প্রকৃতিকে ভালোবাসা মানে নিজেকে রক্ষা

আম্বিয়া অন্তরা
আম্বিয়া অন্তরা আম্বিয়া অন্তরা , যুক্তরাষ্ট্র
প্রকাশিত: ০৯:৫০ এএম, ২৮ জুলাই ২০২১

প্রকৃতি শুধু আমার নয়। আমরা প্রকৃতির অংশ। প্রকৃতি আমাদের সবার। আসুন আমরা আমাদের প্রকৃতিকে রক্ষা করি, আমরা নিজেদের রক্ষা করি। কেননা, প্রকৃতিকে রক্ষা করা মানেই নিজেকে রক্ষা করা। প্রকৃতি পৃথিবীর আর্শীবাদ। এ গ্রহে জীব বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন প্রকৃতি।

শুধুমাত্র একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নয় বরং স্থিতিশীল উৎপাদনশীল সমাজের ভিত্তি এটি। প্রকৃতি ভবিষ্যত প্রজন্মের মঙ্গলও নিশ্চিত করে। তাই বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন।

প্রকৃতিতে বনভূমি ধ্বংস, অবৈধ বন্যজীবন বাণিজ্য, প্লাস্টিক দূষণ রাসায়নিক ক্ষতিকর জ্বালানি ইত্যাদি। এসবের ফলে হুমকিসরূপ পৃথিবী জল, বায়ু, মাটি, খনিজ, গাছ, প্রাণী এবং খাদ্য। অথচ এগুলোই জীবনযাপনের মৌলিক প্রয়োজনীয়তা হিসেবে নিত্য সহযোগিতা করে চলছে। তাই আমাদের উচিত প্রকৃতি পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর রাখা।

আমরা যা কিছু করি তা বিশ্বকে প্রভাবিত করে কারণ বিশ্ব এক এবং এক রকম একত্রিত যার এক কোনায় সমস্যা হলে অন্য কোনোয় প্রভাব পড়ে। জনবহুলতা এবং মানুষের অবহেলার কারণে আমরা আমাদের সংরক্ষণগুলোর অতিরিক্ত ব্যবহার করতে শুরু করেছি। এটি যদি অব্যাহত থাকে তবে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কোনো উপাদান থাকবে না।

সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা হলো- পরিবেশগত ভারসাম্যকে সমর্থন করে জীবনকে সমর্থন করা, ভবিষ্যতের প্রজন্ম সম্পদ অ্যাক্সেস করতে সক্ষম হবে তা নিশ্চিত করা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা। শিল্প বিকাশ এবং অন্যান্য কয়েকটি কারণ প্রকৃতির অবক্ষয়ের জন্য দায়ী।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু ব্যাপার রোধ করে আনা গেলে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা হতে পারে। তার মধ্যে একটি পানি সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে পারা। এ পানির অপচয় সাধারণত বাসা বাড়ি থেকে শুরু হয়। পানি অপচয়ের প্রবণতাটি আরও কম হওয়া জরুরি। একটি নিষেধাজ্ঞার নির্দিষ্ট গবেষণায় দেখা গেছে যদি আমরা পানির অপচয় ও দূষণ রোধ না করি, তবে আমরা পানির প্রাকৃতিক উত্স থেকে দূরে চলে যেতে পারি ২০৫০ সালের মধ্যে।

এরপর মাটির ক্ষয় এড়াতে এবং সবুজ রঙের প্রচারের জন্য গাছ রোপণকে উত্সাহ দেয়া আবশ্যক। সম্ভব হলে বাড়ির বাগান করার অনুশীলন করা। প্রকৃতির মাঝে সময় ব্যয় করা মানসিক প্রশান্তিও দেয়। তাছাড়া বর্জ্য হ্রাস, পুনরায় ব্যবহার এবং পুনর্ব্যবহার করা যেতে পারে।

বৃষ্টির জল সংগ্রহ এবং বর্জ্য জল শোধনাগার স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া। সম্ভব হলে জৈব কম্পোস্ট ব্যবহার করা। এছাড়াও পারলে আপনাদের বিদ্যুৎ খরচ হ্রাস করুন, হ্রাস করুন কাগজের ব্যবহার।

কাগজ সংরক্ষণ নয় বরং গাছ সংরক্ষণ করুন। ডিজিটাল যুগে, আমরা যে ডিভাইসগুলো ব্যবহার করি তা আমাদের বুঝতে সহায়তা করে যাতে এটি একটি প্রিন্ট আউটের প্রয়োজনীয়তা সংরক্ষণ করে। নতুন স্বাভাবিকের সঙ্গে, আমরা অনেকেই বুঝতে শুরু করেছি যে ভার্চুয়াল মিডিয়ামে একটি সভা অনুষ্ঠিত হতে পারে এবং অতিরিক্ত সোর্সগুলো সর্বদা সংরক্ষণ করা যায়।

সর্বোপরি প্লাস্টিকের একক-ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। আমরা জানি মহাসাগরে প্রবাহিত প্লাস্টিকগুলো সামুদ্রিক জীবন, বাস্তুশাস্ত্র এবং আরও অনেক কিছুর ক্ষতি করছে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘করোনাভাইরাসকালীন একক ব্যবহারের প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েছে। এশিয়ার প্রত্যন্ত সৈকতে প্রতিদিন মুখোশ এবং ল্যাটেক্স গ্লোভগুলো ধুয়ে ফেলা হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে ল্যান্ডফিলগুলো রেকর্ড পরিমাণে টেকওয়ে খাবার কনটেইনার এবং অনলাইন ডেলিভারি প্যাকেজিংয়ের সঙ্গে উচ্চস্তূপে রয়েছে।’

এসব বিষয়ে সচেতন হয়ে প্রকৃতির প্রেমে জাগ্রত হয়ে আমরা সকলেই একটি টেকসই ভবিষ্যত গঠনে ভূমিকা নিতে পারি।

এমআরএম/এএসএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]