জাতিসংঘে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপন
নানা কর্মসূচির মাধ্যমে জাতিসংঘে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দিবসটি উপলক্ষে জাতিসংঘে যৌথভাবে ‘কোভিড-১৯ মহামারিকালে অটিজম: বৈশ্বিক সাড়াদান ও পুনরুদ্ধারে কীভাবে প্রযুক্তি সহায়তা করতে পারে’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সাইড ইভেন্টের আয়োজন করা হয়।
জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ, ব্রাজিল, কুয়েত, পোল্যান্ড, কাতার ও কোরিয়ার স্থায়ী মিশন এবং জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়াবলী বিভাগ ও অটিজম স্পিক্স এ ইভেন্টের আয়োজন করে।
ইভেন্টে প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশের অটিজম ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার-বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের শুভেচ্ছা দূত সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। ভার্চুয়ালি আয়োজিত এ সভায় বক্তব্য প্রদানকালে কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে প্রতিবন্ধী শিশু ও তাদের পরিবারের জন্য বিশেষ সহায়তা পদক্ষেপ গ্রহণ ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারসহ বাংলাদেশের উত্তম অনুশীলনগুলো তুলে ধরেন তিনি।
মহামারিকালে শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত হওয়ার ফলে সারাবিশ্বে প্রতিবন্ধী শিশুরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে বিদ্যমান সামাজিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা, শক্তিশালী তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো এবং বিস্তৃত কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা অনেক পরিবারকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করেছে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন সমাজে প্রতিবন্ধী পরিবার যেসব সামাজিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় তার উদাহরণ দিয়ে পুতুল বলেন, এক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি ও তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ টেকসই ও ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তন আনতে পেরেছে। অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবার যে ধরনের সামাজিক নিগ্রহের শিকার হয় তা মোকাবিলাসহ এ সংক্রান্ত সামগ্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে গত ৭ বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের অটিজমবিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি।
ইভেন্টটিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ ও কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধিদ্বয়। অটিজম সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি ও গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
তিনি বলেন, প্রতিবন্ধিতা ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষায় দেশে আমরা শক্তিশালী আইন ও বিধি প্রণয়ন করেছি এবং নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে- প্রতিবন্ধিতা সহায়ক ই-সেবা, রেফারেল সেবা এবং দেশব্যাপী সহায়তা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি।
অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তায় বিশেষ করে করোনা মহামারিকালে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও গবেষণায় আরও বেশি বিনিয়োগের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই প্রযুক্তি-বিভাজন দূর করতে হবে, প্রযুক্তি হতে হবে সহজলভ্য এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে সবারই এতে প্রবেশাধিকার থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো তুলে ধরেন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়াবলী বিভাগের পলিসি সমন্বয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল। সায়মা ওয়াজেদ ছাড়াও প্যানেল আলোচনায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। ভার্চুয়ালি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নানা পেশার মানুষ এ ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন।
এআরএ/জেআইএম