নেদারল্যান্ডস যাত্রার গল্প
হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিই নেদারল্যান্ডস যাওয়ার। দুই মাস আগের কথা। তখন টিকিট কিনেও ফেলি। কিন্তু একদিন পরে সিদ্ধান্ত বদল। এবার পূর্ণ মনোযোগ জব ও পড়াশোনায়। আর এতেই আমায় পেয়ে বসে একঘেয়েমি। সিদ্ধান্ত নিলাম কোথাও ঘুরতে যাবো। যেই চিন্তা সেই কাজ।
এরপরের ঘটনা যেন- মেঘ না চাইতে বৃষ্টি। কারণ জার্মানির গ্রুন শহর থেকে ফোন এলো। ফোন করেছেন হামিদ ভাই। বললেন তার বাসায় যেতে। এরপর জিকু ভাইকে সঙ্গে নিয়ে জার্মানির ব্রেমেন শহর থেকে আমাদের যাত্রা।
গ্রুনে পৌঁছে হামিদ ভাই ও আইরিন ভাবির আপ্যায়নে বিস্মিত। রকমারি নাস্তা। বিদেশে বসে হাতে তৈরি দেশীয় নানা খাবার। এক কথায় অসাধারণ।
নাস্তার ফাঁকে হামিদ ভাই জানালেন, সবাইকে নিয়ে নেদারল্যান্ডস যাবেন। আমিতো এই প্রস্তাবে আনন্দে আত্মহারা। কারণ আমার মাথায় তো একই চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। তৎক্ষণাৎ সবাই মিলে ট্রেনে করে চলে যাই নেদারল্যান্ডসের এনসিডে শহরে।
থার্টি ফার্স্ট নাইটের পুরো রাত স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে আড্ডা-গল্পে কাটে। তবে লকডাউনে টিউলিপ ফুলের দেশটি যেন খুবই মলিন। স্বজনদের সঙ্গে আনন্দে সময় কাটলেও, ভ্রমণ বলতে যে ব্যাপক ঘুরাঘুরি বোঝায় তা হয়ে ওঠেনি।
বলতে দ্বিধা নেই, ইউরোপ হচ্ছে রূপ-সৌন্দর্যের মহাদেশ। এর আছে নানা ইতিহাস-ঐতিহ্য। নানা মিথ। তাইতো কয়েকদিন যাবত ভাবছিলাম বর্ণিল নেদারল্যান্ডসের গল্প লিখবো।
বলে রাখা ভালো, অধিকাংশ মানুষের ধারণা হল্যান্ড আর নেদারল্যান্ডস একই দেশ। কিন্তু তা নয়। ১২টা অঙ্গরাজ্য নিয়ে গঠিত দেশটির দুটি অঙ্গরাজ্যের নাম শুধু হল্যান্ড।
তথ্য বলছে, হাজার বছরের ইতিহাসে দেশটির নাম অসংখ্যবার বদলেছে। কখনো ছিল দ্য ডাচ রিপাবলিক। কখনো বা দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অব বেলজিয়াম। আবার কখনো দ্য কিংডম অব হল্যান্ড। এক সময় নেদারল্যান্ডসের নাম হল্যান্ড ছিল বলেই হয়তো এখনো অনেকে হল্যান্ড নামে ডাকে।
এখানেই শেষ নয়, রূপের জগত নেদারল্যান্ডসের কথা। প্রশ্ন জাগে, পুরো কোরিয়া জাতিকে বলে কোরিয়ান। জার্মানিদের বলা হয় জার্মান। কিন্তু একমাত্র দেশ নেদারল্যান্ডস, যাদের নেদারল্যান্ডেরিয়ান বলা হয় না।
উল্টো দেশটির মানুষ ‘ডাচ’ হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। কিন্তু কেন? তার গল্প না হয় আরেক দিন শোনাবো।
চলবে...
লেখক ও সাংবাদিক
জেডএইচ/এমআরএম/এএসএম