‘আমার জীবন বাঁচাও আব্বা’, এই খাদিজাকে উদ্ধার করেছে দূতাবাস

সেলিম আকাশ
সেলিম আকাশ সেলিম আকাশ , জর্ডান প্রতিনিধি জর্ডান
প্রকাশিত: ০৫:৪৫ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২০

হবিগঞ্জের খাদিজা খাতুনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি এখন জর্ডানের রাজধানী আম্মানে বাংলাদেশ দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। শিগরিরই তাকে বাংলাদেশে পাঠানো হবে।

দূতাবাসের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান মো. বশির জাগো নিউজকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গৃহকর্মী খাদিজা খাতুন এখন বাংলাদেশ দূতাবাসে নিরাপদে রয়েছেন। শিগগিরই তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

জর্ডানে কর্মরত গৃহশ্রমিক খাদিজা আক্তার বাথরুম থেকে ইমুতে ভিডিও কল করে তার বাবার সঙ্গে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজের নির্যাতনের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমি পারতাম না, আব্বা আমি পারতাম না। আমারে তুমি দুদিনের মধ্যে দেশে নেয়ার ব্যবস্থা করো। নইলে আমার যে কী হইব, আমি বুঝতাছি না। প্রত্যেক দিন আমারে তারা চড়-থাপ্পড়-লাথি মারে। আমারে দিনে একটা শুকনা রুটি দেয়। আমার জীবন বাঁচাও আব্বা। আমি বিদেশ থাকতে চাই না।’

গত ২ জানুয়ারি গভীর রাতে এ কথা বলার পর তার আর যোগাযোগ ছিল না। ফলে খাদিজার বাড়িতে মা-বাবা, ভাই-বোনদের কান্না আর আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। আশপাশের লোকজন এসে সান্ত্বনা দেন।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ইউনিয়নের আমতলা গ্রামের দিনমজুর মরম আলীর মেয়ে মোছা. খাদিজা আক্তারকে (১৬) উপজেলার আমরুট গ্রামের দালাল সুন্দর আলীর ছেলে আলফি মিয়া ঢাকার পুরানা পল্টনের ফোর স্টার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাধ্যমে ১৭ দিন আগে জর্ডান পাঠান।

চার মেয়ে ও দুই ছেলে এবং স্ত্রীকে নিয়ে অভাব-অনটনের সংসারে মরম আলী একটু সচ্ছলতার জন্য দালালদের প্ররোচণায় পড়ে খাদিজাকে জর্ডান ও তার বড় মেয়ে সুমি আক্তারকে (২০) সৌদি আরব পাঠান। খাদিজার সঙ্গে একদিন কথা হলেও সুমির সঙ্গে ২৭ দিন ধরে পরিবারের কোনো যোগাযোগ নেই।

সুমির খোঁজ নেয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলে মরম আলীকে প্রাণনাশের হুমকি দেন উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের দালাল কবির। সন্তানদের চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন অসহায় বাবা মরম আলী। তিনি জানান, সরকারের মাধ্যমে তার সন্তানদের দেশে ফেরত আনতে চান।

এই বাবার আর্তনাদ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে জর্ডান প্রবাসী সাংবাদিক সেলিম আকাশ বিষয়টি বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান মো. বশিরকে জানান। তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন।

এস এম সেলিম আকাশ/জেডএ/পিআর

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]