মালয়েশিয়ায় অভিযানে ১৩৩ বাংলাদেশিসহ আটক ৪৩৪


প্রকাশিত: ০৮:৩৫ পিএম, ২২ আগস্ট ২০১৬

মালয়েশিয়ায় অভিযান চালিয়ে ১৩৩ বাংলাদেশিসহ ৪৩৪ আটক করেছে দেশটির আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থা। শুক্রবার রাত থেকে শুরু করা এ অভিযানে রাজধানীর জালান আলোর, জালান চাঙ্গাত ও শ্রী হারতামাসসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ১৩৩ বাংলাদেশি, মিয়ানমারের ১৩০ জন এবং নিয়োগকর্তাসহ সর্বমোট ৪৩৪ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করে দেশটির স্পেশাল টিম।

এই অভিযান শেষ হয় শনিবার সকাল ৯টায়। থেমে থেমে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার করতে সফল হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার দাতুক অমর সিং।

মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশি শ্রমিকদের বৈধ হওয়ার জন্য যে রি-হায়ারিং প্রোগ্রাম সরকারের তরফ থেকে চালু করা হয়েছিল তা গত ৩০ জুন সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু হিসাব করে দেখা যায় খুব কম সংখক অবৈধ অভিবাসী এই প্রোগ্রামের আওতায় এসেছেন। এর ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের পক্ষ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে একটি বিশেষ অভিযান শুরু করে।

অবৈধ বিদেশি শ্রমিকদের আটক করতে নারী-পুরুষের সমন্বয়ে কুয়ালালামপুর পুলিশ এবং কুয়ালালামপুর সিটি হলসহ (ডিবিকেএল) বিভিন্ন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে বিশেষ টিম নতুন করে এ অভিযানে নামছে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার সংবাদ মাধ্যমগুলো।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, বাজার, মহাসড়ক, হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকান এবং জনসাধারণের চলাচল আছে সম্ভাব্য এমন সব জায়গাতেই এই বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই বিশেষ টিম বিভিন্ন জায়গায় ব্লক দিয়ে শ্রমিকদের পারমিট এবং কর্মস্থলের বৈধতা আছে কি-না সেটা যাচাই করবে। অভিবাসী আইন অমান্যকারীদের জেল-জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেয়ার ক্ষমতা দিয়ে জেলা পুলিশ বিভাগ, বিভিন্ন পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থা থেকে কর্মীদের নিয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।


এই অভিযানের আওতায় থাকবে নিরাপত্তাকর্মী এবং গাড়ি চালকরাও। অভিযান চলাকালে পারমিটে (বৈধ কাগজ) বর্ণিত পেশা এবং নিজ কর্মস্থল ব্যতীত অন্য জায়গায় কর্মরত শ্রমিকদের অবৈধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এমনকি বাইরে কাজ করতে দেয়ার অপরাধে মালিককেও জরিমানা করা হবে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, অভিযান শুরু হওয়ার অর্থ, এই অভিবাসী শ্রমিকদের সামনে মহাবিপদ। এছাড়া, স্থানীয় যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেয়াও মালয়েশিয়া সরকারের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে জানা গেছে।

সরকার মনে করছে, মালিকরা সস্তায় অবৈধ বিদেশি শ্রমিক পাওয়ার কারণে স্থানীয়দের বেকারত্বের হার বাড়ছে। সরকার এই মুহূর্তে মালয়েশিয়া থেকে অবৈধ বিদেশি শ্রমিক ছাঁটাই করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ দেখছে না।

এদিকে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হওয়ার আগেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অবৈধ অভিবাসীরা। গত কয়েক বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় এটিই সবচেয়ে বড় অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযান হতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে মালয়েশিয়ার আইনে অনুপ্রবেশকারীদের জন্য জেল, জরিমানা ও বেত্রাঘাত রাখা হয়েছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে সাগরপথে আসা যেসব শ্রমিকের কোনো কাগজ-পত্র ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেই সেসব শ্রমিককে বেত্রাঘাতের মতো এমন কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। তবে যারা বৈধভাবে এসে বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়েছে তাদের জন্য এই শাস্তি প্রযোজ্য নয়।

বিএ

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]