জীবনের পরতে পরতে হুমায়ূন আহমেদ
হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আসলে লিখে শেষ করা যাবে না। তিনি ছিলেন একটা বিশাল প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠানের ছিল অনেক শাখা এবং প্রশাখা। এবং সেই প্রত্যেকটা শাখা প্রশাখাতে ছিল তার উল্লেখযোগ্য বিচরণ। যেখানেই হাত দিয়েছেন ফলিয়েছেন সোনা। তাঁর সৃষ্টি সময়কে অতিক্রম করে তাঁকে অমর করে রাখবে বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তাঁকে নিয়ে অনেক গবেষণা হওয়া দরকার। তিনি পরিপূর্ণরূপে ছিলেন একজন বাংলাদেশি।
তাঁর প্রত্যেকটা কাজের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। তিনি বাংলাদেশের সব শ্রেণীর মানুষের জীবনকে তাঁর সৃষ্টিতে মূর্ত করে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। আমার মনেহয় এতো বিস্তারিতভাবে আর কেউ বাংলাদেশকে তাঁদের সৃষ্টিতে ফুটিয়ে তুলতে পারেননি। একটা মাত্র লেখায় বা একটা মাত্র বইয়ে ক্ষণজন্মা এই মানুষটির সকল বিষয়ে আলোকপাত করা সম্ভব নয়। তবুও হুমায়ূন আহমেদের একজন গুণমুগ্ধ ভক্ত হিসাবে উনার বিষয়ে কিছুটা লেখার চেষ্টা করবো।
গ্রামীণ হুমায়ূন
বাংলদেশের সাহিত্যে গ্রামীণ পটভূমি যতটা উঠে এসেছে ততটা উঠে আসেনি রূপালী পর্দায়। শহুরে জনগোষ্ঠির কাছে গ্রামীণ জনগোষ্ঠির জীবনযাত্রা এবং মূল্যবোধ এখনও অপাংক্তেয় একটা বিষয়। আমাদের শহুরে জীবনে চলে এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতা। কে কত দ্রুত তার গ্রামীণ পরিচয় ধুয়ে মুছে শহুরে উঠতে পারবে সেই চেষ্টা খুবই দৃষ্টিকটু হলেও সত্য। গ্রামীণ সমাজের আঞ্চলিক ভাষাতো এখনও শহুরে মানুষদের অন্যতম বিনোদনের বিষয়।
হুমায়ূন আহমেদ তার সাহিত্যের পাশাপাশি নাটক সিনেমাতেও গ্রামীণ পটভূমিকে চিত্রায়ণ করেছিলেন পরম মমতায়। আর তার অন্তর্ভেদী দৃষ্টিতে গ্রামীণ জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় উঠে এসেছিল। ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’ নাটক সবখানেই তিনি তুলে ধরেছিলেন গ্রামীণ জনজীবনকে। পাশাপাশি লোকজ সংস্কৃতি এবং গানগুলোকে তুলে এনেছিলেন সব শ্রেণীপেশার মানুষের সামনে।
শহুরে হুমায়ূন
আমার বহুবার পঠিত বই 'আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই'। এই বইটা এক অর্থে উনার জীবনীগ্রন্থ। যতবার পড়ি ততবারই ভালো লাগে। এই বই থেকেই জানা যায় উনার শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য এবং প্রবাসের অনেক অজানা কথা। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির পর থেকে উনার জীবন ছিল মোটামুটি শহুরে জীবন। তাই উনি গ্রামীণ জীবনের সাথে শহুরে জীবনের তুলনাটা করতে পেরেছেন। শহুরে জীবনের ঠুনকো মূল্যবোধ, মুখোশের আড়ালে ঢাকা মেকি সভ্যতা সবই এসেছে উনার গল্প, উপন্যাস এবং নাটক ও চলচ্চিত্রে।
তিনিই প্রথম শহরের উঁচুতলার মানুষের সাথে শহরের নিচুতলার মানুষের সংযোগ ঘটিয়েছিলেন। শহরের পাঁচতারা হোটেলের পেছনেই যে বস্তি আছে সেটা তিনি বলেছেন বারবার। তাই শহরকে বুঝতে হলে শুধু পরিপাটি সুন্দর শহরকে দেখলে হবে না। প্রদীপের নিচের অন্ধকারের মতো দেখতে হবে শহরের গরিব মানুষদেরও। যারা শহরকে সচল করে রাখে।
প্রাত্যহিক হুমায়ূন
