মালয়েশিয়ায় গ্লোবাল সামিটে প্রবাসীদের মিলনমেলা


প্রকাশিত: ০৩:০০ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৬

মালয়েশিয়ায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘গ্লোবাল সামিট’। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় কুয়ালালামপুরের বার্জায়া টাইম স্কয়ারে দুই দিনব্যাপী এ সামিট শুরু হয়।

বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশিদের মেলা বসেছে এ সম্মেলনে। অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সামিটে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পেশাজীবী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশের সিনিয়র সাংবাদিকদের একটি দলও অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছে।
 
কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়ানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আগামীকাল হবে এগিয়ে যাওয়ার দিন। আমার বুক ফুলে যায় যখন দেখি বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়াকে অপার সম্ভাবনাময় দেশ উল্লেখ করে প্রবাসীদের মূলধারার দিকে দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার জয়নাল আবেদিন ও সেক্রেটারি কাজী এনায়েত উল্লাহ বক্তব্য রাখেন। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রবাসীদের সামনে রেখে আমরা বিদেশে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সব স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারবো। বাংলাদেশের সিনিয়র সাংবাদিক আবেদ খান বলেন এমন আয়োজন অবিশ্বাস্য।

যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, প্রবাসীরা যে যেখানে আছেন এগিয়ে যান। আমরা আমাদের সবধরনের সহযোগিতার দুয়ার খুলে রেখেছি। কোনোভাবেই বাংলাদেশ যেন পিছিয়ে না থাকে। মনজুরুল আহসান বুলবুল তার বক্তব্যে প্রবাসীদের বাংলাদেশ ও বাংলাভাষা নিয়ে ভাবার আহ্বান জানান।

সিনিয়র সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান বলেন, এতো বড় একটি সম্মেলনে আমি উপস্থিত থাকতে পেরে অনেক সম্মানবোধ করছি। আমি সম্মানবোধ করছি এজন্য যে, এখানে একাডেমিক, প্রকৌশলী, উচ্চপদস্থ গণমাধ্যমব্যক্তিত্ব ও অন্যান্য নেতার সামনে কথা বলতে পারছি। আজকের এই অনুষ্ঠানটি একটি সফলতার ইঙ্গিত। প্রবাসে আপনারা প্রকৃত রাষ্ট্রদূত কেননা দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে প্রবাসে বাংলাদেশের মুখও উজ্জ্বল করছেন।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও আহমেদ জুবায়ের, বাংলা ভিশনের হেড অব নিউজ মোস্তফা ফিরোজ দিপু ও মাহমুদ হাফিজ, আয়েবা প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী ড. জাইনুল আবেদীন, সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত উল্লাহ, মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুল, বিজিএমইএর সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসী কমিউনিটি নেতারা।

প্রথম দিন উদ্বোধনী সেশনের পর শুরু হয় বিশেষায়িত কর্মশালা। এতে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসীরা বাংলাদেশিদের সম্ভাবনা ও করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন।

Malasia

প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করবে মিডিয়া :
প্রবাসীদের কল্যাণে সংবাদকর্মীদের আরো সচেতন হওয়ার তাগিদ দেন বাংলাদেশের সিনিয়র সাংবাদিকরা। প্রথম দিনের শেষ অধিবেশনে আয়োজিত বিশেষ টক শোতে তারা এ তাগিদ দেন। সিনিয়র সাংবাদিকরা বলেন, পাঠকের কাছে খবর পৌঁছে দিলেই মিডিয়ার দায়-দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। সমাজ কাঠামোতেও মিডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। প্রবাসীদের কল্যাণে বাংলাদেশের মিডিয়া সদা সচেষ্ট থাকবে বলেও টক শোতে প্রতিশ্রুতি দেন বক্তারা।  

এতে অংশ নেন সংবাদ প্রতিদিন সম্পাদক আবেদ খান, একুশে টেলিভিশনের সিইও মনজুরুল আহসান বুলবুল, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, সময় টেলিভিশনের আহমেদ জোবায়ের, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বিবিসি বাংলা বিভাগের প্রধান সাবির মোস্তফা, বাংলানিউজের কনট্রিবিউটিং এডিটর মাহমুদ হাফিজ, পূর্ব-পশ্চিমবিডি.কম সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান প্রমুখ। বক্তব্য শেষে তারা বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রশ্নের জবাব দেন।

অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন এ সামিটের আয়োজক। চার বছর বয়সী সংগঠনটির উদ্যোগে এটি প্রথম সামিট। অ্যাসোসিয়েশন চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার জয়নাল আবেদিন ও সেক্রেটারি কাজী এনায়েত উল্লাহ। সামিটের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন মাঈনুল ইসলাম নাসিম।

মধ্যাহ্নভোজের পর শুরু হয় বিশেষায়িত কর্মশালা। প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসীরা বাংলাদেশিদের সম্ভাবনা ও করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন। রোববার পৃথক চারটি সেমিনারের পর অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটবে। দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার পর্যটন ও সংস্কৃতিমন্ত্রী দাতো সেরি মোহাম্মদ নাজরি বিন আব্দুল আজিজ উপস্থিত থাকবেন।

প্রবাসীদের সমস্যা, সম্ভাবনা, দেশে বিনিয়োগ, জ্বালানি, পরিবেশ, পর্যটন, অভিবাসনসহ উন্নয়নের সব বিষয় নিয়ে আলোচনা শেষে কুয়ালালামপুর ডিক্লারেশন নামে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবেন আয়োজকরা।

ওআর/আরআইপি

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]