আমিরাতে ১১ দিনে ১১ বাংলাদেশির মৃত্যু

মুহাম্মাদ ইছমাইল
মুহাম্মাদ ইছমাইল মুহাম্মাদ ইছমাইল , আরব আমিরাত প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮:৪৯ এএম, ২৭ আগস্ট ২০২৩

কাজ থেকে বাসায় এসে গোসল করতে গিয়ে গত ২৪ আগস্ট হঠাৎ স্ট্রোক করেন আরব আমিরাতের শারজায় বসবাসরত ফেনীর দাগনভূঁঞার জগতপুরের মো. সোহেল। স্ট্রোকের সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার মরদেহ শারজার কাসেমিয়া হাসপাতালে রয়েছে। বর্তমানে দেশে পাঠানোর অপেক্ষায়।

তিনিসহ সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত ১১ দিনে ১১ প্রবাসী বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। এরমধ্যে ২ জন সড়ক দুর্ঘটায়, ১ জন ক্যানসারের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। অন্যরা স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন>>> সুস্থ শরীরে প্রবাসে, স্বপ্ন পূরণের আগেই ফিরছেন লাশ হয়ে

মারা যাওয়া প্রবাসীদের মধ্যে রয়েছেন- চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ১ নম্বর পুকুরিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম নাটমুড়া গ্রামের নজির আহমেদের ছেলে মো. মামুন, ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২২ আগস্ট আরব আমিরাতে আল আইন একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি। এরই মধ্যে তার মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে।

১৯ আগস্ট দেশটির আল আইনে মৃত্যুবরণ করেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার পূর্ব মহাদেবপুর গ্রামের শহীদুল ইসলাম। মাত্র ২০ বছর বয়সে এ তরুণ প্রবাসী মারা যান।

আবুধাবীর মোছাফফার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নাসির শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬টায় আবুধাবির একটি হাসপাতালে মারা যান। দুই সন্তানের জনক মোহাম্মদ নাসির দীর্ঘদিন ধরে আবুধাবির মোছাফফাতে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছেন। চট্টগ্রামের দক্ষিণ ফটিকছড়ির ধর্মপুর অলি মোহাম্মদ বাড়ির ছেলে মরহুম মোহাম্মদ নাসির।

আরও পড়ুন>>> প্রবাসে সবচেয়ে কষ্ট লাগে প্রিয়জনের মৃত্যু সংবাদ শুনতে

দুবাইয়ে স্ট্রোক করে মারা যান মুহাম্মদ কাজী আবু তাহের (৫৩)। গত ১৮ আগস্ট রাত ৮টা ৩০ মিনিটে দেরা বাংলা বাজার হাজি মোস্তাফা গ্রোসারিতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের সন্তান মুহাম্মদ কাজি তাজবিদুল আমিন রুহান জানান, নিজ বাসার নিচে গ্রোসারিতে বাজারের জন্য গেলে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ে যান বাবা। সেখান থেকে পুলিশ ও চিকিৎসক স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মুহাম্মদ কাজী আবু তাহের গত ৩৪ বছর ধরে আমিরাতে বসবাস করছেন।

১৪ আগস্ট দুবাইয়ে স্ট্রোক করে মিজানুর রহমান (৫০) নামের চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে আমিরাতে আসেন তিনি। তার ভাতিজা আজমান প্রবাসী ওমর ফারুক বলেন, পরিবারের কথা চিন্তা করে গত বছর আমিরাতে এসেছিলেন মিজানুর রহমান।

শারজায় চট্টগ্রাম প্রবাসী মোহাম্মদ লোকমান হোসেন মিয়াজীর মৃত্যু হয়। সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুর ১টা ২০ মিনিটে শারজাহ আল-কাসমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি শারজাহ’র হালোয়ানে আল সালেহ পেইন্ট অ্যান্ড সেনেটারি ওয়্যার ট্রেডিংয়ের একজন স্বত্বাধিকারী ছিলেন। চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মুহুরীহাট-বটতলস্থ পুতুন মিয়াজী বাড়ির প্রয়াত কোব্বাদ সওদাগরের ছেলে।

আরও পড়ুন>>> যে কারণে প্রবাসীদের লাশের মিছিল বেড়েই চলেছে

মৃতের সহকর্মী ও প্রবাসীরা জানান, গত ১২ আগস্ট ব্রেইন স্ট্রোক করে শারজাহ আল-কাসমি হাসপাতালে ভর্তি হন লোকমান হোসেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। প্রায় ৩০ বছর ধরে আরব আমিরাতে বসবাস করছেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫০ বছর।

পারিবারিক অসহযোগিতা ও কলহের কারণে স্ট্রোকে মৃত্যুর হার বেড়ে যাচ্ছে বলে জানান আরব আমিরাতে বসবাসরত অনেক প্রবাসী।

এমআইএইচএস/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]