মালয়েশিয়ায় অস্থায়ী কাজের সুযোগ পাচ্ছেন অবৈধ শ্রমিকরা


প্রকাশিত: ০৯:৩৬ এএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মালয়েশিয়ায় আবারও অবৈধ শ্রমিকদের অস্থায়ী কাজের পারমিটের নিবন্ধন ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে। তবে এ নিবন্ধন সম্পূর্ণ ভিন্ন। ই-কার্ডের মাধ্যমে দেশটিতে বসবাসকারী অবৈধ শ্রমিকরা বৈধ ও অস্থায়ী কাজের সুযোগ পাবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, দেশটিতে যারা স্টুডেন্ট ভিসা, নৌ-পথে আসা, টুরিস্ট ভিসা এবং রেগুলার শ্রমিক ভিসায় এসে যারা এখন অবৈধ হয়ে বসবাস করছেন তাদের জন্যই এ পদেক্ষপ নেয়া হয়েছে। অবৈধ শ্রমিকদের এ নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হবে চলতি বছরের ৩০ জুন। ৪ মাসের এই প্রক্রিয়ায় অনেকেই বৈধ হতে পারবেন।

এ ছাড়া যাদের পাসপোর্ট বা অন্য ট্রাভেল ডকুমেন্ট রয়েছে কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষ অথবা পাসপোর্ট, ট্রাভেল ডকুমেন্ট কিছু নেই তারা পাসপোর্ট বানাতে পারবেন। যাদের কোনো প্রকার ডকুমেন্ট নেই তারা এই ই-কার্ডের জন্য কোম্পানির মালিকের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। ফিঙ্গার প্রিন্টের সময় কোম্পানির মালিকের ফিঙ্গার প্রিন্ট নিবে মালেয়েশিয়া ইমিগ্রেশন বিভাগ।

Malaysia

ওই সূত্র বলছে, নীল ও লাল রঙয়ের দু’ধরনের ই-কার্ড দেয়া হবে ৩ মাসের জন্য। যাদের পাসপোর্ট আছে তারা প্রথমেই নীল রঙয়ের পাবেন। এই নীল কার্ড যারা পাবেন তারা কোম্পানির মাধ্যমে ক্যাটাগরি অনুযায়ী লেভি দিয়ে রিহায়ারিং প্রসেসের মাধ্যমে ভিসাও পেয়ে যাবেন। এছাড়া যাদের পাসপোর্ট নেই তাদেরকে প্রথমে লাল কার্ড দেয়া হবে। যদি ৩ মাসের মাধ্যমে নতুন পাসপোর্ট করে কোম্পানির মালিকের মাধ্যমে লেভি দিয়ে জমা দেন; তাহলে তারা নীল কার্ড পাবেন এবং বৈধ হতে পারবেন।

মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতুক সেরি মুস্তাফার আলী বলেন, মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন সেক্টরে শ্রমিকদের ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে মালয়েশিয়া সরকার ই-কার্ডের মাধ্যমে বৈধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে পেনিনসুলা এবং স্টেট ইমিগ্র্যাশন অফিসে এ কার্যক্রম শুরু হবে।

মুস্তাফার আলী বলেন, ই-কার্ড নিবন্ধন সম্পূর্ণ ফ্রি (বিনামূল্যে) এবং ই-কার্ডের মেয়াদ হবে এক বছর। শুধুমাত্র পাঁচটি খাতের জন্য ই-কার্ডের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। খাতগুলো হলো- প্লান্টেশন, এগ্রিকালচার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল, কনস্ট্রাকশন এবং সার্ভিস সেক্টর। নিয়োগকর্তারা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন।

তিনি বলেন, ৩০ জুনের পর ই-কার্ড নিবন্ধনের জন্য আর কোনো সুযোগ দেয়া হবে না। ই-কার্ডের মেয়াদ এক বছর এবং এই এক বছরের মধ্যে নিয়োগকর্তাকে শ্রমিকদের মাধ্যমে নিজ নিজ হাইকমিশন থেকে পাসপোর্ট এবং অন্যান্য পার্মিট করাতে হবে।

মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন বিভাগের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ই-কার্ড প্রোগ্রামের মাধ্যমে ৪ থেকে ৬ লাখ অবৈধ বিদেশি শ্রমিক নিবন্ধন করবে বলে আমাদের ধারণা। আর অবৈধ বিদেশি শ্রমিকদের অস্থায়ী কাজের পারমিটের ই-কার্ডের বয়সসীমা ৪৫ থেকে ৫৫ বছর পর্যন্ত।

Malaysia

এদিকে, মালয়েশিয়ার এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন নির্বাহী পরিচালক সামসুদ্দিন বরদান বলেন, অবৈধ শ্রমিকদের অস্থায়ী কাজের জন্য ই-কার্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং বিদেশিদের হারানো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং পাসপোর্ট এর সমস্যা কমবে।

এ বিষয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম শাখার কাউন্সিলর মো. সায়েদুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘গত ১৫ জানুয়ারি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোনে আলাপের পরিপ্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া সরকার বিদেশি কর্মীদের জন্য সাময়িক ওয়ার্ক পারমিট ইস্যুর ঘোষণা দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এর ফলে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রায় তিন লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী সেদেশেই কাজের সুযোগ পাবে। তা না হলে বাংলাদেশি কর্মীদের দেশে ফিরে আসতে হতো।’

এসআইএস/আরআইপি

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]