‘প্রতারকদের বিশ্বাস না করে উপায় ছিল না’
ইতালিতে দূতাবাসের ভুয়া কর্মকর্তা সেজে ইমোতে কল দিয়ে এক বাংলাদেশির ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় প্রতারণার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ঘটনার দিন প্রতারক চক্র কল দিয়ে বলে আমি দূতাবাস থেকে বলছি। আপনার প্রবাসী কল্যাণ কার্ডটি প্রস্তুত হয়ে গেছে। কার্ডটি বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে সংগ্রহ করতে পারেন। কথার একপর্যায়ে তারা ভুক্তভোগীর সরাসরি মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে ইমু নম্বরের বিষয়ে নিশ্চিত হন। এর কিছুক্ষণ পরই তার ইমো অকার্যকর হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সুমন বলেন, ‘অ্যামবাসি অব বাংলাদেশ’ লেখা নামক ইমোতে ফোন করে জানান বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম প্রবাসী কল্যাণ কার্ড করতে হবে। স্যার আপনার কার্ডটি এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়েছে। সরকার কার্ডটি দিচ্ছে এর কারণ বাংলাদেশ গেলে বিমানবন্দরে কার্ডটি প্রয়োজন হবে। আপনি যে কোনো সময় দূতাবাসে গেলো কার্ডটি তুলে আনতে পারবেন।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে হ্যাকার চক্র আমার স্ত্রীর কাছ থেকে দুইবারে পঞ্চাশ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে নিয়ে যায়। আমার বন্ধু, আত্মীয়, পরিবার-পরিজন সবাইকে আমার অনেক বিপদের কথা লিখে টাকা পাঠাতে বলেন হ্যাকার চক্র। একই সঙ্গে আমার হয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথনে তারা স্ত্রীকে বলেন, আমার মুখে মাস্ক ছিল না আমাকে পুলিশ ধরেছে মুক্তি পেতে টাকা লাগবে। আবেগে আপ্লুত ম্যাসেজ পাঠিয়ে আমার স্ত্রীর পরিবারকে দুর্বল করে ফেলে।
প্রতারণার ঘটনাটি বিশ্বাস না করার কোনো উপায় ছিল না। তিনি সবাইকে সাবধান হতে পরামর্শ দেন। নিশ্চিত না হয়ে কেউ যেন ভবিষ্যতে এ রকম বোকামি না করে। তিনি প্রবাসীদের স্বার্থে বাংলাদেশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এর আগে নাদিম মাহমুদ নামে আরেক বাংলাদেশিকে ফোন দিয়ে এ ধরনের কথা বলার পর নাদিম বুঝতে পেরে প্রতারক চক্রকে অকথ্য ভাষায় বললে তারা ফোন কেটে দেন। এছাড়াও আরও কয়েকজন ইতালি প্রবাসী এ চক্রের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হন। এর ফলে দিনদিন এ চক্রটি আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে রোম বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, প্রবাসী কল্যাণ কার্ডের জন্য অনলাইনে ফরম পূরণ করে দূতাবাসে এসে জমা দিতে হয়। এর দুই সপ্তাহ পর দূতাবাসে এসে চল্লিশ ইউরোর রিসিট জমা দিলে কার্ডটি দেওয়া হয়। তবে কেউ যদি বিশেষ অনুরোধ করে সেক্ষেত্রে আমরা আবেদনকারীর নির্বাচিত ইমেইলে কার্ডটি পাঠিয়ে থাকি। আর এই কার্ডটি পেতে দূতাবাস কাউকে সরাসরি ফোন দেয় না। ভবিষ্যতে কেউ যেন এমন ভুল না করে সেজন্য ইতালি প্রবাসীদের তিনি সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
এমআরএম/এএসএম