হুমায়ূন আহমেদ'র সৃষ্টি নিয়ে আমাদের তথাকথিত শিল্পী সাহিত্যিকেরা সবসময়ই নাক সিটকাতেন। তাদের মনেহত হুমায়ূন আহমেদ'র কোন সৃষ্টিই আসলে শিল্পের বিচারে উত্তীর্ণ হতে পারবে না। কিন্তু শিল্পের তো আসলে কোন মানদন্ড নেই। আর দেশে দেশে এই শিল্পবোধও ভিন্ন হয়। এক দেশের বুলি হয়ে যায় আরেক দেশের গালি। হুমায়ূন আহমেদ এর আগে আমাদের শিল্পসাহিত্য প্রায় সবই ছিল পশ্চিমবঙ্গ নির্ভর। তিনিই প্রথম সেই কেন্দ্রটাকে ঢাকাতে স্থানান্তর করেন।
একসময় ঢাকার প্রকাশকরা কলকাতার লেখকদের বই ছেপে নিজের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতেন। হুমায়ূন আহমেদ সেই ধ্যান ধারণাকে খোলনলচে বদলে দেন। আমাদের প্রাত্যহিক চলাফেরা, উঠাবসা, কথাবার্তা, চালচলনও যে সাহিত্যের বিষয়বস্তু হতে পারে সেটা তিনি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। উনার লেখার সাথে বাংলাদেশের যেকোন পাঠক খুব সহজেই নিজেকে রিলেট করতে পারেন। যারফলে উনার লেখাগুলো বহুল প্রচার পায়। আর এটাই ছিল আমাদের বোদ্ধা লেখকদের গাত্রদাহের প্রধান কারণ।
সিলেবাসের বাইরের হুমায়ূন
হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের সকল শ্রেণীর মানুষের মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে দেখেছেন বলেই আমার বিশ্বাস। তাই উনার লেখায় চলমান সফলতার মাপকাঠিতে সফল মানুষ যেমন উঠে এসেছেন তেমনি উঠে এসেছেন বিফল মানুষও। এবং উনি প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই আমাদের জীবন এবং সমাজকে দেখার চেষ্টা করেছেন। তাই ঘটনার বিবরণ পড়তে যেয়ে মনেহয় এমনই তো হবার কথা ছিল।
উনি একাধারে ধীরস্থির মিসির আলীকে যেমন ধারণ করতেন তেমনি অস্থিরমতি হিমুও ছিল উনার প্রিয়পাত্র। উনি হিমুর মাধ্যমে সিলেবাসের বাইরে যেয়ে জীবনকে দেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। হিমুর গল্পগুলো পড়তে গেলে মনেহয় জীবন তো এমনও হতে পারে বা পারতো। জীবনের বস্তুগত বিষয়গুলো এড়িয়ে মানবিক বিষয়গুলোকে আপন করে নেয়ার মধ্যেই তো জীবনের সার্থকতা। তাই যুগযুগ ধরে হিমু আমাদের মনে জায়গা করে নেবে বলেই আমার বিশ্বাস।
প্রেমের নতুন সংজ্ঞা
হুমায়ূন আহমেদ প্রেমকে নিয়ে অনেক গবেষণা করেছেন উনার লেখায়। কতশত ক্ষুদ্র কারণে যে আমাদের মনে প্রেম বা ভালোবাসা জাগ্রত হতে পারে। আবার সেই প্রেম সবসময় যে মানব মানবীর মধ্যে সীমাবদ্ধ তাই নয়। সেটা হতে পারে প্রকৃতির প্রতি, আশেপাশের দৈনন্দিন বস্তুর প্রতি এমনকি ড্রেনের পানিতে যে দুর্গন্ধ আছে সেটাও আমাদের প্রেমের বিষয়বস্তু হতে পারে। পেট্রোলের পোড়া গন্ধও অনেকসময় আমাদের ভালোলাগে।
এমনসব অতিক্ষুদ্র অথচ অপরিহার্য বিষয়কে উনি তুলে এনেছেন। একজন মেয়ের শুধুমাত্র থুথু ফেলার ধরণ দেখেও তার প্রেমে পড়া যেতে পারে। একজন ছেলের গায়ের অপরিষ্কার কটকটে হলুদ রঙের পাঞ্জবী দেখেও তার প্রেমে পড়া যায়। উনি আমাদের চলতি প্রেমের সংজ্ঞাটাকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন। আমরা এখন নিজের অজান্তেই এইসব ফালতু বিষয়ের প্রেমে পড়ে যাই।
প্রকৃতি প্রেমিক হুমায়ূন
হুমায়ূন আহমেদ'র প্রকৃতি প্রেম নিয়ে আলাদা করে বলা দরকার। প্রকৃতির মধ্যে নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য নির্মাণ করেছিলেন ‘নুহাশ পল্লী’। বৃষ্টির শব্দ শুনবেন বলে বানিয়েছিলেন ‘বৃষ্টি বিলাস’ ঘর। পুকুরের পানিতে নামবেন বলে কেটেছিলেন ‘লীলাবতী দীঘি’। আর গাছের প্রতি মমতা থেকে লাগিয়েছিলেন হরেক রকমের গাছ। নুহাশ পল্লীতে একটা পুরো বাগানজুড়ে শুধু আছে ঔষুধি গাছপালা যার নাম ‘রাশেদ হুমায়ূন ঔষধি উদ্যান’। গতবার দেশের যেয়ে সেই বাগানের রক্ষণাবেক্ষকের সাথে গল্প হলো।
