নতুন শ্রম আইনে কাতারে বিপাকে হাজারো বাংলাদেশি


প্রকাশিত: ০৩:৫৯ এএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আউটসোর্সিং কোম্পানির মাধ্যমে বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার কাতারে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক। দেশটির নতুন আইনের কারণে অভিবাসী শ্রমিকরা কোম্পানি পরিবর্তনে জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন। কোম্পানি পরিবর্তন করে যেখানে খুশি সেখানে কাজ করতে পারছেন না তারা। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে নতুন শ্রম আইন কার্যকর করায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে হাজার হাজার শ্রমিক রয়েছেন নতুন শঙ্কায়।  

জনশক্তি রফতানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ আইন করার কারণে নিয়োগদাতা কোম্পানির অনুমতি ছাড়া কোনো শ্রমিক অন্য কোথাও কাজ করতে পারছে না। এটিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে ৫০ হাজার কাতার রিয়াল জরিমানা ও তিন বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখার কারণে শ্রমিকরা এখন আর কাতারে আগ্রহী নাও হতে পারেন।

এক বছর আগে কাতারে আল-মানার কোম্পানির কর্মী হয়ে দেশটিতে গেছেন চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জের রাজিবুল ইসলাম। আউটসোর্সিং কোম্পানি কাতারে নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। দীর্ঘ ৬ মাস ধরে কোনো কাজ না পেয়ে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরেন তিনি।

রাজিবুল জানান, কাতারে গিয়ে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তিনি যে কোম্পানির মাধ্যমে গেছেন সেটি আসলে একটি আউটসোর্সিং কোম্পানি।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) সূত্র মতে, চলতি বছর এ পর্যন্ত ৯ হাজার ৩৮২ জন শ্রমিক কাতারে গেছেন। ২০১৬   সালে বাংলাদেশ থেকে কাতারে শ্রমিক পাঠানো হয় মোট ১ লাখ ২০ হাজার ৩৮২ জন। অার ২০১৫ সালে ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৬৫ জন পাঠানো হয়েছিল।
    
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যানাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ-বায়রা’র সভাপতি সাবেক সাংসদ বেনজির আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, এ আইন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনো প্রকাশ করেনি কাতার সরকার। যতটুকু জেনেছি কাতারের নতুন শ্রম আইনে প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়োগকর্তার প্রথম চুক্তিকেই বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এতে মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দেশটিতে থাকা শ্রমিক হয়রানির শিকার হবেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়বেন বাংলাদেশ থেকে যাওয়া শ্রমিকরা। কারণ কাতারগামী শ্রমিকদের একটি বড় অংশ আউটসোর্সিং কোম্পানির মাধ্যমে দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছেন।

উল্লেখ্য, আউটসোর্সিং কোম্পানির মাধ্যমে শ্রমিকদের বিদেশে নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে পরিচিতজনরা তাদের চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। এই ধরনের উপায়কে অনেকে ফ্রি ভিসা বলে থাকেন।

আরএম/জেডএ/আরআইপি

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]