বেলজিয়ামে বাংলাদেশিদের ঈদ উদযাপন

ফারুক আহাম্মেদ মোল্লা
ফারুক আহাম্মেদ মোল্লা ফারুক আহাম্মেদ মোল্লা বেলজিয়াম ব্রাসেলস
প্রকাশিত: ০৬:৪১ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০২৩

বেলজিয়ামে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। প্রবাস জীবনের যান্ত্রিকতা দূরে সরিয়ে এদিন একত্রিত হোন প্রবাসীরা। দেশটিতে ঈদের দিনেও অনেক প্রবাসীর কর্ম দিবস থাকে। তবুও ভোরে নতুন পোশাক পরে আগেভাগে বাসা থেকে বের হয়ে ঈদের নামাজ পড়েন। যাদের কর্মদিবস থাকে না, তাদের অনেকে মসজিদে নামাজ শেষে পরিবার পরিজন নিয়ে বের হন ঘুরতে।

সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সবাই একত্রিত হয়ে মেতে ওঠেন গল্প-আড্ডায়। আড্ডায় উঠে আসে দেশে অবস্থানকালে পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের নানা মাত্রিক ঘটনাবলি। আড্ডার পাশাপাশি চলে ঈদ উপলক্ষে রান্না করা বিরিয়ানি, পোলাও, কোরমা, মাংসের চপ, রোস্ট, জর্দা আর গৃহবধূদের নিজহাতের তৈরি দইসহ নানা স্বাদের খাবার পরিবেশন। এ মহামিলনের পাশাপাশি প্রবাস থেকে দেশের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে চলে মোবাইল ফোনে আলাপচারিতা। এ আলাপে কারও কারও নয়ন ভেসে যায় জলে। অশ্রুসিক্ত নয়নে দেশে একসঙ্গে ঈদ না করতে পারার আক্ষেপ করেন প্রবাসীরা।

বেলজিয়ামে বাংলাদেশিদের ঈদ উদযাপন

ঈদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে প্রবাসী মো. রাশেদ ভূঁইয়া বলেন, খুব মিস করি শৈশবের সেই আনন্দের ঈদকে। সেই দিন সময় আর কখেনাই ফিরে পাবার নয়। ব্যস্ত এ প্রবাস জীবনে পরিবার আর বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে যদিও ঈদ করি, কিন্তু সেই সময়ের ঈদ এখন কেবলই স্মৃতি।

আরেক প্রবাসী সাকিব মিয়া আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, সবাই আছে শুধু সময়টাই নেই। ঈদের দিন সময় বের করে বাংলাদেশের আত্মীয়স্বজন বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। শুধু এতটুকুই। সময় বড়ই নিষ্ঠুর, ইচ্ছে করলেই সব কিছু হয় না। তবু প্রবাসের ঈদ পরিবার পরিজন নিয়ে উপভোগ করি, আনন্দ করি।

বেলজিয়ামে বাংলাদেশিদের ঈদ উদযাপন

এম এম হাসান বলেন, বাংলাদেশের মত আনন্দ করে এখানে ঈদ হয় না। প্রবাসে আমরা বাংলাদেশিরা একে অপরের বাড়িতে যাই, শুভেচ্ছা বিনিময় করি। রোমান্থন করি, দেশের সেই সময়ের স্মৃতি। নতুন প্রজন্মের অনেকেই আমাদের সময়কার সেই ঈদের আনন্দ বুঝতেই পারবে না। তিনি বলেন, চলার পথে রাজধানী ঢাকা শহরের মতো এখানে কোন যানজট না থাকলেও ইচ্ছে করলেই বাস আর ট্রেনের টিকিট কেটে দেশের বাড়িতে যাওয়া যায় না। দেখা হয় না মমতাময়ী মা-বাবা পরিবার পরিজনদের সঙ্গে। তাই তো তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আপনজনদের খোঁজ খবর নেই, আর মুঠোফোনে তাদের ডিজিটাল হাসির ছবি দেখেই পালন করতে হয় আমাদের ঈদ উৎসব। এভাবেই প্রতিটি প্রবাসী বিদেশের মাটিতে কাটিয়ে দিচ্ছে মাসের পর মাস,বছরের পর বছর। শুধুমাত্র জন্মভূমির রেমিট্যান্স বৃদ্ধি এবং নিজের পরিবারের সুখের আশায়, তাদের ঠোঁটে এক চিলতে হাসি ফোটানোর প্রচেষ্টায়।

জেএইচ/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]