তিনি বললেন, মানুষ যখন যায় তখন অনেককিছুই সাথে করে নিয়ে যায়। স্যার মারা যাবার পর অনেক গাছকে উনারা হাজার চেষ্টা করেও আর বাঁচাতে পারেননি। উনি অনেক গাছের স্থান দেখালেন যেখান আগে গাছ ছিল কিন্তু এখন আর নেই। এই গাছগুলোর মধ্যে আছে একটা বাঁশের মাঁচা। তার উপর কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলে আপনার শরীর মন দুটোই নিমেষে শীতল হয়ে যাবে।
রসিক হুমায়ূন
হুমায়ূন আহমেদের রসিকতা করার প্রবণতা ছিল স্বভাবজাত। লেখায়, নাটকে, চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে বাস্তব জীবনের সবখানেই এই ছাপ স্পষ্ট। জীবনের এমনকোন বিষয় নেই যা নিয়ে তিনি হাস্যরস করেননি। আমাদের ভাষায় জীবনের চরম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েও তিনি রসিকতা করতেন। রসিকতা করতে পারা একটা বিরল গুন। সবাই এটা পারে না। আবার অনেকেই পারলেও সেটা ধরে রাখতে পারে না। কিন্তু উনি সেটা পেরেছিলেন।
একসময় উন্মাদ পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখতেন 'এলেবেলে' নামে। এরপর ‘বলপয়েন্ট’ এবং ‘কাঠপেন্সিল’ বইতেও সেই স্বাক্ষর রেখেছেন বেশকিছু লেখায়। বাস্তব জীবনে রসিকতা করার চেয়ে সেটাকে লিখে প্রকাশ করা বহুগুণে কঠিন কাজ। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের লেখাগুলো পড়লে যে কেউই ধরতে পারেন যে উনি রসিকতা করছেন। তবে এইসব রসিকতার মধ্যেও উনি অনেক বার্তা দিতেন। কিন্তু আমাদের দুর্বলতা হলো আমরা শুধু হাসিরসটাই ধরতে পারতাম মূল বার্তাটা বুঝতে পারিনি।
প্রতিবাদী হুমায়ূন
বাংলাদেশের শহুরে মানুষদের মধ্যে কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করার ঘটনা খুবই বিরল। মাত্র কিছু মানুষ প্রতিবাদ করেন। তারা তখন বাকিদের বিরাগভাজন হয়ে উঠেন। ব্যাপারটা এমন যে প্রতিবাদ করলেই যেন আপনি আর ভদ্রস্থ সমাজের অন্তর্ভুক্ত থাকলেন না। ঠিক একই অবস্থা লেখক সমাজেও। তারা নামমাত্র যতটুকুনই প্রতিবাদ করেন সেটাও অনেক ইনিয়েবিনিয়ে। যাতে করে সাপও মরে আবার যেন লাঠি না ভাঙে। হুমায়ূন আহমেদ একেবারে প্রতিকূল সময়ে টিয়াপাখির মুখ দিয়ে 'তুই রাজাকার' বলিয়ে আমাদের গৌরবজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের কালো দিকটার দিকে আলোকপাত করেছিলেন।
‘শ্রাবণ মেঘের দিন’র দাদার মুখ দিয়ে বলিয়ে ছেড়েছিলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি খুব বড় একটা অন্যায় করেছিলাম। সেই অন্যায়ের জন্যে মহান আল্লাহ পাকের কাছে, দেশের মানুষের কাছে, আপনাদের সকলের কাছে ক্ষমা চাই। হাতজোড় করে ক্ষমা চাই।”এছাড়াও তিনি দরকার হলে সম্মুখ সমরে রাস্তায়ও নেমে আসতেন প্রতিবাদ জানাতে। ‘শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’র হলের নামকরণ নিয়ে অনশন ধর্মঘট করে সরাসরি প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ এবং হুমায়ূন আহমেদ
