অবশেষে আমিরাত ঢুকলেন ২৯ প্রবাসী
অবশেষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবি বিমানবন্দরে আটকে থাকা ২৯ জন প্রবাসী আমিরাতে প্রবেশ করেছেন। খবরটি নিশ্চিত করেছেন আটকে থাকা আবুধাবি প্রবাসী সোহেল চৌধুরী ও এসকান্দর।
সোহেল চৌধুরী জানান, সন্ধ্যা সাতটায় আমাদের করোনা পরীক্ষা করা হয়। এরপর আমাদেরকে আবুধাবি বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে দুইজনকে একটি করে রুম দেয়া হয়। সেখানে রাতের খাবারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেয়া হয়েছে। রাত ২টার পরে আমাদেরকে ইমিগ্রেশন থেকে তলব করা হয় এবং সবাইকে আমিরাত প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়।
ভুক্তভোগী আবুধাবি প্রবাসী এসকান্দর বলেন, অবশেষে আমিরাত প্রবেশ করতে পেরে ভালো লাগছে। তিনি সব নিয়মকানুন মেনে দেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের আমিরাতে আসার অনুরোধ জানান। তাদের সঙ্গে বিমানের স্টেশন ম্যানেজার ইকবাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান এসকান্দার।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বিমানের আঞ্চলিক পরিচালক নিধান চন্দ্র বড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘দূতাবাস প্রয়োজনীয় কাজগুলো করেছে এবং আমাদের দিক থেকেও সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে গেছি। শেষ পর্যন্ত সফল হতে পেরে ভালো লাগছে।’
আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবু জাফরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ২৯ জন যাত্রীর করোনা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাত ৩টায় দেশ থেকে ৪১ জন যাত্রী নিয়ে আবুধাবি বিমানবন্দরে অবতরণ করে বিমানের একটি ফ্লাইট। সে সময় ১১ জন যাত্রী আবুধাবি প্রবেশের সুযোগ পেলেও আটকা পড়েছিলেন ২৯ জন যাত্রী।
এদিকে ১৮ আগস্ট বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অভিবাসীদের জন্য একটি নিয়মাবলী প্রকাশ করেছে আমিরাতের জনপ্রিয় দৈনিক খালিজ টাইমস।
এতে উল্লেখ করা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসীদের দেশে বিমান টিকিট বুকিংয়ের আগে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাগুলো পুরোপুরি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে আমিরাত। এর মধ্যে কোভিড -১৯ পিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ ফলাফল পাওয়া, ফেডারেল কর্তৃপক্ষের পরিচয় এবং নাগরিকত্বের আইসিএ ওয়েবসাইটে ভ্রমণের বৈধতা পরীক্ষা করাতে হবে।
সোমবার আবুধাবি ও শারজাহ বিমানবন্দরে কিছু প্রবাসী আটকে থাকার পরে এই পরামর্শগুলো এলো। এর আগে গড় ১২ আগস্ট জাতীয় জরুরি অবস্থা সংকট ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনসিইএমএ) ঘোষণা করেছিল, অভিবাসীদের আমিরাত ফিরতে আইসিএর প্রাক-ভ্রমণ অনুমোদনের দরকার নেই। পরিবর্তে তাদের আইসিএ ওয়েবসাইটে অভিবাসীদের নথির বৈধতা যাচাই করার জন্য অনুরোধ করা হয়। এ সময় বেশিরভাগ অভিবাসী তাদের ভ্রমণের জন্য একটি গ্রিন সিগন্যাল পান। বাকিরা পান রেড সিগন্যাল। যেখানে বলা হয়, আপনার সুরক্ষার জন্য আমরা ৬০ দিন পর আপনার ভ্রমণের তারিখ পুনরায় নির্ধারণের সম্ভাবনা বিবেচনা করব। কিন্তু এই রেড সিগন্যাল পাওয়ার পর যারা এসেছেন তারা বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন।
ভ্রমণ গাইড স্মার্ট ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফি আহমেদ বলেছেন, যাত্রীদের টিকিট বুক করার আগে ধাপে ধাপে নিচের প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করতে হবে। তা হলো-
>> দুবাই ব্যতীত সমস্ত আমিরাত ভ্রমণকারী যাত্রীদের তাদের নথিগুলোর বৈধতা আইসিএ ওয়েবসাইটে অবশ্যই পরীক্ষা করতে হবে। তাদের অবশ্যই আমিরাতের আইডি নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্টের ধরন এবং জাতীয়তা ইনপুট করতে হবে। দুবাইয়ের বাসিন্দাদের অবশ্যই রেসিডেন্সি ও বিদেশ বিষয়ক অধিদফতরের (জিডিআরএফএ) প্রাক ভ্রমণের অনুমোদন পেতে হবে।
>> আমিরাতের ছয়টি প্রদেশের অভিবাসীরা একবার আইসিএর কাছ থেকে 'সবুজ' স্ট্যাটাস পেয়ে গেলে আর দুবাই অভিবাসীরা জিডিআরএফএর কাছ থেকে অনুমোদন পেলে টিকিট বুকিং করতে পারবেন। তবে যাদের ‘রেড’ আইসিএ বার্তা রয়েছে তাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে।
>> আপনার নিজের দেশ কর্তৃক নির্ধারিত কোনো প্রাক-ভ্রমণ অনুমোদন রয়েছে কি-না তা পরীক্ষা করে দেখুন।
>> সংযুক্ত আরব আমিরাত অনুমোদিত ল্যাব থেকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করুন।
>> কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হতে হবে।
>> ভ্রমণের দিন স্বাস্থ্য ঘোষণা ফরমটিতে স্বাক্ষর করুন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের যোগাযোগের ট্রেসিং অ্যাপ আলহসন ডাউনলোড করুন। দুবাই অভিবাসীদের অবশ্যই ডিএক্সবি স্মার্ট অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে।
>> মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ভ্রমণের জন্য অন্যান্য সুরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি বহন করুন। বিমানবন্দরে দ্রুত পৌঁছাতে হবে।
>> ভিজিট ভিসাধারীদের কোভিড-১৯-এর বীমা থাকতে হবে।
এসআর/জেআইএম