পর্তুগালের সিনত্রা শহরে জন্ম নেয়া মানবী মারিয়ার এই মানবহিতৈষী উদ্যোগের সঙ্গী হতে চাইলে পথশিশুদের শিক্ষার অর্থের যোগান দিতে মারিয়াকে সহযোগিতায় এগিয়ে অাসতে পারেন যে কেউ। অাগ্রহী থাকলে যোগাযোগ করতে পারেন।

Portugal - CGD bank.
IBAN: PT50 0035 0229 00019178 930 10
BIC: CGDIPTPL

Bangladesh - Cambrian College
Jamuna Bank Ltd, Gulshan branch
A/c no: 00100320000288
Swift code: JAMUBDDH043

UK - Maria Cristina Foundation
CAF Bank Ltd
A/c no: 00026754
Sort code: 40-52-40
IBAN: GB67CAFB40524000026754
Swift code: CAFBGB21XXX

Online donation

http://mariacristinafoundation.org/help/ways-to-help/donate

বিএ

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]