ইতালিতে ই-পাসপোর্ট চালুর দাবি

জমির হোসেন
জমির হোসেন জমির হোসেন , ইতালি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০১:০৯ পিএম, ২৭ মে ২০২৩

ইতালিতে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করার দাবি জানিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে তারা এ দাবি জানিয়ে আসছেন। এদিকে ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, যেহেতু মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দিয়েই ডকুমেন্টারি সব কাজ হচ্ছে সেহেতু খুব শিগগিরই এটি চালু করার সম্ভাবনা কম।

জানা গেছে, ই-পাসপোর্ট নিয়ে প্রতিদিনই কোনো না কোনো বাংলাদেশি সামাজিকমাধ্যমে এ দাবি জানাচ্ছে। আখন শিপন নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশি সামাজিকমাধ্যমে লিখেছেন, ‘ই-পাসপোর্টের জন্য দ্রুত কার্যক্রম শুরু করুন। নতুবা আমরা আবারও আন্দোলনের কর্মসূচি হাতে নেব।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি বলেন, আমরা ইতালি প্রবাসী, গত এক-দুই বছরে আমরা ই-পাসপোর্টধারী প্রায় ১৫-২০ হাজার নতুন প্রবাসী ইতালিতে প্রবেশ করি। এর মধ্যে অনেকে কাগজ পেয়ে গেছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, আমরা যখনই ডকুমেন্টস তুলতে যায় ইতালি সরকার আমাদের ডকুমেন্টস দিচ্ছে না। কারণ এখানে পাসপোর্ট ছাড়া বর্তমানে ডকুমেন্টস দেওয়া হয় না। এ অবস্থায় অনেকের ডকুমেন্টসের মেয়াদ ও প্রায় শেষ হয়ে আসছে। এবং আমরা বৈধভাবে রেমিট্যান্স ও দেশে পাঠাতে পারছি না। আমরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। আমাদের দাবি, আমরা ইতালিতে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু চাই।

এ বিষয়ে জাগো নিউজের ইতালি প্রতিনিধির এক প্রশ্নের জবাবে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে বলেন, ইতালিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে বর্তমানে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) সেবা নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে। যেসব প্রবাসী বাংলাদেশির এমআরপি রয়েছে তারা এটি সহজেই রি-ইস্যু করতে পারছেন। এমনকি ইতালিতে জন্মগ্রহণকারী বাংলাদেশি শিশুদের ক্ষেত্রেও নতুন এমআরপি দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, একটি এমআরপি মেয়াদ থাকে পাঁচ বছর। ফলে যারা বর্তমানে এমআরপি পাচ্ছেন, তারা এ পাঁচ বছর নিশ্চিন্তে এ পাসপোর্ট ব্যবহার করতে পারবেন। তাই এখনই এটিকে ই-পাসপোর্টে কনভার্সনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে নতুন পাসপোর্ট করে যারা ইতালিতে এসেছেন অথবা যেসব প্রবাসী বাংলাদেশি বেড়াতে গিয়ে সেখানে পূর্বের পাসপোর্ট রি-ইস্যু করে ইতালিতে এসেছেন তারা প্রায় সবাই ই-পাসপোর্ট পেয়েছেন। ই-পাসপোর্টের মেয়াদ ৫-১০ বছর। ফলে আগামী ৫-১০ বছর তাদের দূতাবাসে এসে পাসপোর্ট রি-ইস্যুর প্রয়োজন পড়বে না।

ইতালিতে ই-পাসপোর্টের চাহিদা রয়েছে কেবলমাত্র তাদের, যারা ই-পাসপোর্ট নিয়ে ইতালিতে এসেছেন কিন্তু তাদের ই-পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছেন। ই-পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলা ব্যক্তিদের মধ্যে ভূমধ্যসাগর রুট দিয়ে এবং পূর্ব ইউরোপের দেশসমূহ থেকে অবৈধভাবে ইতালিতে আসা লোকের সংখ্যাই বেশি। তবে ইতালির স্টে-পারমিট রয়েছে, কিন্তু অসাবধানতাবশত ই-পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে এমন কিছু ঘটনাও দূতাবাসের গোচরে এসেছে।

তিনি বলেন, দূতাবাসে এখনো যেহেতু ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু হয়নি এবং যেহেতু ই-পাসপোর্ট থেকে এমআরপিতে ফেরত যাওয়ার সুযোগ নেই, কাজেই এসব ই-পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলা ব্যক্তিদের দূতাবাস থেকে পাসপোর্ট আপাদত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিদেশস্থ মিশনসমূহে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম ধাপে ধাপে চালু করা হচ্ছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশ যেমন জার্মানি, গ্রিস, অস্ট্রিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চলছে। ইতালিতেও ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।

তবে এর সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ এখনো ঘোষিত হয়নি। আমরা মন্ত্রণালয় থেকে ই-পাসপোর্ট চালু সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক পত্র পাওয়া মাত্রই দূতাবাসের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে প্রকাশ করবো।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মাল্টা ও রোমানিয়া এসে বাংলাদেশিরা অন্যদেশে চলে যান। ফলে ইউরোপের দুটি শ্রম বাজার হারাতে পারে বাংলাদেশ।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার খুব দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শিগগিরই মাল্টার পর রোমনানিয়ার শ্রম বাজার হারাতে পারে বাংলাদেশ। সূত্র বলছে, রোমানিয়ায় বৈধভাবে প্রবেশ করার পর তারা সেখানে কাজ না করে বেশি মুনাফার লোভে ইউরোপে অন্যদেশে গিয়ে অবৈধ হয়ে যায়। সেখানে সহজেই বৈধতা পাওয়ার সুযোগ নেই।

এমআরএম/এমআইএইচএস/এমএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]