দুবাইয়ে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করায় চার বাংলাদেশির ৭ বছর জেল
মানবপাচার ও দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা ছাড়াও বেশ কয়েকটি অভিযোগে চার বাংলাদেশিসহ মোট সাতজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে দুবাই কোর্ট অব ফার্স্ট ইন্সটেন্স।
শুনানিতে বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ান গৃহ কর্মীকে বন্দি করে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করেন ৩৭ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি। তিনি এই মামলার প্রধান আসামি। তার সঙ্গে আরও তিন বাংলাদেশিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। প্রধান আসামিসহ মোট দু’জন ধরা পড়লেও বাকি দু’জন পলাতক।
সোমবার খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশির কাছে ওই গৃহকর্মীকে বিক্রি করেন ২৩ বছর বয়সী এক পাকিস্তানি যুবক এবং দুই ইন্দোনেশিয়ান নারী। এই তিনজন ভুক্তভোগী নারীকে চাকরি দেয়ার কথা বলে দুবাইতে নিজেদের ফ্লাটে নিয়ে যান।
কিন্তু পরে তাকে ৮০ হাজার টাকায় বাংলাদেশিদের কাছে বিক্রি করা হয়। কিনে নেয়ার পর ওই নারীকে একটি ঘরে আটকে রাখেন অভিযুক্তরা। পতিতালয় হিসেবে এই ভিলাটি ব্যবহার করা হত।
আরও বলা হয়েছে, সাজা ভোগ শেষ হলে তাদের নিজ নিজ দেশে পাঠানো হবে। আল মুরাক্বাবাত পুলিশ স্টেশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ২৫ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত এমন ঘটনা ঘটে। গৃহকর্মী নারী ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ইন্দোনেশিয়া থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসেন।
প্রথমে কিছুদিন একটি বাড়িতে কাজ করেন। পরে সেটি ছেড়ে দিয়ে স্বদেশি আরেক নারীর কাছে কাজ চান।
তিনি আদালতকে বলেছেন, ‘শারজাহর এক বাড়িতে কাজ দেয়া হবে বলে আমাকে বিশ্বাস করানো হয়েছিল। পরে বুঝতে পারি আমি বিক্রি হয়েছি। একটি বাড়িতে অন্য নারীদের সঙ্গে আমাকে জোর করে আটকে রাখা হয়, তারা সবাই দেহ ব্যবসায়ী’।
‘আমি ফিরে আসার জন্য কান্নাকাটি করি। কিন্তু প্রধান আসামি বলে আমাকে নাকি কিনে এনেছে’। এক পর্যায়ে ওই নারী খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে একটি সিমকার্ডহীন মোবাইলে ওয়াইফাই সংযোগ পেলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নিজের বোনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশের সাহায্য চান।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ভুক্তভোগী নারী আল মুরাক্বাবাতের আল হামরিয়ায় একটি কক্ষে বন্দি ছিলেন। সেখানে জোর করে তাকে দেহ ব্যবসায় নামানো হয়। বাড়িটিতে অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এমআরএম/পিআর