কনটেইনারে মালয়েশিয়া
কিশোর ফাহিমকে বিদায় জানালেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কনটেইনারে করে মালয়েশিয়ায় আসা কিশোর রাতুল ইসলাম ফাহিমকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার ফাহিমকে বিমানবন্দরে বিদায় জানান মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফ উদ্দিন নাসুশন ইসমাইল।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে আটটায় মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কিশোর ফাহিমকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১০টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে ফ্লাইটটি।
এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফ উদ্দিন নাসুশন ইসমাইল মালয়েশিয়ার আন্তর্জাাতিক বিমানবন্দরে ফাহিমকে বিদায় জানান। এ সময় দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার উপস্থিত ছিলেন।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকেদের বলেন, কন্টেইনারে আটকে পড়া বাংলাদেশি কিশোরকে টেংকু আম্পুয়ান রহিমাহ হাসপাতালে (এইচটিএআর) চিকিৎসার পর সেইফহোমে রাখা হয়। সেখান থেকে কিশোর ফাহিমকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখেছি যে, ফাহিম কোনো মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত নয়।
আরও পড়ুন: কিশোর ফাহিম দেশে ফিরছে কাল
এদিকে, কিশোর ফাহিমকে বাংলাদেশে তার পিতামাতার কাছে হস্তান্তর করতে হাইকমিশনের একজন কল্যাণ সহকারী তার সঙ্গে ঢাকায় যাচ্ছেন।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফ উদ্দিন নাসুশন ইসমাইল
এর আগে, ৩ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ এ খাস্তগীর একটি সেইফ হোমে রাখা কিশোর রাতুল ইসলাম ফাহিমের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে ছিলেন প্রথম সচিব (শ্রম) এ এস এম জাহিদুর রহমান।
গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ‘এমভি ইন্টিগ্রা’ নামের জাহাজটি ১৭ জানুয়ারি দেশটির ক্লাং বন্দরে পৌঁছায়। ওই দিন রাতে খালি একটি কনটেইনার থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মালয়েশিয়ার একটি এনজিওর সেইফহোমে রাখা হয় তাকে।
সে সময় ওই কিশোরের কনটেইনার থেকে বেরিয়ে আসার কয়েকটি ভিডিও মালয়েশিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয় সরকার। এরপর হাইকমিশনের শ্রম শাখা থেকে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ফাহিমের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
১৪ বছর বয়সী রাতুল ইসলাম ফাহিম দুই মাস আগে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের বাড়ি থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম থেকে পৌঁছে যায় মালয়েশিয়ায়।
সে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামের মো. ওমর ফারুক ও রোকেয়া বেগম দম্পতির ছেলে। পেশায় দিনমজুর ফারুকের তিন ছেলের মধ্যে ফাহিম সবার বড়। সে কিছুটা শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী।
গত বছরের শেষ দিকে ফাহিম বাড়ি থেকে ‘নিরুদ্দেশ’ হয়। এরপর কীভাবে সে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজে করে মালয়েশিয়ার বন্দরে পৌঁছেছে সে বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা পরিষ্কারভাবে কিছুই বলতে পারেনি।
কেএসআর/জেআইএম