বাংলাদেশের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় এবং গর্বের অর্জন আমাদের স্বাধীনতা। পাকিস্তানিদের অত্যাচার পৃথিবীব্যাপী সংগঠিত সকল যুদ্ধের বীভৎসতা, নৃশংসতা এবং ভয়াবহতাকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। মাত্র নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছিলেন ত্রিশ লক্ষ মানুষ, সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন হাজার হাজার মা বোন। হুমায়ূন আহমেদ সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এমনসব কাজ করেছেন যেগুলো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মুক্তিযুদ্ধের স্বাক্ষী হয়ে থাকবে।
‘আগুনের পরশমণি’ চলচ্চিত্র মুক্তিযুদ্ধের এক অমর সৃষ্টি। তরুণ প্রজন্ম নিজের জীবন বাজি রেখে যোগ দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। তাঁদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল অন্ধকার রাতের শেষে স্বাধীনতার সূর্যদোয়। এই চলচ্চিত্রের শেষ দৃশ্যে মূল চরিত্র বদি’র হাত বাড়িয়ে সূর্যের আলো ছুঁয়ে দেখার দৃশ্যটা বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে। আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তার উপন্যাস ‘জোৎস্না ও জননীর গল্প’ বইটা বাংলা ভাষাভাষী যেকোন পাঠককে আবহমানকাল ধরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ধারণা দিয়ে যাবে।
জীবনের পরতে পরতে হুমায়ূন
আমাদের শহর কিংবা গ্রামের, গরিব কিংবা ধনীর, প্রভু কিংবা চাকরের প্রাত্যহিক জীবনের পরতে পরতে জড়িয়ে আছেন হুমায়ূন আহমেদ। এখনও আমরা উনার সাহিত্য পড়ি এবং নিজেদের সমৃদ্ধ করি। উনার তৈরি নাটক এবং চলচ্চিত্র দেখি সপরিবারে। জীবনের কঠিন সময়ে উনার রসিকতায় আশ্রয় নিই। আর শহুরে জীবনে দমবন্ধ হয়ে আসলে নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য চলে যায় নুহাশ পল্লীতে। উনার গল্প উপন্যাস পড়া যায় সহজেই, কোন চিন্তাভাবনা ছাড়াই। উনার নাটক এবং চলচিত্রের দৃশ্যায়ন এবং ভাষা চয়ন ভেঙে দেয় শহর ও গ্রাম এবং ধনী ও গরিবের ব্যবধান।
দেশে এবং প্রবাসে এখনও হুমায়ূন আহমেদ এক কিংবদন্তির নাম। অনেকেই মনেকরেছিলেন উনি মারা যাওয়ার পর হয়তোবা উনার সাহিত্য আর আগের মতো প্রচার ও প্রসার পাবে না। কিন্তু সেই কথাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে এখনও বইগুলোর বহু সংস্করণ ছাপা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর নাটক এবং চলচ্চিত্রের মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ প্রমাণ করে সেগুলোর জনপ্রিয়তা।
প্রবাসের এই যান্ত্রিক জীবনে যেখানে সবাই ঘড়ির কাঁটার সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে। সেখানেও আমরা সময় পেলেই উনার গল্প উপন্যাস পড়ি। আরো একটু বেশি অবসর পেলে সপরিবারে বসে পড়ি উনার তৈরি নাটক এবং সিনেমা দেখতে। আমি ঘুরেফিরে উনার নাটক, চলচ্চিত্র দেখি বলে আমাদের দশ বছর বয়সী মেয়েটা একবার প্রশ্ন করেই বসলো - উনি কি খুব বড় নির্মাতা ছিলেন বাবা? আমি বললাম, মা উনি হচ্ছেন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। তুমি যখন বড় হবে তখন বুঝতে পারবে উনি কত বড় মাপের মানুষ ছিলেন। আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান জাতি যে আমাদের একজন হুমায়ূন আহমেদ আছেন। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে হুমায়ূন আহমেদকে আমরা ততদিন হৃদয়ে ধারণ করবো।
এমআরএম/এমএস